০২/০৭/১৯৮৮-বিয়ের রিং

নতুন বিয়ে করে এসেছি। এই খবরটা জানে শুধু লেঃ আশফাক আর ক্যাঃ রেজা। অন্য কাউকে এই ব্যাপারে কিছু জানানো যাচ্ছে না। কারন মিলিটারী রুল অনুযায়ী আমার বিয়ের বয়স এখনো হয় নাই। সেমোতাবেক বিয়ে করার জন্য আমাকে আরো ৪ বছর অপেক্ষা করতে হবে। যেটা খুবই একটা কঠিন বিষয়। যদি জানাজানি হয়ে যায়, তাহলে সেনা আইনে আমার অনেক ক্ষতি হবে। আমার চাকুরীচ্যুতও হতে পারে। আমাকে অনেক সাবধানে সব বিষয়ে আচরন করতে হবে।

বিয়ের পরে আমার হাতে একটা বিয়ের সোনার রিং আছে। এতা সম্ভবত আমার পড়া ঠিক হচ্ছে না। অনেকেই জিজ্ঞেস করে, এটা কি? আমি এড়িয়ে যাই। আর এম্নিতেও সোনার আংটির উপর আমার কোনো গরজ নাই। মিতুলের সাথে আমার যোগাযোগের একমাত্র উপায় প্রতিদিন চিঠি লিখা। অবশ্য সেও প্রতিদিন আমাকে চিঠি লিখছে। বাসার কেউ জানে না আমি বিয়ে করেছি। বদি ভাই, হাবীব ভাই কিংবা অন্য কেউওই জানে না যে, আমি বিয়ে করে এসেছি এই মে মাসে।

আমার বিয়ের ব্যাপারে যদি আমি আমার অভিভাবকদের উপর নির্ভর করতে হতো, তাহলে হয় আমি মিতুলকে সাভাবিকভাবে পেতাম অথবা ওর সাথেয়ামার বিয়েই হতো না। পরের অপশনটাই বেশি হতো। আমি যাকে চাই, সেটা আমার পেতে অসুবিধা কই? কিন্তু এখন অসুবিধাটা হচ্ছে আমার বিয়ের খবরটা গোপন রাখা। ভাবছি, এবার কোর্স শেষ করে আমার বিয়ের ব্যাপারটা আমার পরিবারের সাথে মিটিয়ে ফেল্বো। আমি এটাও জানি আমার এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বদি ভাই কিংবা হাবীব ভাই মেনে নিবেন না। তাতেও আমার সিদ্ধনাত আমাকে অটল থাকতে হবে। আমি আলাদা ব্যক্তিত্ত হয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামতকে প্রাধান্য দিতে চাই। এটা আমার পরিবারের ট্রেডিশন থেকে অনেক আলাদা। আমি তো জানি আমার একমাত্র আমিই সব। মা আমার পাশে থাকবেন ঠিকই কিন্তু আমারমায়ের তেমঙ্কোনো সামর্থ নাই যাতে তিনি সবার উর্ধে গিয়ে আমাকে একচ্ছত্রভাবে সাপোর্ট দিতে পারবেন। তবে আমার মা যে খুশী হবেন সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নাই।

আর বেশীদিন নাই কোর্স শেষ হবার। খুব তাড়াতাড়িই আবার সাভারে চলে আসবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *