আজ শুক্রবার। সকালে আমার ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ইউনিটে অধিনায়ক হটাত করে এক মিটিং ডাকাতে আমার আর যাওয়া হয় নাই। ভেবেছি বিকালে যাবো। মিটিং শেষ হলো সকাল ১০ টায়। আমি মিটিং শেষ করেই ভাবলাম, মেসে যাই, রেডি হৈ এবং পরে ইউনিভার্সিটিতে যাই। আমি মাত্র মেসে আএসেছি, এমন সময় মেসের ফোনে ফোন এলো যে, আমার গেষ্ট এসেছে ইউনিটে। আমি ভেবে পাইলাম না কে হতে পারে আমার গেষ্ট? মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। গেলাম ইউনিটে আবার। গিয়ে দেখি, ঊহ মাই গড। মিতুল, সুরাইয়া পারভীন তানি আর তার আরো কয়েক বন্ধু আমার ইউনিটে এসে হাজির। আমাদের ইউনিট নতুন সাভারে এসেছে বিধায় অফিস, ব্যারাক আর মেস সব এক বিল্ডিং এর মধ্যে। ওরা সব ইয়াং মেয়েরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মিটিমিটি করে হাসছে আমি যখন রক্সায় করে ইউনিটের কোয়ার্টার গার্ডের সামনে নামছিলাম। লেঃ ওমর শরীফ ইউনিটেই ছিলো, কেরানীগঞ্জের ছেলে। সিও এবং অন্যান্য অফিসাররা সবে মাত্র মিটিং শেষ করে যার যার বাসায় চলে গেছে, ফলে ইমিডিয়েটলী কোনো রি-একশন পাইলাম না বটে কিন্তু আমি জানি এটা একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে। কারন মেয়েদেরকে অফিসার মেসে আনা হয়ত সম্ভব কিন্তু খোদ ইউনিটের অফিসে এভাবে আনা যায় না। এটা সাংঘাতিক সামরীক আইনের পরিপন্থি বলে আমাকে সিও সাহেব কড়া নোটিশ দিলেন।
আমি ওদেরকে আপাতত রিক্সায় করে আমার মেসে নিয়ে এলাম, দেখা যাক পড়ে কি হয়। এই ঘটনায় আমি খুবই চাপে পড়ে গেলাম। এফআইইউ ইউনিট আমার পিছনে সারাক্ষন জোকের মতো লেগে গেলো। সিও সাহেব আমাকে খুবই খারাপ নজরে দেখা শুরু করলেন, উপঅধিনায়ক মুখে এক কথা বলেন বটে কিন্তু কাজে অন্য রকম। আমাদের ইউনিটের ক্যাঃ শিহাব স্যার একমাত্র আমাকে একটু মনোবল দিয়ে যাচ্ছেন। ইউনিটে অনেক অফিসাররা আছেন (মেজর খলিল, মেজর শ ওকাত, লেঃ মুনীর, লেঃ সাদাত, আরো অনেকে কিন্তু সব ব্যাপারেই যেনো আমি টার্গেট। ব্যাপারটা আমার কাছে একটা মানসিক কষ্টের কারন হয়ে দাড়িয়েছে। এম্নিতেই আর্মীতে থাকার ইচ্ছাটা মরে যাচ্ছে, তারমধ্যে আবার পরিবেশ এমন হয়ে উঠছে যে, আর্মী থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাটা যেনো তড়িত হলেই বাচি।আমার প্রতিদিনের ডিউটি বেড়ে গেলো। এমন একটা ব্যাপার ঘটলো যে, আমার কোথাও যাওয়ার আর কোনো সময় হয়ে উঠছে না। আমি মিতুলকে আমাদের ইউনিটে আর কখনো এইভাবে না আসার জন্য বলে দিলাম। চাকুরীর প্রতি আর মায়া রাখতে পারছি না। হাপিয়ে উঠেছি। এমনিতেই এই আর্মিতে আমার আসার ইচ্ছে ছিলো না, তারপর আবার এই ধরনের একটা পরিস্থিতি যা আমার চাকুরীর জন্য কোনোভাবেই সুখকর নয়। ইউনিটে যাই করি, পদে পদে সিও খায়রুল স্যার আমার ভুল ধরার চেষ্টা করেন, উপ অধিনায়কও তার সাথে আরো জোগান দেন। ইউনিটের প্রতি আমার টান বা মহব্বত অনেক কমে গেলো। ভাবছি, হাবীব ভাইকে বল্বো যে, আমি আর আর্মিতে থাকতে চাই না। নেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু কথা তো বলতে হবে হাবীব ভাইয়ের সাথে। কিভাবে কথা বল্বো?
আমি আর্মি এক্সচেঞ্জে হাবীব ভাইয়ের আমেরিকার নাম্বারে কল বুক করতে বললাম। মেজর আকবর ওসি সিগন্যাল স্ট্যাটিক। তিনিই এই সব ব্যাপারে সাহাজ্য করতে পারেন। তার সাথে কথা বললাম, তিনি আমাকে আশসাস দিলেন, কথা বলিয়ে দেবেন আমার ভাইয়ের সাথে।