গত ২৮শে জুলাই দ্বিতীয় বারের জন্য ভারত যাচ্ছি। প্রথমবার গিয়েছিলাম ষ্টাফ কলেজ থেকে জাতীয় প্রোটোকলে ডিপ্লোমেটিক ভিসা নিয়ে। কিন্তু এবার যাচ্ছি বেসামরিক হয়ে এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে। আগেরবার ভিসা নিয়ে কোনো সমস্যা হয় নাই। কিন্তু এবার ইন্ডিয়ান ভিসা পেতে বেশ জটিলতায় পড়েছিলাম, খোদ ইন্ডিয়ান হাই কমিশনারের সাথে আমাকে ইনটারভিউ দিতে হয়েছিল। বিনা সিক্রী হাই কমিশনার হিসাবে আছেন বাংলাদেশে। ভিসা ইস্যু করার আগে আমাকে এম্বেসী অফিস থেকে জানানো হলো যে, আপনার ভিসা পেতে হাই কমিশনার এর সাথে ইন্টারভিউ দিতে হবে। ব্যাপারটা সাভাবিক না। তারিখ দেয়া হলো, আমি সময় মতো পৌঁছে গেলাম এম্বেসী অফিসে। কিন্তু উনি সরাসরি আমার ইন্টারভিউ নিতে পারেন নাই কারন যেদিন আমার তারিখ পড়েছিলো, সেদিন তিনি কোনো এক জরুরী কাজে হটাত অফিসের বাইরে ছিলেন। ফলে হাই কমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাহেব আমার ইন্টারভিউটা নিলেন। বেশ মজার একটা সাব্জেক্ট নিয়ে তার সাথে আলাপ হয়েছিলো।
বাংলাদেশে এখন গার্মেন্টস সেক্টরে বেশ আন্দোলন চলছে। শ্রমিকরা অযথাই ফ্যাক্টরীগুলিতে আন্দোলন করছে কিছু খুচরা কারন নিয়ে। যেমন, তাদের বেতন বাড়াতে হবে, কারো কারো দাবী, ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ দিতে হবে, আবার কারো কারো সরাসরি দাবী যে, পিস রেট এর কাজ আগে থেকেই তাদের বলে দিতে হবে, যদি পছন্দ হয়, করবে আর যদি পছন্দ না হয়, করবে না। এই রকম আরো অনেক অযুক্তিক দাবীও তারা করছিলো। ধারনা করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ এই সেক্টরে বেশ ভালো করায় পার্শবর্তী দেশগুলি বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে একটা গন্ডোগোল পাকানোর চেষ্টা করছে। এর আরেকটা প্রধান কারন আছে। সেটা হলো, বাংলাদেশ সব বায়ারদের জন্য জিএসপি (Generalized System of Preferences) ইস্যু করে। এই জিএসপিটা আসলে কি? যার জন্য বায়াররাও এদেশে কাজ করতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?
জি এস পি টা একটু ব্যাখ্যা করিঃ
যারা রপ্তানীমুখী শিল্প চালান, তারা যে র মেটেরিয়াল বাইরে থেকে আমদানী করেন, সেটার উপর সরকার কোনো ট্যাক্স নেন না যদি সেই রপ্তানী শিল্প পুনরায় উক্ত র মেটেরিয়াল দিয়ে বানানো মাল আবারো রপ্তানী করেন বাইরের কোনো দেশে। তাতে রপ্তানী কৃত মালটির সর্বশেষ মুল্য বেশ কম থাকে। এই সুবিধা বিশেষ করে পান, যারা এদেশ থেকে মাল কিনেন তারা। একটা উদাহ রন দেই, ধরুন, আমি সুতা আনবো বাইরে থেকে। সুতা এনে আবার শার্ট বানিয়ে সেই শার্ট বাইরেই রপ্তানী করবো। তাহলে এই সুতার উপর কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না, আবার শার্ট রপ্তানিতেও আমাকে কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না। এর ফলে যারা বায়ার, তাদের তৈরী মুল্য কম হয়। ভারতে এই সুবিধাটা নাই। ফলে ট্যাক্স যখন যখন যোগ হয়, যে শার্ট টা আমি ১০০ টাকায় বায়ারকে দিতে পারবো, সেটা ইন্ডিয়া ট্যাক্সের কারনে হয়তো গিয়ে দাঁড়াবে ১২০ টাকা। এই যে ২০ টাকা বেশি দিতে হলো বায়ারকে, সে এটা বিক্রি করে লাভ করতে হলে কমপক্ষে ১২০ টাকার বেশী মুল্য ধরতে হবে যখন ইন্ডিয়া থেকে শার্টতা সে নেবে। কিন্তু এদেশ থেকে নিলে তাকে কম্পক্ষেব ১০০ টাকার মুল্য এর বেশী হলেই তার লাভ হবে। এ কারনে বহু দেশ জি এস পির সুবিধার কারনে আমাদের দেশকেই পছন্দ করে অর্ডার দিতে। আবার যে কেউ জি এস পি চালু করতে পারেন না। যে দেশে র মেটেরিয়াল আছে, অর্থাৎ লোকালী পাওয়া যায়, তারা জি এস পির প্রবর্তন করতে পারে না। ফলে ইন্ডিয়া ইচ্ছে করলেও জি এস পি সুবিধা দিতে পারে না। তাই যদি এই জি এস পি এর নীতি পরিবর্তন করা যায় বা বাংলাদেশ থেকে জি এস পি তুলে দেয়া যায়, তাতে অন্যান্য দেশ একই কাতারে চলে এলে বাংলাদেশ চলমান প্রতিযোগীতায় টিকে না থাক্রই কথা। হয়তো এতাই কারন হতে পারে যে, একটা আন রেষ্ট চালিয়ে এই খাতকে সমুলে ধংশ করে দেয়া যাতে বায়াররা আর এদেশে এই ঝুকির কারনে অর্ডার না প্লেস করেন।
যাই হোক, আমি ইন্ডিয়ান এম্বেসিকে এসব ব্যাপারে খুব একতা বিশ্লেষনে গেলাম না। খালি ভাসা ভাসা কিছু হাই হ্যালোর মধ্যেই থেকে গেলাম। অবশেষে আমার ভিসা হয়ে গেলো।
এখানে একটা ব্যাপার উল্লেখ না করলেই নয় যে, কি কারনে আমি ইন্ডিয়ায় যাচ্ছি। আমি গার্মেন্টস করছি বিধায় আমাকে মিঃ মুরাদ নামের এক ভদ্রলোক ফ্যাক্টরীতে এসে দেখা করলেন। তাকে আমি আগে থেকে চিনি না। কিন্তু আমার পার্টনার মিঃ মোহসীন শাহিন তাকে চিনেন। আমার অফিসে তিনি এসে বললেন যে, ওয়ার্লড ব্যাংক থেকে বিনা সুদে বেশ একটা লোন পাওয়া যায়, যা আমার মতো একজন ব্যবসায়ী অনায়াসেই গ্রহন করতে পারে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কেনো ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমাকে এই সুযোগটা দেবে? উত্তরে তিনি বললেন যে, ইন্ডিয়ার উড়িষ্যার যিনি কংগ্রেস (আই) এর মহাসচীব, তিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধি (তিনি একজন অবসর প্রাপ্ত কর্নেল)। তিনি মুজিব সরকারের সময়ে শেখ মুজিবের একজন খুব কাছের মানুষের একান্ত পরিচিত। এই পরিচিত মানুষটি কখনো কোনো সুবিধা নেন নাই কিন্তু তিনি এখন আর্থিক দিক দিয়ে খুব ভালো অবস্থানে নাই। তাকে উক্ত কংগ্রেস নেতা সাহাজ্য করতে চান। আমি বললাম, কিভাবে? তিনি বললেন, যে, যদি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক লোন পাশ করে, তাহলে এর একটা অংশ উনি নিবেন, আর বাকী অংশ আমাদেরকে ৮ বছরের কিস্তিতে শোধ করে দিলেই হবে। কোনো ইন্টারেষ্ট হবে না। বস্তুত ব্যাপারটা এই দাড়ায় যে, এই ৮ বছরে যে ইন্টারেষ্ট হবে তার তুলনায় মুজিব সরকারের সময়ের এই গুরুত্তপুর্ন ব্যক্তির (নামটা বলা ঠিক হবে কিনা জানি না, তবু বলি, তার নাম মুসা সাহেব) নিয়ে যাওয়া টাকাও অনেক অনেক কম। তা ছাড়া বেশ বড় অংকের টাকা আমরা লোন নিতে পারবো যার কোনো ইন্টারেষ্টই নাই। হিসাব করে দেখলাম, লাভ আছে। তাই ওখানে বিস্তারীত আলাপ হবে।
আসলে আমি বিস্তারীত অনেক কিছুই জানি না এই লোনটা কিভাবে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমাকে দিতে চায়। একটু রহস্য তো লাগছেই। আবার মজাও লাগছে। দেখি ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়। অন্তত ইন্ডিয়া তো বেড়ানো হলো, লোন হোক বা না হোক। আমি আর মুরাদ বাসে করে ইন্ডিয়ার জন্য রওয়ানা হয়ে গেলাম। মুরাদ বাংলাদেশে কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং এর উপর ছোট খাটো একটা ল্যাব চালায়। এ কয়দিনে মুরাদের সাথে আমার ঘন ঘন দেখা হওয়াতে অনেক বেশী ফ্রি হয়ে গিয়েছিলাম।
আমরা বেনাপোল বিডিআর ক্যাম্পে গিয়ে প্রথমে যখন থামলাম, তখন বেলা প্রায় ১১ টা। ওখান থেকেই আমাদের বর্ডার ক্রস করতে হবে। আমার বন্ধু মেজর মাহফুজ তখন বেনাপোল বিডিআর এর দায়িত্তে নিয়োজিত। আগেই ফোন করে রেখেছিলাম। আমি ওখানে যাওয়ার পর দেখলাম যে, বন্ধু মাহফুজ বেশ ভালো খাবার দাবারের আয়োজন করে রেখেছে কিন্তু ওর বিশেষ তাড়া থাকায় ক্যাম্পে থাকতে পারেনি। আমি বিডিআর ক্যাম্পে উঠে একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম। সৈনিক সাত্তার এসে বল্লো যে, স্যার আপনাদের পাসপোর্টগুলি দেন, আমি ইমিগ্রেশন করিয়ে নিয়ে আসি, আর এরমধ্যে আপ্নারা একটু চা নাস্তা খেয়ে রেষ্ট করেন। প্রচুর লোকের ভীড়। আমার ধারনা ছিলো না যে, কত মানুষ বেনাপোল দিয়ে এভাবে ইন্ডিয়ায় যায়। প্রায় ঘন্টাখানেকের মধ্যে আমাদের ইমিগ্রেসন হয়ে গেলো। লাগেজ তেমন ছিলো না। তাই আমরা অনায়াসেই বর্ডার পার হয়ে ওপাড়ে চলে এলাম, অর্থাৎ ইন্ডিয়া। আমরা শ্যামলী বাসে চড়েছিলাম। বাংলাদেশের থেকে যে বাসটি বেনাপোল পর্যন্ত ঢাকা থেকে গিয়েছিল, সেটা বেনাপোলে গিয়েই শেষ। ইমিগ্রেশনের পরে ইন্ডিয়ার পার্টে আবার নতুন শ্যামলী বাসে উঠতে হয়। ইমিগ্রশনের ঠিক পরেই যে জায়গায়টায় আমরা বাসে উঠলাম, তার নাম আসলে বিস্তরভাবে বললে পেট্রোপোল হিসাবে ধরা যায়। বাংলাদেশের এপাড়ের সাথে ওপাড়ের মানুষের বৈশিষ্ঠের কোনো তফাত নাই। যদি কেউ না বলে দেয় যে, এই পার্টটা ইন্ডিয়া আর ওই পার্টটা বাংলাদেশ, কারো বুঝার সাধ্যি নাই। মানুষের যেনো হুরাহুড়ি, কে কার আগে বাসে উঠবে। তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখলাম। মনে মনে ভাবলাম, সবার জন্য কিন্তু সিট রিজার্ভ করা আছে, তারপরেও কেনো যে মানুষগুলি এ রকম তাড়াহুরা করে বাসে উঠছে আমার বোধগম্য হচ্ছিলো না। এরমধ্যে চায়ের হকার, পানের হকার, সিগারেটের হকার, কেউ কেউ আবার ঘাড় টিপাবেন কিনা, কান খোচাবেন কিনা এই জাতীয় হরেক হরেক পদের সার্ভিসদাতার কোনো অভাব নাই। মুরাদ বল্লো, স্যার, পকেট সাবধান। এখানে যতো না ভালো মানুষের দেখা পাবেন, তার মধ্যে অর্ধেক পাবেন চোর।
আমরা বাসে চলছি, আর মাঝে মাঝে কোন জায়গা ক্রস করছি সেটা পড়ছি। বেনাপোল থেকে কলিকাতা পর্যন্ত যে সব প্রমিনেন্ট জায়গার নাম মনে আছে তার মধ্যে হল- সুবাসনগর, গোলকনগর, মন্দালপাড়া, বকচড়া, গাইঘাটা, ধর্মপুর, হাবরা, বামনগাছি, দমদমের কিছু অংশ এবং শেষে কলিকাতা। পথিমধ্যে আমাদের বাস ধর্মপুরে আধা ঘন্টার জন্য একটা হল্ট দিয়েছিলো। কলিকাতা যখন পৌঁছলাম, তখন বেলা প্রায় তিনটা বাজে। কি যে এক অবস্থা। পুরাই গুলিস্থান। মানুষের ভীড় আর দোকানপাটের এমন হযবরল, কোনো তফাত নাই আমাদের ঢাকা শহরের গুলিস্থান আর কলিকাতার মধ্যে। আমরা একটা হোটেলে উঠলাম। হোটেলে উঠে আমি আমার ব্যাগ একটা টেবিলে রেখে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হবো বিধায় লুংগি পড়ে বাথরুমে ঢোকলাম। মুরাদ রুমেই ছিলো। আমি বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে যখন বের হলাম, মুরাদের এক কথায় আমি হচকচিয়ে গেলাম।
মুরাদ বল্লো, আখতার স্যার, আমার মোবাইলটা পাচ্ছি না। আমি আমার মোবাইল চেক করতে গিয়ে দেখি, আমার মোবাইলটাও খুজে পেলাম না। কি তাজ্জব ব্যাপার!! বললাম, রুমে কি কেউ এসেছিলো?
মুরাদ বল্লো, হ্যা, একটা ক্লিনার বয় এসেছিলো।
সাথে সাথে ম্যানেজারকে জানালাম, কিন্তু ম্যানেজার আমাদের এমন কথা বললেন যে, আমরা একটা সহি পবিত্র হোটেলে উঠেছি, এখান থেকে কখনো কোনো কিছুই হারানোর রেকর্ড নাকি নাই। এর মানে হল আমরা অন্য কোথাও মোবাইল হারিয়ে এসেছি অথবা আমাদের কাছে কোনোকালেই কোনো মোবাইল ছিলো না। কিছুই বলার নাই। আমার সাধের ফোল্ডেড নকিয়া মোবাইল্টা হারিয়ে এখন সে অন্য কারো বাসর করছে। দুক্ষটা এখন অন্যটা। আমার সব কন্ট্যাক্ট নাম্বার গুলি হারিয়ে ফেললাম।
মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো। কলিকাতায় আমাদের থাকা হবে না। আমরা আসলে যাবো, উড়িষ্যায়। তাই এক রাত থাকা হবে এই কলিকাতায়। আবার যাওয়ার সময় আমরা উড়িষ্যা থেকে পুনরায় কলিকাতায় আসতে হবে ঢাকার বাস ধরার জন্য। তখন আরেক রাত থাকা হবে।
আমি আর মুরাদ সন্ধ্যায় বের হলাম। একটা মোবাইল কিনতে হবে, সাথে ইন্ডিয়ার সিম। মুরাদ বহু বছর ইন্ডিয়ায় ছিলো, বাংগালুরে ওর শিক্ষা জীবন কাটিয়েছে। ফলে ও বেশ ভালো হিন্দি বলতে পারে এবং তার ইন্ডিয়া মানুষদের ব্যাপারে একটা ভালো ধারনাও আছে। শুধু তাইই নয়, ও ইন্ডিয়ার কোন শহর থেকে কোন শহরে কিভাবে কখন যেতে হয়, এ ব্যাপারে বেশ ভালো আইডিয়া আছে বলে আমি মুটামুটি আরামেই ছিলাম। মুরাদ জানালো যে, আগামীকাল সকাল ৮ টায় আমরা কলিকাতা থেকে ট্রেনে উড়িষ্যায় যাবো। ট্রেন স্টেসন এখান থেকে বেশি দুরেও নয়। সকালে সাতটায় বের হলেই নগদে টিকেট কেটে আমরা উড়িষ্যায় পৌছতে পারবো। কলিকাতা থেকে উড়িষ্যায় যেতে ট্রেনে প্রায় ৬/৭ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। মানে আমরা হয়তো দুপুরের পরে গিয়ে হাজির হবো।
আমরা দুজনেই একেবারে সস্তায় দুটু মোবাইল কিনলাম। সাথে দুটু সিম। রাতে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ালাম। সম্ভবত কোনো পর্ব হচ্ছে এখানে। রাস্তাঘাট বেশ আলোকিত। রাতে ঢোষা আর সবজি খেয়ে ডিনার শেষ করলাম। যেহেতু ইন্ডিয়া, তারা হালাল হারাম বুঝে না, তাই সাধারনত আমি এসব দেশে কোনো মাংশ খেতে নারাজ। মাছ, ডিম, ডাল আর সব্জি দিয়েই আমি চালিয়ে নেই। এগুলিতে হারাম হালালের কোনো বালাই নাই। রাত ১০টার দিকে রুমে এসে ঢাকায় বাসায় কল করলাম, তারপর ঘুমিয়ে গেলাম।
পরেরদিন বেশ সকালেই ঘুম ভেংগে গিয়েছিলো। হাতমুখ ধুয়ে নামাজ পড়লাম। মুরাদ নামাজ পড়ে না সম্ভবত। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। ধর্ম যার যার। ঈশ্বরের কাছে জবাব্দিহিতা যার যার তার তার। একটা জিনিষ খেয়াল করলাম যে, যদিও ইন্ডিয়ানরা মুসল্মানদেরকে পছন্দ করে না, কিন্তু ব্যবসার খাতিরে কিছু কিছু নর্ম মানতেই হয়। আমরা যে হোটেলে উঠেছি, সেটা কোনো স্টারওয়ালা হোটেল না। তারপরেও দেখলাম, ছাদের এক কোনায় কোন দিকে কিবলা, সেটা মার্ক করা আছে। এরমানে হলো, এখানে বহু মুসলমান ব্যক্তিরা হয়তো আসে, আর তারা বারবার কিবলার দিক জানতে চায় বলে হোটেলওয়ালারা ব্যবসার সার্থে কিবলার দিকটা একটা এরো মার্ক দিয়ে ইন্ডিকেট করে রেখেছে। সাথে একটা জায়নামাজও রেখে দিয়েছে। অনুভুতিটা ভালো লাগলো।
আমি আর মুরাদ উড়িষ্যায় যাওয়ার জন্য সকালেই বের হয়ে গেলাম। ট্রেন স্টেসনে গিয়ে নাস্তা করলাম। এখানকার ট্রেন ষ্টেশনগুলি বাংলাদেশের ট্রেন ষ্টেসন গুলি থেকে অনেক পরিষ্কার এবং প্লাটফর্মটাও অনেক প্রশস্থ। তাছাড়া সকাল বেলা হওয়াতে হয়তো ক্লিনাররা পরিষ্কার করে গেছে, তাই আরো পরিষ্কার লাগছে। লোকজনের সমাগম খুব বেশী না। আমরা দ্রুতই টিকেট পেয়ে গেলাম। ট্রেন ছাড়বে সকাল সোয়া আটটায়। হাতে তখনো প্রায় ২০ মিনিট বাকী। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসেও নাই।
ঠিক সময়ে ট্রেন চলে এলো। আমরা ট্রেনে উঠে গেলাম। এবার লম্বা একটা জার্নি। উড়িষ্যায় আমি কখনো যাই নাই। ফলে ট্রেন জার্নিতে আমি যতোটুকু মজা করা যায়, সেটা উপভোগ করছিলাম। মানুষের হাবভাব দেখছিলাম, হকার এসব ট্রেনেও উঠে। চায়ের কেটলী নিয়ে চা ওয়ালাও উঠে। বাংলাদেশের ট্রেনগুলির মতোই। তবে একটা জিনিষ যে, এদের ট্রেনের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আমাদের দেশের ট্রেনের চেয়ে একটু ভালো। আমরা যখন উড়িষ্যায় পৌঁছলাম, তখন বেলা প্রায় ৩টা বাজে। ভুবনেশ্বর ট্রেন স্টেসনে নামতে হয় উড়িষ্যায় যেতে হলে। কলকাতা থেকে কেশবপুর- কসবা- নারায়নগড়-বালাসুর-ধর্মশালা-কুরুমিতা-ভুবনেশ্বর। একনাগাড়ে ছুটে চলল ট্রেন। মাঝে মাঝে কিছু কিছু বড় বড় ষ্টেসনে ট্রেন থামলো বটে কিন্তু খুব বেশী নেয় না। টাইম মেইন্টেইন করে বুঝা যায়। ভুবনেশ্বর থেকে মুরাদ একটা ট্যাক্সি ক্যাব ভাড়া করলো, কিভাবে কিভাবে কি বলল হিন্দিতে আমি সবটা বুঝতে না পারলেও বুঝলাম যে, আরো প্রায় ৩০/৪০ মিনিট লাগবে। ক্যাবওয়ালা আমাদেরকে ইনিয়ে বিনিয়ে হরেক রকম রাস্তা দিয়ে শেষতক সেই কর্নেল সাহেবের বাসায় নিয়ে হাজির।
বেশ বিশাল বাড়ি। এটা সরকারী বাড়ি, কংগ্রেসের উড়িষ্যার মহাসচীবের বাসা বলে কথা। আমরা যখন তার বাসায় পৌঁছলাম, তখন প্রায় ৪টা বাজে। মাঝে কোথাও খাওয়া হয় নাই। ভীষন ক্ষুধা লেগেছিলো। আমাদের আসার কথা দুপুরের মধ্যে। কিন্তু আমাদের কোনো গাফিলতি ছিলো না, তারপরেও প্রায় ঘন্টাদুয়েক দেরী হয়ে গেছে। কর্নেল বাসায়ই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। আমরা তার বাসার ড্রইংরুমে অপেক্ষায় আছি, তার সাথে দেখা হবে। প্রায় ২০ মিনিট পর কর্নেল আসলেন। এর মধ্যে কর্নেলের ওয়েটার আমাদেরকে একজগ পানি আর দুটু গ্লাস দিয়ে গেছেন। ইন্ডিয়ানদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ওরা বেশীর ভাগ মানুষ কিপটা। এক কাপ চা পাঠাবেন, সেই খরচটাও তারা ব্যয় মনে করেন। কিন্তু পানি তো পানিই। অসুবিধা নাই।
কর্নেল এলেন। তার সাথে প্রাথমিকভাবে আর্মি নিয়েই কথা হলো। তিনি আর্টিলারীর অফিসার, আমার মতো। অবসরের পর তিনি রাজনীতি বেছে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কংগ্রেস (আই) এর উড়িষ্যার মহাসচীব। অনেক বড় পোষ্ট এবং মর্যাদা। কিন্তু তার এই পোষ্টের মর্যাদা আমার কাছে একেবারেই ছোটলোক মনে হলো কারন আমরা সেই সুদুর বাংলাদেশ থেকে এসেছি তার সাথে দেখা করার জন্য, তাও আবার তারই দাওয়াতে। অথচ এককাপ চা অফার করার মতো সৌজন্যতাবোধ দেখতে পেলাম না। অবশেষে তার ওয়েটার গুনেগুনে ৪টা বিস্কুট নিয়ে এলেন। খুব হাসি পেলো। হায় রে আমার কর্নেল ভাই। যাই হোক, মেজাজ একটু খারাপ হচ্ছিল, আবার একটু অপমানবোধ করছিলাম।
কথায় আসি, বলে বললাম, স্যার, আমাদেরকে আপনি এখানে কিছু একটা ব্যাপার নিয়ে আলাপের জন্য দাওয়াত করেছিলেন। আমরা কি সে ব্যাপারে বিস্তারীত কথা বলতে পারি? উনি প্রথমে আমাকে বাংলাদেশে সিমেন্টের ব্যবসা করলে কি রকম লাভ হতে পারে, আমার কোনো সিমেন্ট ব্যবসায়ীর সাথে পরিচয় আছে কিনা ইত্যাদি নিয়েই প্রথমে আলাপ শুরু করলেন। আসল কথা ছেড়ে উনি আমাকে যা নিয়ে আলাপ করা শুরু করলেন, আমি তার আগা মাথা কিছুই বুঝতেছিলাম না। আমি বাংলায় মুরাদকে বললাম, মুরাদ, কি ব্যাপার নিয়ে আসলে আমরা এখানে এসেছি, উনি কি এটা জানে?
মুরাদ বল্লো, স্যার জানে তো। নিশ্চয়ই তিনি এ ব্যাপারে আলাপ তুলবেন। শেষ পর্যন্ত তুল্লেন। আলাপের সার্মর্মটা বলি-
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক থেকে তারা আমাকে ৭ মিলিয়ন ডলার লোন নিয়ে দিতে পারবেন। এটা একটা প্রনোদনা ফান্ড। যেহেতু তিনি উড়িষ্যার কংগ্রেস (আই ) এর মহাসচীব, ফলে তার পদমর্যাদায় তিনি ওয়ার্ল্ড ব্যংকের সাথে একটা ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং এ আছেন। তার কিছু প্রভাব রয়েছে। এই ৭ মিলিয়ন ডলার যদি আমরা নেওয়ার জন্য এপ্লাই করি, তাহলে এটা তিনি পাশ করিয়ে দিতে পারবেন। ইন্ডিয়ায় কেনো করছেন না তিনি এ প্রশ্নে জানালেন যে, এটা ইন্ডিয়ার কোনো ব্যবসায়ীর জন্য প্রযোজ্য হবে না, দিতে হবে ইন্ডিয়ার বাইরে যে কোনো মুসলিম দেশে। এই ফান্ডটা বেসিক্যালি কোনো আরব কান্ট্রি করছে এবং শর্ত হচ্ছে এটা কোনো মুস্লিম কান্ট্রিকে দিতে হবে। তো খুব ভালো কথা। আমি দুটু বিষয়ে কোয়ালিফাই করি। প্রথমত আমি ব্যবসায়ী এবং দ্বিতীয়ত আমি মুসলমান কান্ট্রি রিপ্রেযেন্টেটিভ করি। কথার দ্বিতীয় ভাগে উনি আমাকে মোটামুটি চমকে দিলেন। বললেন যে, এই ৭ মিলিয়ন ডলার যদি আমাকে তিনি পাইয়ে দেন, তাহলে ডলার পাওয়ার পর ২ মিলিয়ন ডলার উনি কেটে রাখবেন। আর বাকি ৫ মিলিয়ন ডলার আমি ইচ্ছে করলে মেরে দিতে পারবো। সে ব্যবস্থাও উনি করে দেবেন। এর মানে হলো নির্ঘাত চুরি। আমি এতোক্ষন খুব মনোযোগ সহকারে ব্যাপারটা বুঝার চেষ্টা করছিলাম। উনি বললেন যে, এই যে ৫ মিলিয়ন ডলার আমি মেরে দেবো, এটা পুরাটাই আমার নয়। এর থেকে ২ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে মুসা সাহেবকে যার থেকে মুরাদও কিছু পাবে আর বাকি ৩ মিলিয়ন আমার একার। আমি কর্নেল সাহেবকে একটা সিগারেট অফার করলাম। যে কোন দেশের যে কোন আর্মির এই একটা গুন আছে, জুনিয়র সিনিয়রের সামনেও সিগারেট ফুকতে পারে যদিও অনেক সময় সিনিয়রার সিগারেট খায় না। কিন্তু এই কর্নেল সাহেব সিগারেট খান, ফলে আমরা দুজনেই সিগারেট ফুকতে শুরু করলাম।
আমি বললাম, স্যার, আপনার অফারটা বেশ লোভনীয়। যে কেউ এটা লুফে নেওয়ায়র কথা। কিন্তু সম্ভবত আমি এই অফারটা নিতে পারবো না। আমি কোনো ডলার চুরীর মধ্যে নাই। আমি ভেবেছিলাম, এটা লোন, ব্যবসা করবো, লাভ করে আমি লোন ফেরত দেবো। কিন্তু এখন যা দেখছি যে, এটা আমার সেই স্বপ্নের পুর্বাভাষ যে, পানিটা পরিষ্কার কিন্তু এটা শোধন করা হয়েছে পায়খানার কোনো জলের ভান্ডার থেকে। আমি এভাবে কোনো ফায়দা চাই না। আপনি অন্য কোনো পার্টনার দেখতে পারেন। কর্নেল খুব মর্মাহত হলেন। বললেন, তিনি যদি এই অফার অন্য যে কোন মুসলিম কান্ট্রিতে যে কোনো ব্যবসায়ীকে অফার করতেন, নিঃসন্দেহে এটা তারা গ্রহন করতেন। আমার মতো তারা এভাবে প্রত্যাখান করতো না। আর যদি প্রত্যাখান করতোও তাহলে কিছুটা সময় নিতো ভাবার জন্য। আমি বললাম, আমি অন্য ১০ জনের মতো নই স্যার। এটা আমার কাছে অপরিষ্কার প্রপোজাল মনে হচ্ছে। এটা আমার কাছে হারাম মনে হচ্ছে। আমি হারাম খেতে চাই না।
আর বেশীক্ষন কথা বলার প্রয়োজন আমি মনে করিনি। প্রায় ৩০ মিনিট পর আমি আর মুরাদ বেরিয়ে গেলাম। আমি মুরাদকে বললাম, মুরাদ, আমি যদি জানতাম, ব্যাপারটা এ রকম, আমি তাহলে ঢাকা থেকেই এখানে আসতাম না। তোমার কি মন খারাপ আমার নেগেটিভ হওয়ায়? মুরাদ ভিতরে ভিতরে কি ভেবেছে জানি না, কিন্তু আমার কাছে এটা স্বীকার করলো যে, সেও এই রকম একটা প্রপোজাল সম্পর্কে জানতো না, আর জনলে মুরাদ আমাকে এখানে আনতো না।
আমাদের ক্যাব বাইরে দাড়িয়েই ছিলো। কথাশেষে আমরা পাশেই একটা হোটেলে একরাত থাকার জন্য একটা রুম বুকড করলাম। খুব শান্তি লাগছে যে, আমি একটা অপরাধ করলাম না। কার না কার টাকা, কার না কার হক, আমি এভাবে কিভাবে করবো? টাকাটাই সবচেয়ে বড় নয়। আমাকে এক সময় এসব টাকা পয়সা ছেড়েই দুনিয়া ত্যাগ করতে হবে। আমি অবৈধ কোনো কাজ করতে চাই না।
অতঃপর, উড়িষ্যায় এক রাত থাকার পর আবারো ফিরে এলাম কলিকাতায় তার পরেরদিন। এবার ঢাকায় ফিরে যাওয়ার পালা।
এখানে কিছু কথা না বললেই নয়। দেশ বিদেশে অনেক রাগব বোয়াল আছে, যারা আসলেই কেউ আছে বলে কোনো অস্তিত্ব নাই, তারা অনেক সময় শধু একটা ছদ্ধনামেই বিচরন করে। আসলে এই মুখুশওয়ালা মুখেশ নামধারী মানুষগুলির আদৌ কোনো চরিত্রই নাই। অথচ এদের দোউরাত্ত আছে, প্রভাব আছে। এরা দেশের ভিতরে এবং বাইরে এমনকি বহির্দেশেও এই মুখেশরা ততপর, এক্সটরশন, স্মাগ্লিং সবই চলে এই মুখেশদের নামে। এই কথাটা রক্ত দিয়ে লিখে দিলেও কিছু যায় আসে না। মুখেশ একটা ধোকা দেওয়ার নাম। মনগড়া একটা চরিত্র। মুখেশ একটা মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই না। মাঝে মাঝে ক্ষেত্র বিশেষে এই মুখেশরা চরিত্র খোজে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমি হচ্ছি সেই খুজে পাওয়া বা বানানো আরেক কোনো মুখুশওয়ালা চরিত্র। যা কাজের শেষে আমার নিজের কোনো অস্তিত্তই রবে না। কিন্তু একটা সময় আসে, যখন জবাব্দিহিতার দরকার হয়। কিভাবে কখন জল মাথার উপর উঠে যায়, কেউ জানে না। হোক সেটা নিজের কাছে, হোক সেতা সমাজের কাছে কিংবা ঈশ্বর। ওই সময় কথা বা সত্য প্রকাশের নিমিত্তে উগলে নেওয়ার সময় হয়ে উঠে। হতে পারে আমি হয়তো একটা বলীর পাঠা। যখন কেউ বলির পাঠা হয়, তখন সে হয়ে উঠে বিষাক্ত খাবার। আর সেই খাবার যতো দামিই হোক, তা ফেলেই দিতে হয়। যদি তা গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে না দেওয়া যায়, তখন তার মুল্য শুধু বিপদের আশংকাই বাড়িয়ে দেয়। সব সময় বাজীতে জিতবেন, এটা কিন্তু ঠিক না। এখানে আরো একটা কথা থেকে যায়, কর্নেল সাহেব একটিভ রাজনীতিতে জড়িত। রাজনীতিতে কোনো কিছুই সারা জীবনের জন্য হয় না। না বন্দধুত্ত না শত্রুতা। যখন প্রয়োজন হয় তখন মিডিয়া আর পলিটিশিয়ান একে অপরের বন্ধু হয়ে যায়।
আমি যতোক্ষন এই কর্নেল সাহেবের মুল প্ল্যান জানতে পারি নাই, ততোক্ষন একটা স্বপ্নের মধ্যে ছিলাম। আমার ধারনা, মুরাদ বা মুসা সাহেব পুরু ব্যাপারটাই জানতেন। কিন্তু তারা আমাকে আগবাড়িয়ে কিছু বলেন নাই। একটা তাসের খেলার মতো কৌশল নিয়েছিলেন। ফলে কিছু তাস প্রকাশ্যে এসেছিলো, আর কিছু তাস তখনো আমার কিংবা তাদের জানা ছিলো না। ফলে এই খেলায় প্রত্যেকেই ভাবছিলো, হয়তো খেলাটার তুড়ুকের তাস তাদের কাছেই আছে। কিন্তু ধীরে ধীরে হলেও একেকটা তাস ভুল প্রমানীত হলো। তারপর হটাত করে সব তাস চারিদিকে প্রকাশ্য হয়ে চোখের সামনে চলে এল। ব্যাপারটা আর সাফল্যের মুখ দেখলো না। তাতে তাৎক্ষনিক কষ্ট পেলেন এই কর্নেল সাহেব। তার মধ্যে অনেক কিছুর অভাব ছিলো। রাজনীতিতে যদি মানবিকতা আর সচ্ছতা থাকতো তাহলে কেহই এই রাজনীতি করতে আসতো না। তিনি কোনো অবস্থাতেই আমার নজরে একজন ভালো, মানবিক এবং সচ্ছলোক ছিলেন না। কোনো কোনো সময় কিছু কিছু নাটক এমনভাবে বানানো হয় যাতে সাধারনের চোখে মনে হবে এটাই সব সত্যি কিন্তু এর পিছনের মুল উদ্দেশ্য অনেক গভীরে। শুধু ভরসার স্থান তৈরির জন্যই নাটক তৈরী করা হয়। আর এখানেও তাই ঘটেছিলো।
যাই হোক, হয়তো ঈশ্বর আমাকে দিয়ে এমন কোনো কাজ করাতে চান নাই, যা তিনি চান না।