১৪/০৪/২০২০- চৌরাস্তার বিড়ম্বনা 

Categories

দিন হোক আর রাত হোক, প্রাকৃতিক দূর্যোগ থাকুক আর নাইবা থাকুক, কোনো এক "লক্ষ্য"কে সফল করার জন্য যখন কেউ যাত্রা করে, আর যাত্রার পথে যখন সে কোন এক চৌরাস্তার মধ্যে এসে দাড়ায়, তখন লক্ষ্যের দিকে যেতে সে কোন রাস্তা বেছে নিবে সেটা নির্ভর করে রাস্তাটা সে চিনে কিনা বা তার ধারনা আছে কিনা। যদি জানা থাকে, তাহলে মুল লক্ষ্যে যেতে কোন অসুবিধা নাই, কিন্তু যদি সঠিক নিশানা জানা না থাকে, তাহলে তার ভুল রাস্তা বেছে নেবার কারনে তার মুল লক্ষ্য তো দূরের কথা ভুল রাস্তায় গিয়ে আরো কতই না বিড়ম্বনায় পরতে হয়, সেটা সে ঐ চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে কল্পনাও করতে পারে না। যে যাত্রার উদ্দেশ্য ছিলো মুল লক্ষ্যে পৌঁছানো, তখন আর তার সেই মুল জায়গায় পৌঁছানো হয়ত হয়ে উঠেই না, বরং এর পর থেকেই শুরু হয় প্রতিটি পদক্ষেপ ভুলে ভরা বিড়ম্বনা।  আর সেখানে পৌছতেই যদি না পারা যায়, তাহলে সেই সব যাত্রার কোন মুল্য নাই। তাই চৌরাস্তায় এসে কোনটা নিজের মুল গন্তব্যের রাস্তা তা জানা খুবই প্রয়োজন। নিজের এই চৌরাস্তার সঠিক দিক না জানার কারনে চলার পথে অনেকের কাছেই হয়তো আপনি সঠিক নিশানার দিক জানতে চাইতেই পারেন, কিন্তু সবাই যে আপনাকে সঠিক নিশানা দিতে পারবেন এটাও সঠিক না। হতে পারে কিছু আনাড়ি অপরিপক্ক আর অনভিজ্ঞ জ্ঞানহীন মানুষ সর্বজান্তার মতো মনে মনে আন্দাজ করে আর বুদ্ধিদীপ্ত কালো মুখোশ নিয়ে জ্ঞান গম্ভীর বিবেচনায় আপনাকে একটা ভুল রাস্তার দিকে প্রবেশ করিয়ে দিল। তার তো কোনো ক্ষতি হলো না, কিন্তু তাকে আপনি বিশ্বাস করে আপনি যে ক্ষতির মুখে পতিত হলেন, সেটার মাশুল অনেক বড়। আপনি না জানার কারনে ইচ্ছেমতো আন্দাজ করে যদি ভুল রাস্তায়ও যেতেন আর যতোটা ক্ষতিগ্রস্থ হতেন, এসব বিবেকহীন মানুষের কারনে আপনি একই রকম ক্ষতিগ্রস্থ হবেন সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নাই। তাই, কোন পথটা সঠিক আর কোন পথটা সঠিক নয়, এটা জানা অতীব জরুরী মুল লক্ষে পৌঁছানোর জন্য। এখানে আরো একটা বিষয় মাথায় রাখা দরকার যে, আপনার গন্তব্যস্থানের দিক সঠিকভাবে দেখিয়ে দেয়ার জন্য যে সবসময় বয়স্ক আর বুদ্ধিজিবী মানুষেরই দরকার তা কিন্তু নয়, হতে পারে একটা আনাড়ি বাচ্চাও আপনাকে সঠিক দিকটা দেখিয়ে দিতে পারে যা কোনো বয়স্ক ব্যক্তি যার ঐ রাস্তা গুলির সঠিক গন্তব্য দিক সম্পর্কে কোনো ধারানা নাই। তাই কোনো ক্রান্তিলগ্নে দিক নির্দেশনার জন্য এক তরফা বিবেচনা না নিয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর মতামত নিন, তারপর সিদ্ধান্ত নিন আপনি নিজে। যেহেতু আপনি চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন, এবং আপনি জানেন না কোনটা আপনার রাস্তা, সেহেতু কারো উপর না কারো উপর আপনাকে নির্ভর করতেই হবে। তাই ভালো উপদেষ্টার সংগী হোন। বিপদে টাকার সাহাজ্যের চেয়ে একজন বুদ্ধিদাতার ভুমিকা অনেক বেশী গুরুত্ত পূর্ন।  

কথাগুলি কেনো বললাম, সেটা এবার বলি। করোনা ভাইরাসের কারনে সারা বিশ্ব এবার এক সাথে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধটা এমন যেখানে মানবিকতা দেখাতে চাইলেও অনেকের পক্ষে তা দেখানো সম্ভব না। প্রতিটা ব্যক্তি পর্যায় থেকে আরম্ভ করে রাজ্য পর্যন্ত সবাই যার যার তার তার, এই চিন্তায় মশগুল। শুধুমাত্র সুস্থভাবে বেচে থাকাই যেনো একটা বাহাদুরি। খেয়ে দেয়ে সুস্থ হয়ে বেচে থাকলেই কেবল আপনি আগামীকালের সকালটা উপভোগ করতে পারবেন। তাই এ মুহুর্তে ব্যক্তি পর্যায়ের একক সিদ্ধান্তের চেয়ে রাজ্য পর্যায়ে সামিগ্রিক বুদ্ধিদীপ্ত সঠিক সিদ্ধান্ত অনেক বেশী কার্যকর উত্তোরনের জন্য।

আমরা এখন চৌরাস্তার বিড়ম্বনায় দাঁড়িয়ে। কোন রাস্তায় হাটলে আমি এবং আমার রাজ্য সঠিক গন্তব্যে গিয়ে পৌছতে পারবো এটা এখন সবচেয়ে বেশী দরকার। কেনো জানি মনে হচ্ছে- ঠিক রাস্তায় হাটছি না। একটা ভুল রাস্তায় প্রবেশ করে ফেলছি।