Categories
২০ জুলাই ১৯৯৫ তারিখে আমাকে ৭ ফিল্ড রেজিমেন্ট থেকে ১ ফিল্ড রেজিমেন্টে পোস্টিং করা হয়েছিলো ১ ফিল্ডের সাথে হাইতিতে জাতিসঙ্ঘ মিশনে যাওয়ার জন্য। ১ ফিল্ডের নতুন নামকরন করা হয়েছে ব্যানব্যাট। এর মানে হলো বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন। আজ আমরা হাইতিতে আগমন করলাম। জাতিসঙ্ঘ মিশনে এটাই আমার প্রথম মিশন। আমাদের কোর্সের মেজর সাকির আমাদের সাথে আছে। ১২ লং কোর্সের মেজর জাহিদ (সিরিয়াল-১৪ নামে বেশী পরিচিত) আছে। ১১ লং কোর্সের মেজর ফরিদ, মেজর মোসাদ্দেক, ১০ লং কোর্সের মেজর ফারুক, ৯ লং এর মেজর ইশ্তিয়াক এবং মেজর সারোয়ার, ১৬ লং এর মেজর আলী (সুন্দর আলী নামেই সে বেশি পরিচিত)। এয়ারফোর্সের স্কোয়াড্রন লিডার শফিক স্যার (নায়ক রাজ রাজ্জাকের মেয়ে ময়নার জামাই) ও আছেন। আর্মি, এয়ারফোর্স এবং নেভী মিলিয়ে প্রায় ৬/৭ শত জোয়ান।
হাইতিতে আসার আগেই এর মধ্যে দুই দফায় দুটি দল ইতিমধ্যে চলে এসেছিল। তাদের কাজ ছিলো মেইন বডি আসার আগে সমস্ত বাসস্থান রেডি করা। শুধু তাইই নয়, এর আগে যে ইউনিট ছিলো বাংলাদেশের তাঁর থেকে সমস্ত মালামাল, গাড়ী, অস্ত্র ইত্যাদি বুঝে নেওয়া।
আমাদের কন্টিনজেন্ট কমান্ডার কর্নেল ফরিদ (আর্টিলারী), তাঁর সাথে আরো ৬ জন লেঃ কর্নেল আছেন। আমরা প্লেন থেকে নেমে সবাই পোর্ট অ প্রিন্স বিমান বন্দরেই সবাই সারিবদ্ধ হয়ে প্রথমে ওকে রিপোর্ট নেয়া হলো। আমরা সবাই বাংলাদেশী ইউনিফর্ম পড়া। এই প্রথম ইউনিফর্ম পড়ে কোনো ভিন দেশে আমার আগমন। সারাদিন প্লেন জার্নিতে টায়ার্ড লাগছিলো। ক্ষুধাও ছিলো পেটে। আমাদের বেস ক্যাম্পে আসতে আসতে প্রায় রাত ৯ টা বেজে গেলো। আমরা সবাই পর্বে পর্বে বেস ক্যাম্পে এলাম।
কোনো স্যহায়ী বিল্ডিং নাই, প্লাস্টিকের ডোঙ্গার মতো ছোট ছোট ক্যারাবান। একটা ক্যারাবানে প্রায় ১৫ থেকে ২০ টির মতো রুম। আমার রুম মেট ১০ লং কোর্সের মেজর ফারুক স্যার। দুজনেই সিগারেট খাই। সুতরাং রুমে সিগারেটের ধুয়ায় প্রথম দিনই ভরে গেলো।
ইউনিফর্ম চেঞ্জ করে মেসে খেতে গেলাম। খেতে খেতে রাত প্রায় ১২ টা বাজলো।