Categories
যে ভয়টা পেয়েছিলাম, সেটাই হয়েছে। আজ রাত ১০টায় প্রভা হেলথ সেন্টার যারা গতকাল মিতুলের করোনার টেষ্টের জন্য স্যাম্পল নিয়ে গিয়েছিলো, তারা মেইল করে জানালো যে, মিতুলের করোনা ভাইরাস "পজিটিভ"। মিটুল প্রায় সপ্তাহখানেক যাবত এতোটাই দূর্বল আর অসুস্থ্য হয়ে গিয়েছিলো যে, এটা করোনা ছাড়া আর কোনো কিছুই না। অন্যকোনো কিছুই তার বেঠিক নয় অথচ ওর না আছে শরিরে শক্তি, না খেতে পারছে, না একটু নড়াচরা করতে পারছে। যাইহোক, আশার কথা হচ্ছে যে, মিতুলের "করোনা" আসলে আরো আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিলো। যা আমরা কেনো, কোনো ডাক্তার কিংবা হাসপাতালও বুঝে নাই। বারংবার বলার পরেও তারা মিতুলের "করোনা" টেষ্ট করানোর প্রয়োজন নাই বলেই তাকে অন্যান্য মেডিকেশন প্রেস্ক্রাইব করেছে। এই করোনা প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে আমাদের সিএমএইচ অন্তত মিতুলের করোনা টেষ্টটা করানোর জন্য উপদেশ দিতে পারতো। আমরা শুধুমাত্র "করোনা" টেষ্ট করার ব্যাপারেও কথা বলেছিলাম কিন্তু তারা এটাকে "করোনা"র কোনো সিম্পটম নাই বলে আর উৎসাহ দেন নাই। মিতুলের সিম্পটমগুলি খুব ক্রিটিক্যাল। ওর জর নাই, কাশি নাই, অন্যান্য কোনো বাহ্যিক সিম্পটম নাই, অথচ ওর খাবার খেতে অনিহা, ঘ্রান পায় না। আর মাঝে মাঝে "আম আম" পায়খানা হয়। আজ জানলাম, এটা "করোনার" আরেক ক্রিটিক্যাল চেহাড়া। করোনার রোগীর সব সময় জর হতে হবে সেটাও না, আবার কাশি থাকতে হবে সেটাও না, করোনার অনেক চেহাড়া।
যাই হোক, মিতুল সম্ভবত ইতিমধ্যে করোনার যে শক্তিশালী থাবা, সেটা অতিক্রম করে ফেলেছে। এখন ধীরে ধীরে খাওয়ার চেষ্টা করছে। কোথাও ভর্তি করলাম না। বাসায় ট্রিটমেন্ট হচ্ছে। যেহেতু করোনার কোনো ট্রিটমেন্ট নাই, ফলে আমরা চেষ্টা করছি ওকে সাভাবিক খাবার দিতে, গরম পানি আর লেবুর চা, শরবত, সাথে কফের জন্য সুডুকফ নামের একটি সিরাপ, ম্যাগনেশিয়াম টেবলেট, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং প্যারাসিটামল খাওয়াচ্ছি রুটিন করে। আর তার সাথে স্যুপ, ফল,জুস এবং কিছু শক্ত খাবার বিশেষ করে জাউ,বার্লি, সাগু এবং নরম খিচুড়ি। মিটুল নিজেও চেষ্টা করছে যাতে শরীরে কিছুটা শক্তির সঞ্চার হয় এমন খাবার জোর করেই খেতে।
আমার ছোট মেয়েও কদিন আগে যখন মিটুল অসুস্থ্য হয়ে যায়, তখন কনিকার একটু একটু কাশি ছিলো, জরও ছিলো। ব্যাপারটা খুব আমলে নেই নাই। দুদিন পর দেখলাম, কনিকা আবার সুস্থ্য। ভাবলাম, হয়তো সিজনাল জর বা এসি চালিয়ে ঘুমায় বলে ঠান্ডা লেগেছে। আমার নিজেরও মাঝে একটু খারাপ এগেছিলো, এটাও আমি খুব একটা আমলে নেই নাই। আজ মনে হচ্ছে, করোনা আমাদেরকেও সম্ভবত টাচ করেছিলো, কিন্তু কনিকা বা আমাকে করোনা কাবু করতে পারে নাই।
আমরা এখন সবাই আরো চেষ্টা করছি যাতে অন্তত প্যান্ডেমিক আমাদেরকে আঘাত করতে না পারে। বাকিটা আল্লাহর দয়া।