মানবতা এবং নিষ্ঠুরতা তাদের নিজস্ব নিজস্ব ক্ষেত্রে তারা তাদের একটা রুপ নিয়ে অবস্থান করে। একটা বাঘ যখন কোনো একটা হরিনকে শিকার করে, তখন এর দুটু দিক আছে। এর একদিকে আপনি পাবেন বড় নিষ্ঠুরতার চিত্র আরেক দিকে পাবেন বড্ড মমতার দৃশ্য। আপনি যদি ভাবেন যে, একটি বাঘ তার ছোট ছোট বাচ্চাদের খাদ্য অন্বেষণে হরিন শিকার করে, তখন্তাকে আদর্শ মা হিসাবেই দেখবেন। বাঘের বাচ্দেচারা তাদের মায়ের উপর অনেক খুশী। এক্ষেত্রে দেখবেন এর ভিতরের মমতাবোধ। অন্যদিকে, যদি দেখেন যে, আহা, ওই হরন শিকার করে হরিনের বাচ্চাদেরকে এতিম করে দিলো। হরিনের বাচ্তচাদের কাছে বাঘ একটা নিষ্ঠুর কোনো প্রানি ছাড়া আর কিছু নয়। সেখানে দেখবেন এর নিষ্ঠুরতার চিত্র।
যদিও এটা প্রাকৃতিক নিয়মের একটা অংশ। আবার এটাও ঠিক যে, প্রকৃতি একদিকে মানবতা এবং নিষ্ঠুরতা দুটুই একই সময়ে তার নীতিরমধ্যে লালন করে। এখানে কেউ এই নীতি ব্রেক করে না। এখানে আরো একটি নীতি কাজ করে। যেমন ধরুন, কোনো একটি বাঘ যদি শিকার করে তার পেট ভরে যায়, সে পরবর্তী ক্ষুধা না লাগা অবধি ওই বাঘটি আরেকটি হরিন শিকার করে না। বরং শিকার এবং শিকারী তখন পাশাপাশি বিচরন করে। নির্বিঘ্নে পাশাপাশি বসবাস মিত্র এবং শত্রুর। এটাই প্রকৃতির এক অদ্ভুত নীতি।
কিন্তু এই প্রাকৃতিক নীতিটার মধ্যে ব্যাঘাত কিংবা আইন ভঙ্ঘ করে একমাত্র মানুষ। আমরা যখন একজনকে ভালোবাসি, আমাদের নজর থাকে আরেক জনের উপরও। আমরা একজনকে দেখি আরেক জনের সত্তায়ও। ফলে যখনই একজনের উপর আমাদের মন অতৃপ্তিতে ভরে যায়, সাথে সাথে আমরা আমাদের নজর পরবরতী চরিত্রের উপর ফোকাস করে তৃতীয় কোনো মনোবাঞ্চার দিকেও রিজার্ভ করে রাখি। আমরা একই সাথে সুখি নই আবার খুশীও নই। আমরা মানুষের দল একই খাবারে, একই পোষাকে, কিংবা অল্পতেই সুখি নই। আর এখানেই আমাদের মানুসদের ওই বন্য প্রানীদের কাছে অনেক কিছু শিখার আছে। বন্যপ্রানিরা কোনো বাড়িঘড় ছাড়া, টাকা পয়সা ছাড়া, কিংবা রিজার্ভ ফুড ছাড়া সব ঋতুতেই সুখি।
আজ আমি এই স্থান ছেড়ে চলে যাচ্ছি। যাওয়ার প্রাক্কালে শুধু আমি একটা কথাই বলে যাই যে, এই স্থানটি আমার জন্য একদিকে যেমন বড্ড ভালো লাগার আবার অন্যদিকে অতি ঘৃণারও বটে। চলে যাচ্ছি চিরকালের জন্য এমন কিছুমানুসদের ছেড়ে যারা আমাকে কখনো কখনো ভালোবেসেছিলো আবার কখনো কখনো তারা আমাকে ভালো তো বাসেই নাই বরং ঘৃণার চোখেই দেখেছিলো। এখানে কেউ কেউ আমাকে ভালোবেসেছে শুধুমাত্র কিছু অর্থকরী মুনাফার জন্য।
(চলবে)