০৭/০৬/১৯৮৬-টাকা পয়সার টানাটানি

টাকা পয়সার খুব ক্রাইসিসে আছি। মাত্র ৭৫০ টাকার বেতনস্কেল দিয়ে কি আর এইভাবে চলে? প্রায় প্রতি মাসেই ওডি (ওভার ড্রাফট) করতে হচ্ছে। অথরিটি লেটার দিয়েই এখানকার ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হয়। যা বেতন পাই তার থেকে আমাদের খরচ বেশী। এদিকে লেঃ সাকির এই বেতন থেকেই টাকা জমিয়ে পাহাড় বানিয়ে ফেলতেছে। লেঃ সাবির তো রীতিমত ব্যবসাই শুরু করে দিয়েছে। মাঝে মাঝে এই সাকির আর সাবিরই আমাদের লোনের ভরসা। কিভাবে ওরা টাকা জমায়?

খুলনার ছেলেদের একটা ভালো গুন আছে। ওরা যখন কেউ জানে সে খুলনার লোক, ওরা সবাই মোটামুটি এক হয়ে যায়। ভালো কাজ হোক আর খারাপ কাজেই হোক, ওরা দলবদ্ধ থাকে। ইদানীং সাবির হালিশহরে পুরানো গাড়ি ক্রয় বিক্রয়ের মধ্যে ঢোকেছে। মনে হয় বেশ কিছু পয়সা হাতে আছে। সে আবার ইদানিং হাতে কম্বেট কালারের ঘড়িও পড়ে। যখন বাইরে যায়, সে কম্বেট কালারের ঘড়ি পড়ে। যখন ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে থাকে, তখন সাধারন ঘড়ি পরে। একদিন জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যাপার দোস্ত? ক্ষনে ক্ষনে ঘড়ির মডেল পালটাচ্ছো?

উতুর পাওয়া না গেলেও এটা বুঝি যে, মিলিতারী ঘড়ি, মিলিটারী ক্যাপ, মিলিটারী ব্যাগ ব্যবহারে বেসামরিক পোষাকে সহজেই এতা প্রমান করা যায়, সে মিলিটারী পরিবারের সাথে জড়িত। তাতে কিছু তো লাভ হয়ই।

আমার এক মাসের মেসের টাকা প্রায় বাকী পরে গেছে। কিন্তু কোথায় যে সেলারীর টাকা খরচ করলাম, সেটাও বুঝি না। অন্যদের বেলায় যখন কারো টাকা পয়সা শর্ট পড়ে, তখন তারা হয় বাড়ি থেকে আনে অথবা কোনো বড় লোক আত্মীয় দের কাছ থেকে সাময়ীকভাবে ধার নেয়। আমার তো সেটাও নাই। ফলে আমাকে আমার নিত্য প্রয়োজনীয় সাধ আহ্লাদ কাট ছাট করেই টাকা পয়সার সামাল দিতে হবে। শুনেছি, আমাদের নাকী অনেক জমা জমি। কিন্তু এইসব জমা জমি আমাদের জীবনে কখনোই কাজে লাগলো না। যদি কোনো এসেট কাজেই না লাগে, তাহলে এইসব এসেট করে কি লাভ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *