শারমিন কথা

মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় প্রায় তিন বছর আগে। আর এই পরিচয়টা নিছক কোনো কাকতালীয়ভাবে নয়। নিছল প্রোফেশনাল প্রেক্ষাপট থেকেই তার সাথে আমার পরিচয়। ধীরে ধীরে সখ্যতা গড়ে উঠলেও প্রোফেশনাল বাউন্ডারি থেকে জীবনের সব কাহিনী সব সময় জানা হয়ে উঠে না। কিন্তু এই পরিচয়ের মধ্যে প্রোফেশনাল বাউন্ডারীর বাইরেও একটা আলাদা জগতের মধ্যে প্রবেশের পরিবেশ সৃষ্টি হয় যা নিছক ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক।

জীবনের সব কাহিনীর কিছু মোড় থাকে। এই মোড়ে মোড়ে আকাবাকা হয়ে কিছু অব্যক্ত কাহিনী থাকে যা থেকে বেরিয়ে আসা যায় না। শারমিনের জীবনের ইতিহাসেও এই রকম বেশ কিছু বাক আছে। শারমিনের বিয়ে হয়েছে প্রায় অর্ধ যুগের উপর কিন্তু ঈশ্বর তাকে তিনি অনেক ভাগ্সেয আর আনন্ইদ থেকেই যেনো বিনা কারনে বঞ্চিত করে রেখেছন। কেনো এমন হয়? কেনো ঈশ্বর কাউকে থলে ভরা সম্পদ দেন, ঘর ভর্তি মানুষ দেন কিংবা দুহাত ভরে শান্তি দেন, আবার কারো কারো জন্য ঈশ্বর কিছুই দেন না। এর ব্যাখ্যা বড় জটিল। শারমিনের জীবন টাও যেনো সেই দলে যারা আজীবন শুধু বঞ্চিতই ছিলো। না জোগান দিলেন সি সাধের যেখানে কোনো হাটি হাটি পা পা করে ঘরময় ঘুরে বাড়াচ্ছে ক্ষুদ্র মানুষের পদধ্বনি, না ঝমকালো সম্পদের পাহাড়, অথবা সমাজের উচ্চবিত্তের কোনো অহংকার। ঈশ্বর কাকে কেনো এই সার্থকতা থেকে কি কারনে বঞ্চিত করেন, তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন। আপাত দৃষ্টিতে আমাদের কারো কারো সহানুভুতি থাকলেও একটা জিনিষ সঠিক যে, ঈশ্বর তার সৃষ্টির সাথে কখনো মশকরা করেন না। তিনি যার যার সামর্থের উপর, যোগ্যতার উপর তাকে পুরুস্কার করেন। যতোক্ষন না কেউ কোনো কিছুর জন্য মানসিক, এবং মানবিক দিক থেকে প্রস্তুত না হয়, অথবা তাকে প্রস্তুত না করেন, ততোক্ষন পর্যন্ত ঈশ্বর তাকে সেই কাঙ্ক্ষিত পুরুস্কার কে তিনি তার হাতে তুলে দেন না। ঈশ্বর সবচেয়ে ভালো বিচারক। যে যতটুকুর ভার বহন করতে পারে, যে জিনিষের ভার বহন করতে পারবে, ঈশ্বর তাকে সেই জিনিষের ভারই তাকে দেন। অপাত্রে তিনি কোনো কিছুই দান করেন না। হোক তাকে তিনি যতো সুন্দর করেই সৃষ্টি করেন না কেনো।

ঈশ্বর এই জাতীয় মনুষ্য বাহিনীকে যুগে যুগে একটা রেফারেন্স দেওয়ার লক্ষ্যে, তাদেরকে উদারন হিসাবে রাখার জন্য হয়তো মনুষ্য সমাজে নিছক একটা লোভনীয় মুর্তি হিসাবে জাগিয়ে রাখেন।