আমার এপেন্ডিক্স-জে লঞ্চ করার কারনে এবার আমার প্রোমোশন হবার কথা না। আর সেটাই হয়েছে। আমি এবার প্রোমশনের ব্যাপারটা নিয়ে মোটেই মাথা ঘামাই নাই। কারন আমি ব্যক্তিগতভাবে আর চাচ্ছিলাম না যে, আমার প্রোমোশনটা হোক আর আমি আবার আর্মিতেই থেকে যাই। এবার আমার কমান্ডার আগেরজন নাই, ফার্ষ্ট লং কোর্সের সোর্ড প্রাপ্ত অফিসার আমাদের ৪৬ ব্রিগেডের কমান্ডার। আমি যেহেতু আর ইন্টারেস্টেড না প্রোমোশনের ব্যাপারে, ফলে মজিদ কিংবা অন্যান্য অফিসাররাও আমাকে মূটামূটি ধরেই নিয়েছে যে, আমি আর থাকছি না। মজিদ আমার সাথে বেশ অন্তরঙ্গ ভাবে অনেক কথাই বল্লো। এটাও বল্লো যে, স্যার আপনি যদি এপেন্ডিক্স-জে টা সাবমিট না করতেন, খুব ভালো হতো। এবার আপনার প্রোমোশনটা হতোই।
আমার এমনিতেই এই ব্যাপারে মন ভালো ছিলো না, তারপর আবার আদিখ্যেতাভাব। বললাম, মজিদ, আমি জানি আমি বাইরে গিয়ে কি করবো। যে আমি আর্মিতে আর্মির জন্য এতো শ্রম দিতে পেরেছিলাম, সেই আমি এবার বাইরে গিয়ে নিজের জন্য শ্রম দেবো। আজীবন তো আর আর্মিতে থাকা যাবে না। যদি সেটাই হয়, দেখি না বাইরে গিয়ে কি করা যায়। তবে একটা জিনিষ আমি হলফ করে বলতে পারি যে, আজ যারা আমাদের মতো অফিসারদেরকে মুল্যায়ন করে নাই, কোনো এক সময় এই রাজনৈতিক দল আমাদের অনুপস্থিতির জন্য আফসোস করবে। আফসোস করবে এই কারনে যে, আমরা কোন রাজনৈতিক দল করতাম না। আমরা ছিলাম সত্যিকার অর্থে প্রোফেশনাল আর নিরপেক্ষ। তোমরা যারা পদ দখল করে আছো, তারা একসময় হয়তোবা এই কথাটা অক্ষরে অক্ষরে ফিল করবা যে, আজ যারা তোমরা দলের জন্য অনুপ্রানিত, কোন এক সময় অন্য দলের জন্যেও অনেক অফিসাররা অনুপ্রানিত হবে না এটা ভাবা উচিত নয়। তখন আর যোগ্য অযোগ্য বলে কোনো কথা থাকবে না। তোমরাই তো শিখিয়ে দিলা যে, আর্মিটাকে দলীয়করন করা যায়। আজ তোমরা ক্ষমতায় আছো, এমনো হতে পারে যে, যখন ক্ষমতা হাত ছাড়া হয়ে যাবে, তখন ওইসব অনুপ্রানিত দলকানা অফিসারদের জন্য তোমরা আর ঢোকতেই পারবা না। তখন মনে হবে শিড়দাড়াওয়ালা কিছু নীতিবান অফিসারদের দরকার ছিলো যারা ভোট কারচুপি করবে না, অন্যায় কাজ করবে না, এবং ন্যায় কাজ করার কারনেই হয়তোবা তোমরা আবার ক্ষমতায় আসতে পারতা। এর মাশুল তোমার দলকে দিতেই হবে। আমরা কোন না কোনোভাবে টিকে যাবো, বিলিন হয়ে যাবা তোমরা আর তোমাদের দল। আমি যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছের কেউ হতাম, আমি তাকে ঠিক এই কথাগুলিই বলে পরামর্শ দিতাম যে, কোয়ালিফাইড লোক যখন থাকে না, তখন সাফার করে সবাই, আর সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় দল। মাননিয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আপনার ভবিষ্যত খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। মাসুলটা হয়তো অনেক বড় আকারের দিতে হতে পারে। এটা বাংলাদেশ। তাই ন্যায় কাজ করে কোয়ালিফাইড অফিসারদেরকে এই আর্মিতে রাখুন। এতে আপ্নাদেরই লাভ বেশি হবে।
যাক, চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। আমি এবার সুপারসিডেড হবার কারনে ঠিক জবাব দিয়ে দিলাম, আমি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বের হয়ে যেতে চাই। আমাকে ছেড়ে দেয়া হোক। মজিদকে বললাম, অন্তত এইটুকু উপকার আমার করে দাও তোমার দলিয় প্রধানকে বলে। মজিদ, রাজী হলো।