পরিবারের সবচেয়ে কর্মঠ মানুষটি যদি কোনো কারনে তার সচলতা কমে যায়, তার শরীর খারাপ হয়ে নিজেই বিছানায় পড়ে যায়, তার নিজের খাবারটুকুও যখন আর বানানোর শক্তি থাকে না, তখন যেটা হয় তা অবর্ননীয়। পরিবারের সবার সুখ নষ্ট হয়, বিরক্ত লাগে, কোনো কিছু যেনো হাতের কাছে পাওয়া যায় না, প্রতিদিনকার রুটিনে একটা বাধাগ্রস্থ হয়। এটা একটা পানির মেইন পাইপের মতো। ফ্লো বাধাগ্রস্ত হতে হতে সবার জীবনের মধ্যে একটা স্থবিরতা, ক্লান্তি নেমে আসে। আমার পরিবারে মিটুলের অসুস্থতা ঠিক তেমন একটা ব্যাপার দাড়িয়েছে। গত ১০/১২ দিন যাবত মিটুল অসুস্থ্য। কিন্তু কি তার রোগ এটাই যেনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। না ডাক্তার না আমি। পর পর তিনটা ইন্সটিটিউসন বদলামাম। প্রথমে ইবনে সিনা, তারপর এপোলো, অতঃপর সিএমএইচ। সবার রিপোর্ট আর ডায়াগনস্টিকে প্রায় একই কনফার্মেশন। এনোরেক্সিয়া, পটাশিয়ামের অভাব, ইলেক্ট্রোলাইট-কে এর অভাব সাথে ম্যাগনেশিয়াম। সবগুলি মেডিসিন এপ্লাই করছি কিন্তু খুব একটা ইম্প্রোভ করছে বলে মনে হয় না। সারাদিন মিটুল শুয়েই থাকে। আমি ওর জন্য অফিসে যেতে পারছি না প্রায় তিনদিন। আমিও চেষ্টা করছি যাতে মিটুল তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় কিন্তু ব্যাপারটা আমার ইচ্ছার গতির সাথে ওর সুস্থতার গতিতে মিলছে না।
আজ সন্ধ্যায় ডাঃ নিখিলের সাথে কথা বললাম। তিনি আমাদের রিভার সাইড সুয়েটার্স এর ডাক্তার। তিনিও আজ ৪ দিন যাবত পিজিতে করোনার কারনে ভর্তি। মিটুলের যখনই কোনো অসুখ হয়, নিখিলদা ওভার ফোনেই সব প্রেসক্রিপশন করে থাকেন, আর তাতেই আল্লাহর রহমতে মিটুল ভালো হয়ে যায়। কিন্তু এবারই প্রথম কেনো জানি কিছুতেই মিটুল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছে না।
একটু আগে প্রভা হেলথ কেয়ার-বনানীতে ফোন করে মিটুলের জন্য করোনার টেষ্ট করানোর জন্য হোম সার্ভিসে ফোন করলাম। ওরা আগামিকাল সকাল ১১টার দিকে বাসা থেকে স্যাম্পল নিয়ে যাবে। আমার ধারনা, মিটুলের করোনার হবার সম্ভাবনা আছে। যদিও খুব একটা সিম্পটম দিচ্ছে না। আজই প্রথম ওর জর হলো ১০১, কোনো সর্দি নাই, বুক ব্যথা নাই, কিন্তু সুষ্ক একটা কাশির ভাব আছে। আজকাল করোনাও চালাক হয়ে গেছে। বিভিন্ন মানুষের শরীরে সে বিভিন্ন রুপে আসে। হতে পারে মিটুলের ক্ষুধামন্দা আর একটু জরই হচ্ছে পিজিটিভ হবার লক্ষন। ঘ্রান পায় যদিও করোনার রোগীর ঘ্রান থাকে না। একটু একটু করে খেতে পারে যদিও কোনো টেষ্ট পায় না সে খাবারের মধ্যে। দেখা যাক, আল্লাহ ভরষা।