০৫/১০/১৯৯৩- মাকে মনে পড়ে

 

মাঝে মাঝে আমার মাকে খুব মনে পড়ে। আমার মা একজন অসামান্য personality সম্পন্ন মহিলা।  তিনি শিক্ষিত ছিলেন না। কিন্তু তাঁর ভিতরে অনেক গুন আছে। তিনি পাঁচ ওয়াক্কত নামাজ পরেন,  কোন মিথ্যা কথা বলেন না। তাকে আমি ভীষণভাবে ভালবাসি। এইতো কদিন পর আমি ছুটি যাব এবং আমি তাকে দেখতে পাব। কিন্তুঁ এখনি তাকে আমার দেখতে ইচ্ছে করছে। আমার মা আমাকে ভালবাসে তাঁর ছেলে হিসেবে তো অবশ্যই তবে ভালবাসে একজন রক্ষক হিসেবেও। আমি তাঁর পাশে আছি মানে সে আর কোন কিছুই ভয় পায় না। এই মাকে আমি ভালবাসি আমার জীবনের চেয়ে বেশি। আমি আজ পর্যন্ত আর কারও জন্য কাদিনি, কিন্তু আমার মণে হয় আমি মার জন্য অনেক বার কেদেছি কোন কারন ছাড়া। আমি আমার বাবাকে দেখিনি, আমার যখন জ্ঞান হয়েছে, আমি শুধু মাকেই দেখেছি। পাঁচজন কন্যা, আর একজন ছেলে, বড় ছেলে থাকে আমেরিকা এবং তাকে সব সময় ভয়েই থাকতে হয়। এটা কোন সাধারন পরিস্থিতি নয়।  আমার মা তাঁর মেয়েদের ব্যাপারে অনেক কষ্ট তাঁর মনে আছে কিন্তু যার কোন সামর্থ্য নেই, সে কি করতে  পারে? পারে শুধু কানতে আর একা একা বসে ভাবতে । আমরা  সামর্থ্য নেই  মাকে সাহায্য করবার। খুবই অল্প বেতনে চাকরি করি। আমি যখন ছুটিতে আসি, তখন আমার অনেক আজে বাজে কাজ থাকে যার জন্য আমি ঠিকমত সময়ও দিতে পারি না। গ্রামের কিছু অল্প শিক্ষিত বন্ধুবান্ধব যারা আমাকে খুব সমীহ করে, ওদের সঙ্গে  সময় কাটাতে আমার খারাপ লাগে না। গ্রামের সরু পথ, যার দুপাঁশে ঘাস গজে আছে, রোডের পাঁশে কোন আলো নাই, অন্ধকার চারিদিকে, ফেরার পথে হাতে একটা সিগারেট, মন্দ না। পৃথিবীটা অনেক সুন্দর, আর এই সুন্দরের পিছনে মা একটা অনেক বড় ব্যাপার। যার সুন্দর এবং ভাল একটা মা আছে, তার সুন্দর একটা পৃথ্বী আছে। একটা ভাল মা একটা দেশের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। সে নেতা  তৈরি করে, সে আরও ভাল মা তৈরি করে, সে পৃথিবীটাকে গড়ে তোলে মধুর একটা পরিবেশ দিয়ে। তার প্রতিটি হাসিতে মায়ামমতা আর ভালবাসা আছে। আমার মা ঠিক তার মত। সে হাসলে আমার প্রান ভরে যায়, তার দুঃখে আমার চোখে জল আসে। আমি তাকে  খুব ভালবাসি। আমি কখনো ভাবতে চাই না আমার কেমন যাবে দিনগুলো যখন আমার মা আর বেঁচে থাকবেন না। এখন আমার হাতে অনেক টাকা নাই, আমি চাইলেও আমি মাকে সাহয্য করতে পারি না কিন্তু আমি জানি একদিন আমার হাতে অনেক টাকা হবে এবং আমার কেন জানি খালি মনে হয়, মা তখন থাকবেন না। এটাই হবে সবচে দুঃখজনক।