Categories
জন্মসুত্রে আমরা যা পাই তা হচ্ছে পারিবারিক সম্পর্ক। এটা আমরা অর্জন করি না। কিন্তু বয়সের সাথে সাথে আমরা যা অন্যের কাছ থেকে যা পাই তা হচ্ছে বন্ধুত্ব। এটা আমরা অর্জন করি। আর এই বন্ধুত্তের পর্যায়কালগুলি যখন একে একে ধাপ পেরিয়ে শিশুকাল থেকে বাল্যকাল, বাল্যকাল থেকে কৈশোর, আর কৈশোরের পর থেকে ক্রমান্বয়ে যুবক থেকে বার্ধক্যে উপনীত হয়, এর প্রতিটি ধাপেই থাকে কিছু রোমাঞ্চকর স্মৃতি, ছোটখাটো খুনঠুসি। এই প্রতিটি ধাপই একটা সময়ের বেড়াজালের। এইসব বেড়াজালের স্মৃতিতে সবাই একেকটা আইকনিক নাম নিয়ে বন্ধুদের অন্তরে এমন করে বেড়ে উঠে যা শুধুমাত্র বন্ধুদের ঠোট আর কানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সবচেয়ে ভালো মনের বন্ধুটিও হয়ত তার কালো চেহারার জন্য আদরের নাম হয়ে উঠে “কালা জাহাংগির” আবার সবচেয়ে মিস্টি চেহারার বন্ধুটি হয়তো “সুন্দুরি বা “মেডোনা” নামে বন্ধু আড্ডায় পরিচিত হয়ে উঠে। এইসব আসলে কেবলমাত্র বন্ধু সরোবরে একটি আইকনিক আদরে উচ্চারিত নাম বটে যা অন্য কোথাও প্রযোয্যও নয়, এবং তা গ্রহনযোগ্যও নয়। এসব কেবল ব্যক্তিগত আড্ডার একটা অতীব একান্ত গোপন রোমন্থন বটে। শিশুকালের একটা দন্তবিহীন শব্দ, কিংবা আঞ্চলিক ভাষার কারনে কোনো এক বাক্য হয়ে উঠে এই সব আইকনিক নামের মিস্টি ডাক। হতে পারে কৈশোরের একটি স্মৃতি বিজড়িত কথার সারাংশ, কিংবা যুবক বয়সের কোনো এক নেশাগ্রস্ত প্রেমিকের নামও কোনো এক বন্ধু বিশেষকে অন্য সব বন্ধুর কাছে যতোটা আপন আর আলোচিত করে থাকে সেটা হয়ত খুবই আপনার কিন্তু এইসব প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যবহার যোগ্য নয়। আবার একেবারেই ব্যবহারযোগ্য নয় এমনো নয়। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মেধায় তা যে কেউ সম্পর্ক অনুপাতে আনন্দের সহিত তা গ্রহনযোগ্য সাপেক্ষে ব্যবহার করা কোনো সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে। সেটা নিতান্তই দুইজন বন্ধুর ব্যক্তিগত সম্পর্কের বাধনের উপর নির্ভর করে।
সন্তানেরা যখন সুউচ্চ মর্যাদায় উপনীত হয়, পিতামাতারাও তখন সেই সন্তানকে আর সেই ছোট বয়সের বিচিত্র নামে ডাকেন না। সন্তান যখন দেশের কর্নধার হন, পিতামাতাও তাকে মিস্টার প্রেসিডেন্ট বলেই সম্বোধন করেন। তাতে না পিতামাতার মান ক্ষুন্ন হয়, না সন্তানের। বরং উভয়েই এই বলে গর্বিত হন, তারা একে অপরের সাথে বহু বছর অতোপ্রোতভাবে এমনভাবে জড়িয়ে আছেন যে, সব সাফল্য তাদেরই। তারা উভয়েই গর্বিত।
টাচ-১৩ এমন একটি ফোরাম, যা আমরা দাবী করতে পারি, এটা আমাদের অর্জন। আমার স্পষ্ট মনে আছে, যেদিন এই টাচ-১৩ এর পত্তন হয়। এর ইতিহাস হয়তো অনেকেরই মনে নাই কিন্তু এর পিছনে যে সব বন্ধুরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের ভুমিকা নিয়ে আজ নতুন করে কোনো মন্তব্য করার প্রয়োজন মনে করি না কিন্তু এইসব বন্ধুদের সবারই একটা কমন উদ্দেশ্য ছিলো। আর তা হচ্ছে আমরন বন্ধুত্তের শিকলে একে অপরকে বেধে ফেলা। এই ফোরামে আমরা সবাইকে একই কাতারে রেখে (কাউকে ছোট বা কাউকে বড়, কাউকে ধনী, কাউকে কম ধনী, কাউকে অধিক শিক্ষিত, কাউকে কম শিক্ষিত, কেউ ছোট র্যাংকের বা কেউ বড় র্যাংকের, এই রকমের কোনো পার্টিজান করি নাই) আমরা ফোরামটাকে তৈরী করতে চেয়েছি। আমরা তথাকথিত সিভিলিয়ানদের মতো কারো কারো আর্থিক সচ্ছলতার কারনে সুবিধা যেমন নিতে পারতাম, আবার কারো কারো আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে তাকে এই ফোরামের অতি নগন্য সদস্য হিসাবেও স্থান দিতে পারতাম। কিন্তু আমরা সেটা কখনোই মাথায়ও আনি নি। বরং কেউ যেনো ছোট কেউ যেনো বড় না ভাবি সেটাই মাথায় রেখে আমরা চেয়েছি সবাই সেই বন্ধু হতে যেনো বৃদ্ধ বয়সে অন্তত লাঠিতে ভর করে হেটে হেটে আরেক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে এক কাপ চা খাই আর গল্প করার পরিবেশ তা তৈরী হয়। বয়সের ভারে দন্তবিহীন দুইবন্ধু গল্প তো করতে পারবো কোনো এক সন্ধ্যায়। এটাই হলো টাচ-১৩ এর মুল উদ্দেশ্য। যখন আর কেউ আমাকে নাম ধরে ডাকবে না, তখন এই টাচ-১৩ এর কোনো একবৃদ্ধ বন্ধু হয়তো পিছন থেকে এসে বলবে, “কিরে বন্ধু, কি করস? কিংবা চল বন্ধু ঐখানে বসি”। আর তো কিছু চাওয়ার নাই। কিন্তু সময়ের পরাক্রমে, আমাদের এইসব বন্ধুরা কেউ দেশের কর্নধার, কেউ জাতীর ভরসা যখন হয়ে উঠেন, আমরাও সেই বন্ধুদের জন্য আপাদমস্তক গর্ববোধ করি। প্রকাশ্য দিবালোকে আমরা তাদেরকে সেই বাল্যকালের “করিম” কে “অই করিম্যা” কিংবা যুবক বয়সের “কুদ্দুস” কে অই “কুদ্দুস্যা” বলে ডাকি না, ডাকতেও পারি না, পারা উচিতও নয়।
বাল্যকালে কত কিছুই তো করেছি। না জেনে গাজাও খেয়েছি, আবার বিপদের সময় সবাই মিলে আল্লাহর দরবারে হাতও তুলেছি। বয়স হয়েছে, এখন তো কেউ বিনে পয়সায় গাজা কেনো রিফাইন্ড আফিম দিলেও সেবন করার কোনো মানসিকতা নাই। তাই বলে কি এখন এই বয়সে এসে “বাল্যকালে একবার আমি গাজা খেয়েছিলাম বলে কোনো ক্রেডিট নেবার স্কোপ আছে, না আছে কোনো গর্ব করার বিষয়? কিন্তু এর মানে আবার এই নয় যে, ব্যক্তিগত আড্ডায় তা আমরা বন্ধুদের কাছে লুকানোর কোনো চেস্টা করি। তখন অপরিপক্ক বয়সে এই ছাইপাস খেয়ে কে কি রকম রাজকীয় ডায়ালগ ছেড়েছে তা নিয়েও বিস্তর হাসাহাসি হয়। এটাই তো সেটা যা চেয়েছি। আবার ব্যক্তিগত আড্ডায় আমাদের সেই বন্ধুরা যারা তাদের নিজ নিজ স্থানে গর্ব করার মতো অবস্থানে আছেন তাদের বর্তমান পদকে অতিরিক্ত সমীহ করে বিস্তর গ্যাপ করে বন্ধুত্তটাও নষ্ট করার কোনো অবকাশ রাখতে দিতে চাই নাই। মধুর আড্ডায় এখানে সবাই জেনারেল, সবাই ব্যবসায়ী সবাই ভাই আবার সবাই এক। এই বন্ধু ফোরামে তখন বাল্যকালের জসিমই “ জইস্যা” বা ফর্সা চেহারার বন্ধুটি অই যে “সুন্দুরী”। তখন কুদ্দুস আমাদের কাছে কুদ্দুস্যাই, আর করিম আমাদের কাছে করিম্যাই। এই তফাতটা যদি আমরা এই বয়সে এসে না বুঝতে পারি, তাহলে না আমরা বন্ধুত্তকে সম্মান করছি, না সম্পর্কটাকে।
আমার বর্তমান পেশার এমনসব অনেক রাঘব মানুষদের সাথে আমার এমন অনেক সখ্যতা আছে যারা শুধু দেশের কর্নধারই নন, আন্তর্জাতীক মহলেও তাদের অনেক সুনাম আছে। টিপু মুন্সী ভাই, আতিকুল ভাই, আনিস ভাই (যিনি মারা গেছেন), মহিউদ্দিন ভাই, মীর গ্রুপের কর্নধার, কিংবা আজাদ ভাই আরো অনেক মানুষগুলি যখন আমরা এক ফোরামে বসি, অনেক সময় ফান করে মুন্সী ভাইকে হুজুর ডেকেও বলি ভাই মাথায় হাত রেখে একটু ফু দিয়া দেন বা এক গ্লাস পানি পরা দেন ইত্যাদি। হয়ত মুন্সী ভাইও ফান করে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, এই নাও বাছাধন, প্রনাম করো পা ধরে। আবার তার থেকেও আরো কঠিন রশীকতা করে বলেন (থাক আর বললাম না) কিন্তু যখন মুন্সী ভাই দেশের একজন নীতিনির্ধারক, তাকে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত আড্ডায় যাই বলি না কেনো, প্রকাশ্যে আমরা তাদের ঐটুকু সম্মান করি যা তিনি প্রাপ্য এবং আমরা তখন সেটাই করি যাতে তিনি এবং আমরা উভয়েই একটা ক্লাশ রিপ্রেজেন্ট করি বলে অন্য সবাই বুঝে। এটা বুঝবার জন্য অনেক শিক্ষিত হবার দরকার নাই।
টাচ-১৩ কে এই পর্যায়ে আনার জন্য অনেক সদস্যের কিন্তু অনেক বেগ পেতে হয় নাই। গুটিকতক সদস্য জানে এর পিছনে কি পরিমান পরিশ্রম দিতে হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আমরা ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, এবং ইসি মেম্বার ছিলাম, তাদের থেকে এখন পরিশ্রম অনেক অনেক বেশি। যারা এর সাথে জড়িত তারাই শুধু জানেন কি মুল্য দিতে হয় এই ফোরামকে সচল রাখার জন্য। একটা চায়নীজ চাদর যখন গ্রুপ থেকে কমন গিফট হিসাবে আমাদের হাতে আসে, এর পিছনের ইতিহাস যে কত পরিশ্রমের, সেটা জানে শুধু সে যে এই চাদর সুদুর চীন থেকে কিনে এয়ারপোর্ট পার হয়ে দেশে আনেন। মাঝে মাঝে পরিবারের সবাই এর সাথে জড়িত হয়ে যায়। তাঁর মানে আমি এই বলতে চাচ্ছি না যে, সবাই আরাম করে টাচ-১৩ উপভোগ করবে আর কেউ কেউ খেটে মরবে কেনো। সেটা না। যা বলতে চাচ্ছি, তা হলো, এই টাচ-১৩ আমাদের একটা স্বপ্ন, আমাদের একটা গর্ব। এর কোথাও একটু ফাটল মানে আমাদের গায়ের চামরায় আচড়ের মতো। আর যদি এই আচড় এমনভাবে লাগে যে, সেলাই দরকার, তাতে রক্তক্ষরন হয় তাদের বেশি যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে একে সবার ঈর্শা করার মতো একটা ফোরাম ইতিমধ্যে তৈরী করতে পেরেছেন।
গত কয়েকদিন আগে আমি এনবিআর এর একজন সচীবের সাথে আমাদের এই টাচ-১৩ এর পুরু ব্যবস্থাপনাটা নিয়ে আলাপ করছিলাম। সেখানে আরো কয়েকজন উচ্চ পদস্থ সচীব এবং এডিশনাল সচীবও ছিলেন। তাঁরা এতো অবাক হলেন জেনে যে, ১৩৭ জন বেসিক সদস্য নিয়ে (যা এখন প্রায় হাজারের কাছাকাছি উঠে গেছে বাল-বাচ্চা-নাতী নাতকোর নিয়ে) কিভাবে আমরা এতোদূর আসতে পারলাম যা তারা কয়েক ডজন সচীবও পারছেন না। আমার শুধু একটাই উত্তর ছিলো, আর তা হচ্ছে- বিশ্বাস এবং ইনসাফ। এর মানে এই যে, আমরা আমাদের বন্ধুদের, আমাদের ইসিদের, আমাদের উপদেষ্টাদের বিশ্বাস করি, এবং তারা (আমাদের বন্ধুরা, আমাদের ইসিগন, আমাদের উপদেষ্টাগন) আমাদের অন্য বন্ধুদের উপর সঠিক ইনসাফ করেন।
টাচ-১৩ আমাদের একটা স্বপ্ন, আমাদের একটা দাড়াবার স্থান। আর এইটা আমার ব্যক্তিগত জীবনে একটা সাফল্য। এটার ব্রেইন চাইল্ড আমরা গুটিকতক মানুষ যারা স্বপ্ন দেখেছিলো আর সেই স্বপ্ন সবাই একসাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আর সেই ব্রেইন চাইল্ডের মধ্যে আমি নিজে, ওয়াহিদ, সালাম, হুমায়ুন, মতিউর, জাকির এবং আরো অন্যান্যরা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ছিলাম বলে মাঝে মাঝে যখন দেখি এর মাঝে কিছু ভাংগনের বাতাস বয়, আমার বড় কস্ট হয়। কেউ এই ফোরাম থেকে মনে কস্ট নিয়ে বেরিয়ে যাবেন আর আমরা তা জীবদসশায় দেখবো, সেটা আমি কখনো মান্তেও পারবো না, মানতে চাইও না। আমার ধারনা, আমার সাথে যারা এই স্বপ্ন দেখেছিলো, তারাও এটা মানতে পারবে না।
আমি পরিশেষ একটা কথা বলতে চাই, আমরা সবাই এক, আবার সবাই একই রকম নই। যাকে সম্মান দেয়া দরকার, যার সম্মান পাওয়ার দরকার, তাকে তা অকপটে দিতে হবে। আমি তো গর্ব করে বলি, আমার আছে অতোটা জেনারেল, অথচ এক সময় যেই জেনারেলদের ভয়ে তাঁর অফিসের ধারে কাছেও যাই নাই, আর আজ আমারই বন্ধুরা জেনারেল। এর থেকে আর কত সম্মান আমার দরকার? আমরা এই বন্ধু জেনারেলকে যেমন সম্মানীত করবো তেমনি সম্মান দেবো সেই সব বন্ধুদেরও যারা তাদের নীজ যোগ্যতায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে সম্মানীত। অতীত থাকবে, আড্ডা থাকবে, ফান থাকবে, কিন্তু প্রকাশ্য আর অপ্রকাশ্য আড্ডা একসাথে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। বন্ধুই তো বন্ধুকে সম্মান দেবে, গর্ববোধ করবে। আমরাই যদি তা না দেই তাহলে কোন ভরসায় আমরা একে অপরের জন্য শিল্ড হয়ে দাড়াবো? আমরা সবাইকে যার যার স্থানে সম্মান দেখানো আমাদের কর্তব্য। ভালোবাসা যদি দিতেই না পারি, তাহলে ভালোবাসা চাইবো কিভাবে? এখানে আরো একটা কথা না বললেই নয় যে, হয়তো ভালোবাসার বহির্প্রকাশ একেক জনের একেক রকমের। হয়তো আমরা অনেকেই না জেনে, না বুঝেই হয়তো অনেকে অনেক কিছু বলে ফেলি, এটা হয়তো ভালোবাসার আতিশয্যের আরেক টি প্রকাশ। তাঁর পরেও আমি বলবো, আমরা আমাদের কমন ভালোবাসার বাইরে এমন কিছু করতে চাই না যারা এই বয়সে এসে কিছুটা হলেও মনে কস্ট পাক। ভালোবেসে চুমু খেতে খেতে যদি আমার সন্তান দম বন্ধ হয়ে মরেই যায়, তাহলে এই চুমুটা আমার সনাতেনের জন্য ভালোবাসা নয়।
এখানে আরেকটি কথা না বললেই নয়, আমাদের ইসি, উপদেস্টা, এবং কার্যকরী সদস্য যারা আছেন, তারা কিন্তু কেউ বেতনভোগী নন। আমরা আমাদের সবার কাজগুলি এইসব কিছু গুটিকতক বন্ধুদের উপর ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিত মনে আছি। তার একটাই কারন, We respect our friends, we trust our friends, and we do believe, no one is going to do any such activities where Touch-13 is even slightly harmed. এইসব বন্ধুরা টাচ-১৩ কে সামনে এগিয়ে নেওয়ার কাজে লিপ্ত। তারা কোনো আইন আদালত নিয়ে কিন্তু বসেন নাই। বিচার শালিশি করা আমাদের ইসির কাজ নয়। কিন্তু কেউ যদি আমাদের যে কাউকে মনে কস্ট দেন, বা কারো জন্য আমাদের কেউ কস্ট পান বা মনে করেন যে, এই ফোরাম কারো উপর অবিচার করছে বা করেছে, তখন আমরা এই ১৩৭ জন বেসিক সদস্যই ইসি। এটা ইসি অফ ফ্রেন্ডশীপ। তবে ১৩৭ জন বিচারকের আসনে যেহেতু বসানো সম্ভব নয়, ফলে আমাদের সম্মানিত টাচ-১৩ এর ইসিরাই আমাদের ১৩৭ জনকে রিপ্রেজেন্ট করে। এর মানে এই নয় যে, এর বাইরে কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে পার্টিসিপেট করতে চান তাকে ভিজিটর হিসাবে অপারগতা দেখানো হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা- কেনো আমরা আমাদের জন্য বন্ধু ফোরামে নালিশ করতে হবে। কেনো আমরা সময়, স্থান এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে সব কিছু মুল্যায়ন করবো না! এটা মাথায় রাখলেই তো সব ঠিক।
একটা ছোট বাস্তব গল্প দিয়ে লেখাটা শেষ করি। আমার এক ব্যাংকার বন্ধু ( যিনি বর্তমানে একটি প্রাইভেট ব্যাংকের এমডি) জাহাংগিরনগর ইউনিভার্সিটিতে নিজ উদ্যোগে মাসিক বুলেটিন বের করতেন। তিনি হটাত মাস্টার্স পরীক্ষার আগে পড়াশুনার ব্যস্ততার কারনে পরপর দুই মাস মাসিক পত্রিকাটি বের করতে পারেন নাই। তো অন্য এক বন্ধু তাকে জিজ্ঞেস করছেঃ কিরে দোস্ত, তোর মাসিক বন্ধ নাকি? তো বুলেটিন বন্ধু বলছেঃ হ্যারে দোস্ত, দুইমাস ধরে আমার মাসিকটা বন্ধ। এই হয়ে গেলো বুলেটিন বন্ধুর নাম “ মাসিক”। এখন সে একটা প্রাইভেট ব্যাংকের এমডি। অনেক বড় পোস্ট। গভর্নর, অর্থমন্ত্রী, বানিজ্যমন্ত্রী ইত্যাদি বড় বড় কর্নধারদের সাথে আমার এই বন্ধুর উঠাবসা। দেখা হলে হয়তো চুপে চুপে এখনো বলি- কি দোস্ত মাসিক ঠিক আছে তো? সেও খুব মজা পায়। হয়তো বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মজার মজার উত্তর দেয়। কিন্তু তাই বলে কি আমরা তাকে প্রকাশ্যে এই আইকনিক নামে আর ডাকতে পারি বা পারা উচিত?
( বিশেষ নোটঃ যাদের বাচ্চা কাচ্চারা অল্প সল্প গল্প ফোরামে বাবাদের পাশাপাশি তাদেরও এক্সেস আছে, তারা এই পোস্ট না পড়াই ভাল। আর যদি পড়, তাহলে এই লেখা থেকেও শিক্ষা নাও কি বলতে চেয়েছি। আমরা ও চাই তোমরা জন্মগতভাবে প্রাপ্য এই ফোরাম কে নিজের অর্জন মনে করে সবাই মিলে এক সাথে একটা পরিবারের মতো এগিয়ে নিয়ে যাও। তাহলেই সার্থক হবে আমাদের স্বপ্ন)