১০/০৭/২০২৩- রুপীতে বানিজ্য

বর্তমানে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ব্যবসা করে ডলার কারেন্সীর উপর। প্রথমে ডলার থেকে রুপীতে কনভার্ট করে অতঃপর এক্সপোর্টের ব্যয় বহন করা হয়। এতে বাংলাদেশকে দুটু কনভার্সনের মাধ্যমে যেতে হয় ৯ক) একটা টাকা থেকে ডলারে (খ) আবার ডলার থেকে রুপীতে। এই কনভার্সনে বাংলাদেশের বেশ কিছু সিস্টেম লসের মতো লস গুনতে হয়।

কিন্তু যদি সরাসরী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া রুপীতে ব্যবসা করে, তাহলে বাংলাদেশকে শুধুমাত্র একটা কনভার্সনে যেতে হবে, আর সেটা হলো টাকা থেকে রুপীতে।

দুইদেশ এভাবে ডলারের বাইরে রুপীতে ব্যবসা করতেই পারে। আর পারলে ভালো। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে- বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া ২ বিলিয়ন সমপরিমান মালামাল আমদানী করে আর বাংলাদেশ প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের মালামাল আমদানী করে ইন্ডিয়া থেকে। ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমান রুপিতে ব্যবসায় বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নাই কিন্তু বাকী ১২ বিলিয়ন ডলার কিভাবে ম্যানেজ করা হবে, সেটা।

যদি ইন্ডিয়া এই বাকী ১২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমান রুপী বাংলাদেশের কারেন্সী টাকাকে একটা ফিক্সড বা ন্যনুতম একচেঞ্জ রেটের মাধ্যমে রাজী হয়, তাহলে ব্যাপারটা আপাতত সহজ হবে। নতুবা বাংলাদেশ সেই ২ বিলিয়ন ডলারের বাইরে ইন্ডিয়ান রুপীতে বাকী ১২ বিলিয়ন ডলারের বিল সমন্নয় করতে পারবে না।

তবে একটা সার্ভের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে যে, সরকারী ডিক্লেয়ারেশনের মাধ্যমে শুধুমাত্র ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমান রপ্তানী হয় আমাদের দেশ থেকে কিন্তু আনডিক্লেয়ারড বা আনঅফিশিয়ালী রপ্তানীর পরিমান প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলার সমপরিমান। যদি এই আনডিক্লেয়ারড বা আনঅফিশিয়াল রপ্তানীগুলি অফিশিয়াল্ভাবে করার সিস্টেম তৈরী করা যায়, তাহলে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া এই দুই দেশের মধ্যে রুপিতে ব্যবসা কোনো জটিল বিষয় নয়। কিন্তু আমাদের দেশের আইন করে এসব আনঅফিশিয়াল ডিক্লেয়ারেশন ব্যবসা থামানো সম্ভব কিনা সেটা কার্যকর করা খুবই জটিল এবং অসাধ্য ব্যাপার। 

এখানে একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে, সবসময় ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং এ  “নস্ট্রো” একাউন্ট নামে একটা একাউন্ট খুলতে হয় যেখানে ট্রানজেক্টরী দেশের কারেন্সী সেখানে জমা হয় বা থাকে। যতোটুকু রিজার্ভ বা কারেন্সী সেখানে থাকবে, ততটুকুই দেশসমুহ ইন্টারচেঞ্জ করে ব্যবসা করতে পারে। ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝাতে পারলাম কিনা জানি না, The nostro account is an account that a bank holds with a foreign bank in the currency of the country where the funds are held. It is used to facilitate foreign exchange and international trade transactions involving foreign currencies.

ট্রেড ডেফিসিয়েট যদি অফিশিয়ালী এতো বিশাল ব্যবধান না হতো, তাহলে ব্যাপারটা কোনো জটিল ছিলো না। যে সব দেশে আমদানী এবং রপ্তানী প্রায় দুপক্ষের মধ্যে সমানে সমান, সেসব দেশে তাদের নিজস্ব কারেন্সীতে ব্যবসা করা একেবারেই সহজ।

তাই এখানে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার ট্রেড ডেফিসিয়েন্ট অনেক বেশী বিধায় বিকল্প চুক্তি করা আবশ্যক যেখানে রুপি এবং টাকার মধ্যে একটা আন্তর্জাতিক সমঝোতা পত্র লাগতে পারে। তাতে বাংলাদেশ একটা ঝুকির মধ্যে পড়তে পারে।