রানার Character

১।       বিয়েটার উদ্যোগ আসলে কে নিয়েছিলো আগে এবং এর কারনটা কি ছিলো। রানা বলছে, ওর মা ওকে  বিয়ে করতে বলেছে তাই করেছে।  ওর ইচ্ছে ছিলো না।এখানে একটা বিরাট প্রশ্ন জাগে আমাদের মনেঃ আর তা হলো, রানা তখনো বিবি এ শেষ করে নাই, এম বি এ তো অনেক পরের ব্যাপার। তাঁর কোনো চাকুরীও ছিলো না। সে নিজে স্বাবলম্বী নয়। আমরা এনগেজমেন্ট করতে চেয়েছিলাম, উম্মিকাও সরাসরি বিয়েতে রাজী হচ্ছিলো না। আমরা সবাই জোর করেছি। আমরা ছেলের তখনকার ব্যবহারটা শুধু নজরে নিয়েছি, তাঁর পারিবারিক কোন কিছুই আমরা আমলে নেই নাই কারন উম্মিকার শসুরবাড়ির কোনো কিছুর উপরেই আমাদের লক্ষ্য ছিলো না।  লক্ষ্য ছিলো ভালো পরিবার এবং মার্জিত পরিবার কিনা।

২।   উম্মিকা রানার মাকে কি কি জিনিষ জানাতো রানার ব্যাপারে প্রতিনিয়ত। সেটা পরিস্কার করে জানা উচিত।

৪।  কেনো উম্মিকা বারবার রানার কাছ থেকে সরে যাচ্ছিলো? এমন কি বিয়ের আগেও ও বিয়ে করতে নারাজ ছিলো। এটা নিছক অন্য কোনো ছেলের প্রতি আশক্তি এটা নয়। তখন উম্মিকা আমাদেরকে কোনো কিছুই পরিস্কার করে বলে নাই। ও তখনো বলেছিলো যে, ঠিক আছে, রানার সাথেই বিয়ে হবে কিন্তু সময় নাও। ওকে দেখা দরকার। আসলে ও কি দেখতে চেয়েছিলো সেটা এখন কিন্তু আমরাও বুঝতেছি।

৫। রানা ওকে আদৌ কি ভালোবাসে কিনা। সেটা কোন লেভেলের ভালোবাসা, জানা দরকার। রানা কখনোই উম্মিকাকে ভালোবাসে নাই। রানা ভালো বেসেছে উম্মিকার বদৌলতে জীবন বদলানোর। সুবিধা ছিলো না। কিন্তু সেটা যেভাবে ও করতে চেয়েছে সেভাবে আমি কেনো কেউ মানবে না।

৬।  রানা স্ত্রী কি জিনিষ, বুঝতে পারে কিনা।

৭।  উম্মিকার ফ্রিডম যেমন ওর বন্ধবীদের সাথে, ক্লাসের বন্ধুদের সাথে, আত্মীয় স্বজনদের সাথেও  যোগাযোগ না রাখার মানসিক চাপ প্রয়োগ। এতো নীচু মেন্তালিটি নিয়ে বড় হচ্ছে কেনো ছেলেটা?

৮। অকথ্য ভাষায় সারাক্ষন গালিগালাজ, চরিত্রের উপর দোসারুপ, আলাদা বাসায় থাকলে নাকি আমার মেয়ে তাঁর বাসাকে খদ্দের দিয়া হোটেল বানিয়ে ফেলবে, বাবা মায়ের বিরুদ্ধে সারাক্ষন কথা, এবং তাদের উপর  তাঁর অত্যন্ত বাজে ধারনা পোষণ করা।

৯।  রানাকে দিয়ে আমরা চাকরের মতো যখন তখন কাজ করাই, ইত্যাদি। কি কাজ করিয়েছি রানাকে দিয়ে  যাতে ও মনে করছে আমরা ওকে চাকরের মতো কাজ করাচ্ছি?

১০। আইফোন, এসি, টিভি, গাড়ী, ফার্নিচার ইত্যাদির ব্যাপারে নিজ থেকে  স্ত্রীর মাধ্যমে কথা বলা। আমরা কি  কম দিতাম? চেয়ে নিতে হবে কেনো?

১১। স্ত্রীর গোপন কিছু ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি।

১২। যাচ্ছে তাই ব্যবহার, বিয়ের প্রোগ্রামে হাজির না হবার হুমকি,তারিখ ফিক্স করা নিয়ে মিথ্যা কথা বলা সাথে মাকেও  মিথ্যাবাদি বানানোর চেস্টা।

১৩। খাবার ফেরত দেওয়ার মতো বেয়াদবি। একবার যখন খাবারের মতো জিনিষ আপনাদের বাড়ি থেকে ফেরত   আসতে পারে, সেক্ষেত্রে আমরা আর কখনো আমাদেরকে ছোট করার জন্য কিছু পাঠাতে সাহস করি না। ঈদের পোশাক, কোর বানীর মাংশ, কিংবা গতবারের মতো খাসি কিনে দেওয়া ও যে ফেরত আসবে না,   সেটা আমি কিভাবে সিউর হই?

১৪। ফেসবুকের প্রোফাইল বদল করে ও কি মিন করেছে? আর ওইসব ছবি মেয়েদের সাথে এমন করে তোলা যেনো নিজের অত্যন্ত ঘনিস্ট পোজের কেউ। আমার মেয়ে যদি এমন কোনো ছেলের সাথে এই ধরনের পোজ দিতো, তাহলে তো রক্ষাই ছিলো না।

১৫। সোমা নাকি বলেছে যে, আমরা কেউ দাওয়াত দিলেও সে আসবে না। ইত্যাদি।

১৬। বগুড়া থেকে ঢাকায় উম্মি প্রায় ১৫ দিন থেকেছে। উম্মি ওকে বারবার ফোন করেছে কোথাও ওরা  নিড়িবিলিতে দেখা করার জন্য। রানা বারবার উম্মির সাথে আর কখনোই দেখা করবে না বলে শেষ পর্যন্ত   আর সে দেখাই করে নাই। তাহলে আমার মেয়েই বা ওর জন্য অপেক্ষা করবে কেনো? আজ যদি আমার  মেয়ে বলে যে, উম্মি আর রানাকে ভালোবাসে না, আমি তো তাকে জোর করে এই কথা বলতে পারবো না  যে, কেনো ভালোবাসবে না যে তোমার জন্য পাগল হয়ে অপেক্ষা করছে? রানা কি উম্মির জন্য পাগল হয়ে   আছে? কখনোই না।

১৭।  রানা একদিন আপনাদের সবার সামনে বলেছিলো যে, উম্মি যেহেতু রানাকে একটু অপছন্দ করে, সেক্ষেত্রে   উম্মি যদি এক পা আগায়, রানা আগাবে দুই পা। এই দুই পা আগানোর লক্ষন? প্রায় ১৫ দিন ঢাকায় উম্মি  অবস্থান করছে, উম্মি বারবার ওকে বাসায় না হোক, অন্য কোথাও দেখা করার তাগিদ দিচ্ছে, আর রানা  বারবার একটা কথাই বলে যাচ্ছিলো, আমি জানি না তুমি ঢাকার জন্য টিকেট কেটেছো আর তোমার বাবা  মা জানে। আমি কখনো তোমার সাথে দেখা করবো না। কি দায়িত্বটা পালন করেছে রানা স্বামী হিসাবে? ও  কেনো জানে না যে, উম্মি কখন কোথায় আসবে? খালি বিয়ে মানে কি এই যে, একটা মেয়ের বস হয়ে  যাওয়া? আর কোনো দায়িত্ব নাই? উম্মি আমাকে তার পরেও বলেছে যে, একটু ধৈর্য ধরো, আমি বগুড়ায়  যাই, দেখি রানা আমার প্রতি ওর টান আছে কিনা। কই, উম্মিকাকে মিস করে তো মনেরটানে রানা একবার  ও বগুড়ায় গিয়েও দেখা করে নাই? দেখাতো দুরের কথা, ফোন পর্যন্ত করে নাই।

১৮। আমি সবসময় উম্মিকাকে দোসারুপ করেছি কারন উম্মিকা আমাকে কখনো রানার ব্যবহার, রানার মেন্টালিটির কথা, রানার মেন্টাল প্রেসারের কথা আমাকে বলে নাই। এমন কি রানার মা বা রানার বোনের  নির্লিপ্ত তা নিয়ে কখনো আমাকে বলে নাই। রানা যে ওর সাথে এই রকম চরম  খারাপ ব্যবহার দিনের পর দিন করছে, সে সহ্যই করে যাচ্ছিলো। রানাকে সে ছোট করতে চায় নাই বলেই বারবার পুরু ব্যাপারটা চেপে যাচ্ছিলো। যেদিন সে আমাকে ধীরে ধীরে সব কথা বলা শুরু করলো, আমি বুঝতে   পারলাম, রানার মা কেনো বার বার উম্মিকাকে শান্ত হতে বলছে আর আমার মেয়ে নীরবে সব সহ্য করে থাকছে। এমন কি আমি যে ওকে কত টর্চার করছি তাতেও সে মুখ খুলছিলো না। আসলে রানা কখনোই উম্মিকাকে ভালোবাসে নাই। আপ্নারাও না।

১৯। মাইনাস বলতে কি বুঝায়? আমরা কি আপনাদের সাথে প্লাস হওয়ার জন্য এতো উদগ্রীব ছিলাম? আর  আমরা কি কারনে ওর কাছে পয়জনাস? কি গাড়ি দেই নাই বলে? শেয়ার লিখে দেই নাই বলে? অফিসে টাইম মতো আসার জন্য চাপ দিচ্ছি বলে? ঘুম থেকে উঠে যখন খুশী অফিসে আসবে, এই সুযোগ দেই নাই  বলে? পয়জনাস কথাটার মানে কি? আমরা আপনাদের পরিবারের কোন ইস্যুতে নাক গলিয়েছি? কোন ব্যাপারে কি ক্ষতি সাধন করেছি যে, আপনার ছেলের মনে হলো যে, আমরা আপনাদের পরিবারের জন্য বিষাক্ত? রানার ফেসবুকের সাথে আমার, উম্মিকার, আমার কলিগদের এবং অন্যান্য সবাই মোটামুটি ট্যাগ করা। ওর এই সব মন্তব্যে আমাকে এবং উম্মিকার মাকে অনেকেই ফোন করে জানতে চেয়েছে, কোনো অসুবিধা কিনা রানার সাথে আমাদের। আমাদেরকে সবাই চিনে। আমাদের মাধ্যমে এখন আমাদের পুরু সমাজ রানাকে চিনে। ওর এইসব মন্তব্যে কি রানা বা তাঁর পরিবারের সম্মান বাড়ছে নাকি ওদের  আসল চেহারাটা ফুটে উঠছে?

২১। আমার কাছে আরো একটা তথ্য জানার ইচ্ছে হয় যে, রানা কি শারীরিক ভাবে অক্ষম কিনা। আমাকে রানা এবং উম্মি দুজনেই বলেছে যে, ওরা বিয়ের ৬ মাস পরে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। একই ঘরে থাকা একটা যুবতী মেয়ের সাথে ৬ মাস লাগবে শারীরিক সম্পর্ক করতে এটা ভাবা যায় না। তাছাড়া যখনি উম্মি ঢাকায়  আসতো, আমি রানাকে দেখি নাই পাগলের মতো বউয়ের কাছে ছুটে আসতে। দেখা গেছে, যেদিন উম্মি এসেছে, তাঁরও একদিন বা দুইদিন পর রানা হয়ত উম্মির সাথে দেখা করতে আসতো। আমার মনে হয়, হয় ও এখনো যথেষ্ট অপরিপক্ক অথবা শারীরিক ভাবে ও এখনো পুরুস হয়ে উঠে নাই।

২২। আরেকটা কথা আমার প্রায়ই মনে হয় যে, ওর যে অস্থির মেজাজ, ও যে কোনো সময়ে রাগের বশে  উম্মিকাকে এমন কিছু করে ফেলতে পারে, যাতে ওর প্রাননাশও হতে পারে। ও অনেকটাই ইম্ব্যল্যান্স। যখন সে ঠাণ্ডা থাকে, ও এক রকম, আর যখন ও অস্থির থাকে, ওর কোনো হুশ থাকে না। যেমন ছিলো না ওর বাপের বেলায় মা ফ্যাক্টরীতে। যেটা ও করেছে, তা নজিরবিহীন একটা অপরাধ। মায়ের সামনে বাবাকে কেউ  ওই রকম করে অপমান করতে পারে না যদি মা ও তাঁর স্বামীকে সম্মান করতেন। এটা আপনাদের  পরিবারের সম্মান জড়িত ছিলো। সাথে হয়ত আমারো ছিলো কিন্তু আমাদের থেকে আপনাদের সম্মান অনেক বেশি ক্ষুন্ন হয়েছে। স্বীকার করুন আর নাই বা করুন।

অফিশিয়াল সমস্যাঃ

১।    টাইম মতো অফিসে না আসা। বেশির ভাগ সময় আইপিডিসিতে যেতে হবে, হক ব্রাদার্স এ যেতে হবে,  রুমানিয়ায় যেতে হবে এই ছুতায় সকাল ১১ পর্যন্ত খালি ঘুমেই থাক্তো রানা। আর যখন আইপিডিসিতে যেতো, তার কোনো ফিডব্যাক আজ পর্যন্ত সে আমাকে দেয় নাই যাতে আমি বুঝতে পারি সে আইপিডিসিতে গিয়ে কি কাজ করে। আর আইপিডিসিতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই যদি প্রতিনিয়ত সে  বিলগুলি, ডিসবারজমেন্টগুলি এবং তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে কত দিনের জন্য কত ইন্টারেস্ট হয় তা যদি অফিসে বসেই আপডেট করে। এতা আমি করতাম আগে, আমারতো কখনোই যেতে হয় নাই।

২।   বেশীর ভাগ সময়ে কাজগুলি সঠিকভাবে তদারকি না করা এবং সেটা আবার কাউকে করতে না দেওয়া। যেমন, গেটপাশ গুলি, স্টোরে মালামাল আনা এবং ইস্যু, কোন মাল কখন কিভাবে খরচ হচ্ছে, আদৌ কেনা হচ্ছে কিনা, বা কিনলেও বেশি দিয়ে কেনা হচ্ছে কিনা, তাঁর কোনো তদারকি নাই। যেমন, রুমানিয়ার ৪৮ নাম্বার বিলটা আজো পর্যন্ত রুমানিয়ার পাঠানোই হয় নাই অথচ ৪৯, ৫০ ইত্যাদি বিলগুলি সব চলে গেছে। ৪৮ নং বিলে আমাদের প্রায় দুই লাখ টাকার মাল আমরা ডেলিভারী দিয়েছি। তাহলে এই  টাকাটা কি আমাদের পাওয়া উচিত না?

৩।   অভার অল ফ্যাক্টরীর কোনো কাজে সামিল না হওয়া। মার্কেটিং করে রউফ, প্রোডাকশন ফলো আপ করে রউফ, কোন মাল কখন ডেলিভারি যাবে, সেটার প্ল্যান করে রউফ, এমন কি সর্বশেষ ফ্যাক্টরীতে কি  পরিমান আদেশ আছে, বা দরকার, বা পেন্ডিং কি আছে, তাঁর কোনো খোজ খবর তাঁর কাছে নাই। তাহলে কি কন্ট্রোল করবে ফ্যাক্টরী? আর ওদিকে ঘন্টার পর ঘন্টা ওই পিয়নের সাথে, গার্ডের সাথে রঙ্গ আলাপ। কোন মানে হয় এগুলোর? তাতে বরং আন্দার কমান্ডরা লাই পেয়ে বসে।

৪।   বারবার বলার পরেও মাসিক প্রতিবেদন, বিল সাবমিটের প্রতিবেদন, আমাদের লিমিটের অবস্থা, কোন চেক   কখন পাশ হচ্ছে কিংবা কোন চেক আদৌ পাশ কেনো হচ্ছে না, এই সবকিছুর মধ্যে একটা বিরাট সমন্নয়হীনতা। কখনো কখনো এমন হয়েছে যে, আমাদের চেক পাশ হবার কথা আজ, আইপিডিসি হয়ত  ভুলে গেছে, তারা আরো কয়েকদিন পর সেই চেক ডিপজিট করে তারপর টাকা নিয়েছে। আইপিডিসির তো সমস্যা নাই। তারা তো ইন্টারেস্ট কাটছেই। লস তো আমাদের। তাহলে এই গুলিতো ওর দেখার কথা।

৫।   মা ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টরশীপ উম্মিকার থেকে তাঁর নিজের নামে ট্র্যান্সফার করার আগ্রহ কেন? এর আগে  আমাকে রানাই বলেছিলো যে, রউফ সাহেব ডাইরেক্টর বিধায় আর সে ইডি বিধায় রউফ ওর সিনিয়র পদে আছে এবং রউফ সাহেবকে সে ধরতে পারে না। এটা আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছিলো ঠিক, তাতে আমি ওকে ডাইরেক্টরশীপ দিয়ে বেতন ১৫ হাজার থেকে এক লাফে ৫০ হাজার করে দিলাম। তাহলে  কি ওর দায়িত্ত বাড়লো না কমল? ডাইরেক্টর হয়ে তো দেখি আরো ডাট বেড়ে গেলো আর কাজের প্রতি  আগ্রহ কমে গেলো। কেনো?

৬।   রউফ সাহেবকে বলেছে (এবং আমাকেও সে মেইল দিয়েছে যে) রানার নামে মা ইন্ডাস্ট্রিজের সব একাউন্ট ট্র্যান্সফার করে দিলে ও নিজেই চালাতে পারবে এবং প্রতি মাসে মাসে সে লোন কম করে হলেও লাখখানেক করে লোন পরিশোধ করতে পারবে। কোন অধিকারে এই ধরনের আগ্রহ? আমি করতাম যদি দেখতাম  যে, সে এটাকে নিজের মতো করে ধরে রাখতে পারবে। আপনার কি মনে হয়, রানা ধরে রাখতে পারতো? যে কিনা জানেই না কি পরিমান আদেশ আছে, কখন কি আদেশ পাওয়া উচিত, কখন কি মাল বানানো উচিত, কিভাবে কাকে কন্ট্রোল করলে কি দাঁড়াবে, তাঁর তো কোনো কন্ট্রোল নাই। না কেউ ওকে কোনো সমস্যার কথা শেয়ার করে। তাহলে কি কন্ট্রোল করবে? কাকে কন্ট্রোল করবে?  

৭।   গাড়ি ইস্যু। গাড়ি কেনার জন্য এতো চাপ আমি কখনো ফিল করি নাই। আমি বারবার ওকে বুঝানোর চেস্টা করেছি যে, আমার উপর ছেড়ে দাও। আমি জানি কখন কি করতে হবে। আমি ওকে গাড়ি দিতে পারি নাই বিধায় প্রতি মাসে শুধুমাত্র কনভেন্সই দেওয়া হয় ওকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। অফিসে আসা যাওয়ার জন্য আজ পর্যন্ত কোনো অফিস কোনো স্টাফকে কনভেন্স দেয় এটার কোনো নজির নাই। তারপরেও আমি গাড়ি ভাড়া দিতাম। তাহলে গাড়ি লাগবে কেনো? আর এমন তো নয় যে, ছোটবেলা থেকেই সবসময় নিজেদের প্রাইভেট গাড়িতে করেই সে যাতায়ত করতো। অভ্যাস তো ছিলো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে আসা যাওয়া করার। তাহলে হতাত করে এমন কি হলো যে, আমাদের কাভারড গাড়িতে চড়তে ওর লজ্জা লাগে, কিংবা এমন কি হলো যে, গাড়ি ছাড়া সে ঘর থেকেই বের হতে পারে না? ও বলেছে, ওর চুল নস্ট হয়ে যাবে, তাই গাড়ি লাগবে। অবাক না হয়ে তো আর পারি নাই।

৮।    ইউএফএল এর চেক পেন্ডিং প্রায় ৯৬০০০০/০০, হক লিমিটেডের ৪টি বিল ওরা দেখাচ্ছে পরিশোধ   করেছে কিন্তু আমরা কিংবা আইপিডিসি একজনও পাই নাই এমন বিলের এমাউন্ট ৯৭৯৯০০/০০, আরেকটা বিল যার এমাউন্ট ৭৩০০০/০০। এতে মোট প্রায় ২২০০০০০/০০ টাকার ঘাটতি হয়েছে   আমাদের। যা আইপিডিসি আমাদের নামে এই সব বিলগুলি ওভারডিউ দেখিয়ে ১০% এর জায়গায় ১৩% করে ইন্টারেস্ট কেটেছে। শুধু তাই নয়, এলপিসি হিসাবে আরো ১% বেশি কর্তন শুরু করেছে। অথচ   আমাদের টাকা ছিলো ওদের কাছেই।

৯।   ওভার ওজন প্রতিমাসে কত কেজি যাচ্ছে তাঁর একটা হিসাব নিয়ে অপারেটরদেরকে প্রতিনিয়ত ব্রিফ করা যেনো ওভার অজন লিমিটের মধ্যে রাখা যায়। কিন্তু মাসের পর মাস, এই সব কাজগুলি করা হচ্ছিলো না।

১০। পেটি ক্যাশ দেখে রানা। কিন্তু আমি না বলা পর্যন্ত রানা কোনো পেটি ক্যাশ চেক করে না। ফলে আমি যখন প্রায় দেড়মাস মা ইন্ডসাট্রিজে যেতে পারি নাই, তখন প্রায় দেড়মাসের অধিক কোনো পেটিক্যাশ এক  দিনের জন্যও চেক করা হয় নাই। তাতে অনেক বিল যেমন মিসইউজ হয়েছে, তেমনি পেটির কোনো হিসাবও রাখা যায় নাই।

১১।       আমি প্রতিদিনের প্রোডাকশন মিলিয়ে কত লস হচ্ছে আর কত লাভ হচ্ছে এমন একটা এক্সেল শীট প্রোগ্রাম বানিয়ে দিয়েছিলাম। তাতে শুধু প্রতিদিনের র মেটেরিয়ালস খরচ, তাঁর দাম, আর প্রতিদিনের ইন করালেই ব্রেক ইভেন পয়েন্টে আছি নাকি লসে আছি নাকি লাভে আছি তাঁর একটা  হিসাব বের হয়ে আসে। কখনো এই হিসাবটা আমি রানার কাছ থেকে পাই নাই।

১২।     দানার ব্যাপারে আমি বলেছিলাম যে, একটা দোকান থেকে দানা না কিনে, কয়েকটা দোকানের সাথে  লিয়াজো করার জন্য যাতে এক দোকানের সাথে সমস্যা হলে বা বাকি আনলে অন্য দোকানে আমাদের এক্সেস থাকে। আজ পর্যন্ত আমি রানাকে দানার ব্যাপারে ওই এক দোকান ছাড়া দ্বিতীয় কোনো দোকানের  সাথে লিয়াজো করাইতে পারি নাই।

১৩।     কোনো কিছু বললেই ব্যবসা আর সম্পর্ক এক করে ফেলে। জামাই হিসাবে তাকে কিছু বলা যাবে না, কোনো কিছু ধরা যাবে না, আবার কাজ দিলে কাজও করবে না। তাহলে ব্যবসাটা চলবে কিভাবে?

১৪।     প্রথম থেকেই রউফকে সে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা। রউফকে দিয়েই আমি আবার নতুন করে একটা প্ল্যান শুরু করেছি, রানাকে দিয়ে তো টেস্ট করতে হলে আমাকে বুঝতে হবে ও নিজে নিজে সামাল দিতে পারবে  কিনা। আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ও একা একা পারবে কিনা। ও আমাকে বলেছে, ও পারবে না। তাহলে, ও কেনো রউফকে প্রতিদ্ধন্দি মনে করে? আমি তো কোটি কোটি টাকার একটা রিস্ক শুধু ওর  খামখেয়ালীর উপর নিতে পারি না।

১৫।     অফিশিয়াল কোনো কিছু হলেই ব্যাপারটা পরিবারের মধ্যে গোল পাকিয়ে একটা জটিল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। মেয়েকে দিয়ে সামাল দেওয়া, আমার বউকে দিয়ে সামাল দেওয়া, আর পরিবারের মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি করা। এটা একটা মজার ব্যপার হয়ে দাড়িয়েছিলো তাঁর কাছে।

১৬।      রিভার সাইড নাকি ওকে সমীহ করে না বা দাম দেয় না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, রিভার সাইডের স্টাফরা ওকে কিভাবে ব্যবহার দেখালে ও মনে করবে যে, রিভার সাইড ওকে দাম দিচ্ছে। মুর্তজা ভাই ওকে ডেকে ডেকে আদর করে এইটা খাওয়ায়, ওইটা খাওয়ায়, কথা বলে ইত্যাদি। তাহলে কিভাবে ও বলে যে,  রিভার সাইড ওকে দাম দেয় না?

১৬।     উকিল বাপ হিসাবে মুর্তজা ভাইকে নিয়েও অনেক মন্তব্য করা হয়েছে বলে শুনেছি। সব খালি সবাই   আপনাদেরকে সমীহ করলে সে ভালো আর আপনাদের কারো কোন দায়িত্ব থাকবে না, এটা তো হতে পারে  না। কয়দিন মুর্তজা ভাইকে আপনার ছেলে ফোন করেছে? কয়দিন মুর্তজা ভাইয়ের ছেলেমেয়ের খোজ নিয়েছে ওরা কে কেমন আছে? ও নিজেই তো মিশতে জানে না। অনেক সময় এমন হয়েছে যে, আমি না  বলা পর্যন্ত রানা মুর্তজা ভাইয়ের সাথে রানা দেখা করার সৌজন্য বোধটাও নাই যখন সে ফ্যাক্টরীতে যেতো। চলে আসার সময় হ্যালো বলারও দরকার মনে করে না। এটা কি কোনো কালচার? এমনো হয়েছে যে,  আমি ওকে গেটে গিয়ে ডেকে এনেছি যেনো যাওয়ার সময় মুর্তজা ভাইকে হ্যালো বলে যায়। এটা কি ধরনের সভ্যতা?  

১৭।    মা ফ্যাক্টরীতে যে কান্ডটা রানা, জাহিদ কিংবা আপ্নারা যা করেছেন, তাতে কি রানার কিংবা আপনাদের পরিবারের মানসম্মানটুকু খুব বেড়েছে নাকি কমেছে? রানার আব্বাকে আশ্রয় দেওয়া তো আমার অন্যায়  কিছু হয় নাই, যেখানে ঊনি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরাচ্ছে। আমি কি ওনাকে ডেকে এনেছিলাম? আমি তো বারবার ঊনি আমার এখানে আছে এই মেসেজটা দয়ার চেস্টা করেছি কিন্তু ঊনার আপত্তির কারনেই   কিন্তু আমি মেসেজটা দিতে পারি নাই। দিলে কি হতো? সে হয়তো আমার এখান থেকে চলে যেতো। তাহলে কি খুব ভালো হতো?

১৮।     ফ্যাক্টরীতে আমি ওকে খেতে বললাম, অনুরোধের দাম দিলো না। পরে আবার নিজেই সবার খাওয়ার পরে জনিকে দিয়ে খাবার চেয়ে খাইলো কারন তখন আপনি তাকে খেতে বলেছেন, তাই খাইলো। নিজের কোনো বিবেচনা নাই নাকি?

১৯।       জাহিদ বলেছিলো যে, সে রানা এবং উম্মিকার দায়িত্ত নিয়েছে ওদেরকে আবার ঠিক করার জন্য। উম্মির  রেজাল্ট বের হলো, ভালো করলো, কই কেউ তো আপ্নারা ওকে এঙ্কারেজও করলেন না!! এমন কি  ফেসবুকে রানাও তো উম্মিকাকে একটা অভিনন্দন জানাইলো না? এগুলো হচ্ছে হিংসার বহিরপ্রকাশ। নিজের বউকে নিজেদের মনে না করা। জাহিদের সাথে তো উম্মিকার কোনো ঝগড়া হয় নাই। ঈদে উম্মি কোথায় আছে, সেটাও কি জাহিদ বড় ভাই হিসাবে জানার চেস্টা করেছে? আমার মেয়ের এডুকেসন কোয়ালিফিকেসন রানার থেকে কোনো অংশেই কম নয়। বরং বেশি।এই রকম বিবিএ বা এমবিএ পাশ ছেলেরা ভুরিভুরি অফিসের চাকুরীর জন্য ঘুরে বেরাচ্ছে। আমি তো ওকে একটা প্ল্যাটফর্ম দেওয়ার চেস্টা  করেছিলাম। ডাইরেক্টরশীপ পাইতে  সারা জীবন পার হয়ে যায়, তারপরেও কেউ আদৌ পায় কিনা  সন্দেহ   আছে।

২০।     উম্মিকাকে তো আপ্নারা কেউ ফ্যামিলি মনে করেন না। রানা তো আরো করে না। তাহলে কেনো কি কারনে মেয়েটা আপনাদের কে আপন ভাব্বে?

২১।     জাহিদ বলেছে যে, নাভা জন্ম নেবার দেড় বছর পর্যন্ত নাকি সে নাভার মুখ দেখতেও যায় নাই। এটা কি খুব ভালো ক্রেডিট? মেয়েটা কার? কেউ যদি মনে করে যে, আমরা শুধু উম্মিকার সাথে রানার বিয়ে দিয়েই খুশী, আমাদের আর কিছুই দরকার নাই, তাহলে, সে বিয়ে আমাদের দরকার নাই। আমরা সমাজ নিয়ে চলি এবং সমাজে আমার মেয়ের একটা পজিসন আছে।

২২।     শশুরবাড়ি হিসাবে একটা স্ত্রীর কি কিছুই পাওনা নাই? ছুটিতে যাওয়ার সময় আপনার ছেলে ওকে নিতে  আসবে না, যাওয়ার সময় সে তাকে বগুড়ায় যাওয়ার জন্য সিঅফ করবে না। আপ্নারাও তাঁর জন্য কোনো  খোজখবর রাখবেন না, জিজ্ঞেসও করবেন না তাঁর কিছু লাগবে কিনা। আমি যদিও আপনাদেরকে কিছু  করতে দিতাম না, তারপরেও কিন্তু মহব্বত বুঝা যায়। আরেকটা কথা, কি কারনে আমার মেয়ে ওর জন্য টান অনুভব করবে? সে তো জানে, ওর জন্য স্পেসালি কেউ বাসের শেষ প্রান্তে কেউ অপেক্ষা করে নাই!!

২৩।     এমনসব কথাবার্তা যা শুনলেও চমক লাগেঃ

ক)     আমরা নাকি আপনাদের টাকায় সংসার চালাই। কারন রানার মা কিছু টাকা সুদে মা তে খাটিয়েছিলো, সেটার মাধ্যমেই আমরা সংসার চালাই।

 (খ)      আমার বউয়ের নাকি আচলই নাই।

 (গ)      আমাদের যা আছে, সবই নাকি মিথ্যা।

(ঘ)      বারবার উম্মিকাকে ডিভোর্স দিচ্ছো না কেনো, এই বলে বারবার তাকে ওই পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যাতে সে ডিভোর্সটা দিতেই বাধ্য হয়।

(ঙ)     আমার মেয়ের জন্য না তার শাশুড়ি, না তার স্বামী, না তার শশুড় অথবা তার বোন, কিংবা রানার  ভাই কেউ তাকে কখনোই পছন্দ করে নাই, এবং এখনো করে না এই কথাগুলি দিয়ে রানা কি মিন করতে চেয়েছে? তাহলে কি পছন্দ করে আপ্নারা একচুয়ালি আমাদের বাড়িতে মেয়েকে  বিয়ে করাইতে এনেছিলেন? আমার তো প্রশ্ন থাক্তেই পারে তাহলে। আর এই যে পছন্দ করে না,  এটার প্রমান তো আমরা স্বচক্ষেই দেখতে পেয়েছি। আমার মেয়ে এই কথাগুলি কখনোই বলে নাই।   কিন্তু সবকিছু বলেছে তার শাশুড়িকে। 

ওর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছেঃ

(১)      বেয়াদব।

(২)      অলস

(৩)     লোভী

(৪)      মিথ্যা কথা বলা

(৫)      ইনফেরিওর কমপ্লেক্সে ভোগা।

(৬)     খুব দুর্বল নেট ওয়ার্ক মেইন্টেইন করা।

(৭)     নিয়মানুবর্তিতা বলতে কিছুই নাই।

(৮)     কাজে ফাকি দেওয়া।

(৯)      নিজের সক্ষমতার বাইরে ডাট নেওয়া।

(১০)    ইমম্যাচিউরড এবং বাস্তব লাইফের সাথে এখনো পরিচিত না হওয়া বা পরিচিত হবার চেষ্টা না করা।

(১১)    কথায় কথায় বড়দের ব্যাপারে তুলনা বা মন্তব্য করা।

হেডামগিড়ি দেখাইবা তো আগে হেডাম নিজে তৈরী করো। তারপর হেডামগিরি দেখাও। আমরাও দেখতে চাই, হেডামগিরি করার যোগ্যতা কতটুকু।  

যেদিন প্রথম আমি জানলাম যে, উম্মিকা একটা ছেলেকে ভালোবাসে, আমি অবাক হই নাই। অথবা এমন নয় যে, আমি কোনো বাধা দিতে চেয়েছি। আমি সব সময় চেয়েছিলাম যে, আমার অনুপস্থিতিতে আমার এই ব্যবসা, আমার পরিবারের জন্য একজন দায়িত্তশীল মানুষ।