আমাদের বাসায় কুকুর পালন কেউ পছন্দ করে না। কিন্তু গত কয়েকমাস আগে হটাত করে কোথা থেকে এক লোকাল কুকুর আমাদের বাসার সামনে এসে হাজির। সারাদিন বাসার সামনেই থাকে, পারলে গ্যারেজের মধ্যে নিজে থেকেই যেনো সেলফ ডিক্লেয়ারড পাহারায় থাকছে। তাঁকে নরম্যাল খাবার দিলে ছুয়েও দেখে না। কয়েকদিন চেষ্টা করেছি, ভাত, রুটি, কিংবা এই জাতীয় জিনিষ খেতে দিতে কিন্তু তার এমন একটা ভাব যেনো, ধুর!! কি দিছো এগুলি?
তারপর মাংস দিয়ে লবন দিয়ে মেখে একটা পরিষ্কার পাত্রে সাথে এক বাটি পানি দিলে উনি ধীরে ধীরে খেতে আসেন। তাও আবার পুরুটা তিনি খান না। একটু পেট ভরে গেলেই বাকী খাবারটা তিনি রেখে অন্যখানে গিয়ে পেট টানটান করে শুয়ে পড়েন। অনেক গবেষনা করছি এটা কোথা থেকে এলো, আর উদ্দেশ্যটা কি? আগেই বা কই ছিলো? শুনলাম পাশেই নাকি কোনো এক বাসায় থাকতো, ওখান থেকে তিনি রাগ করে এই যে এসেছে, ওদিকে সে আর ভুলেও যায় না।
এই কুকুরের আচরনে ইদানিং দেখি আমার বউ ওনার জন্যই শুধু মাংশ পাক করে। নাম রেখেছে আবার 'রকি'। রকি বলে ডাক দিলেও আবার ফিরে তাকায়। আমার ডাক্তার মেয়ে আবার ওর জন্য মাঝে মাঝে খাবারও কিনে নিয়ে আসে। আর আমিও বাদ যাই নি। কয়েকদিন নিউ মার্কেটের "৬৫ টাকায় বিরিয়ানীর দোকান" থেকে বিরিয়ানিও কিনে এনেছিলাম। ফলে আমি যখন বাসায় গিয়া হাজির হই, ব্যাপারটা এখন এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে, গাড়ি থেকে নামলেই একেবারে পায়ের কাছে ঘুর ঘুর করে আর যেনো বলতে থাকে- 'আমার বিরিয়ানির প্যাকেট কই?'
তো গতকাল অনেক বৃষ্টি ছিলো। রকি সারাদিন গ্যারেজেই চার পা চার দিকে ছড়াইয়া নাক ডেকে মনে হয় ঘুমাচ্ছিলো। আমি বাসায় যাওয়ার পর, সে কোনো চোখ না খুলেই খালি লেজ নাড়ছিলো। ধমক দিলাম বটে কিন্তু তিনি এক চোখ খুলে দেখলো আমাকে আর লেজটা আরো একটু বেশী করে নাড়াইলো। ভাবখানা এই রকম, আরে বস, ডিস্টার্ব করো না।
গার্ডকে দিয়ে ওনার জন্য মুরগীর তরকারী আর এক প্লেট ভাত এনে খাওয়ানোর পর দেখি হটাত তার এই শারীরিক কসরত।