উচ্ছিষ্ঠ সময়ের রাজত্ব
২০২১
তারিখ
সামিদা খাতুন
স্বামীঃ আব্দুল গনি মাদবর
তিনি আমার একমাত্র আপন ফার্স্ট জেনারেশন খালা। আমার মায়ের একমাত্র আপন বোন যাকে আমার মা বোন মনে করেন নাই, করেছেন নিজের মায়ের মতো। আমার খালার সাথে কারো কোন বিবাদ হয়েছে এই রেকর্ড সারা গ্রামের মধ্যে নাই। তিনি অত্যান্ত প্রতাপ্সহালী গনি মাদবরের স্ত্রী। এখানে বলা দরকার যে, গনি মাদবরকে ভয় পায় না এমন কন লক আমাদের গ্রামের মধ্যে ছিলো না। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, তিনি সন্ত্রাসী ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যান্ত ন্যা পরায়ন একজন মাদবর। খুব বুদ্ধিমান। অত্যান্ত অহংকারী এবং একটা ইগো নিয়ে চলতেন।
আমার খালা শেষ বয়সে কুজো হয়ে হাটতেন। যখন ই শুনেছেন যে, আমি শহর থেকে গ্রামে গিয়েছি, তখনি তিনি কস্ট হলেও খুব সকালে আমাকে দেখার জন্য আমাদের বাড়িতে চলে আসতেন। আমার খালা ও কোন ছবি নাই কিন্তু কোন একদিন আমার ছোট ক্যামেরা দিয়ে একটি মাত্র ছবি তুলেছিলাম যা আমার কাছে একটা অমুল্য রতনের মতো মনে হয় এখন।
আমার খালা যেদিন মারা যান, আমি এই খবরটা জানতেও পারি নাই। অনেকদিন পর যখন আমি গ্রামের বাড়িতে গেছি, খালার সম্পরকে জানতে চেয়েছি, শুনলাম যে, আমার খালা মারা গেছেন। আমার খুব আফসোস লেগেছিলো।
আমার খালার ভাগ্য ভালো যে, ঊনি অনেক কস্টে পরার আগেই জান্নাতবাসী হয়েছেন। আমি মাঝে মাঝে খালাকে গোপনে কিছু টাকা দিতাম কিন্তু যেহেতু তিনি নিজে কোনো কিছু কিনতে পারতেন না, ফলে ঊনি টাকা দিয়েও তার মনের মতো কোন কিছু কিনে খেতে পারতেন না। এর আগেই তার অন্যান্য নাতি পুতেরা তার হাতের টাকাগুলি কোনো না কোনো ভাবে ছিনিয়ে নিতেন। বড্ড নিরীহ মানুষ বলে কারো উপর তার কমপ্লেইনও ছিলো না। খুব নামাজি মানুষ ছিলেন আমার খালা। তার কোন ছেলেরাই তাকে ঠিক মতো ভরন পোষণ করার দায়িত্ত নেন নাই। এক সময়ের প্রতাপ্সহালি মাদবরের স্ত্রী শেষ জীবনে কস্টের মধ্যেই জীবন তা অতিবাহিত করছিলেন কিন্তু আমাদের কিছু সাহাজ্য আর তার নিজের স্বামীর যেটুকু আয় ছিলো তার উপর নির্ভর করেই শেষ জীবন তা অতিবাহিত করেছেন।