১৪/১০/২০২৩-কেনো আবির-উম্মিকার বিয়েতে রাজী হইলাম

আমি যেদিন জানলাম যে, উম্মিকা একটা ছেলের সাথে এফেয়ার্সে জড়িয়েছে, আমি একেবারেই ব্যাপারটা নেগেটিভলী নেই নাই। কারন উম্মিকার বয়স হয়ে যাচ্ছে (প্রায় ৩০) আর যেখান থেকেই যতো ভালো ছেলে বা পরিবার থেকে উম্মিকার জন্য বিয়ের প্রোপোজাল আসুক না কেনো, উম্মিকা কোনোটাতেই সায় দিচ্ছিলো না। প্রথমবার আমি উম্মিকাকে মুটামুটি জোর করেই রানার সাথে বিয়েটা দিয়েছিলাম, যদিও সেই জোরের মধ্যে উম্মিকারও অনেক ভুল ছিলো। কিন্তু আলটিম্যাটলি যেটা হয়েছে, উম্মিকার তো জীবনে একটা দাগ লেগেই গিয়েছিলো। ভুল যারই হোক, সেটার আচ আমাদের পরিবার, উম্মিকার জীবনেও লেগেছে। তাই এবার আমি নিজ থেকে উম্মিকাকে বিয়ের জন্য কোনো জোর করতে চাইনি। পক্ষান্তরে আমি এটাও চেয়েছিলাম যেনো উম্মিকা ভালো থাকে, যার সাথেই তাঁর বিয়ে হোক। সেটা আমাদের চয়েজেই হোক বা উম্মিকার নিজের। তাতে আমার কোনো অসম্মতি ছিলো না।

উম্মিকা আবিরকে ভালোবাসে, আবিরও উম্মিকাকে ভালোবাসেই বলে উম্মিকা জানিয়েছে। ছেলেটি ডাক্তার। আমার খারাপ লাগার কথা ছিলো না। উম্মিকার জীবনে যেমন একটা স্কার আছে, ছেলেটার জীবনেও তেমনি একই প্রকার একটা স্কার আছে। অর্থাৎ ওদের প্রথম বিবাহ টিকে নাই। স্কার নিয়ে ভাবিনি, এগুলি আমার কাছে খুব বেশী নাড়া দেয়নি। তাই আমি ঘটনাটা জেনে তেমন নেগেটিভলি নেই নাই।

কিন্তু বাধ অথবা খটকা লেগেছে এক জায়গায়। আবিরের কিছু তথ্যে মারাত্মক ভুল ধরা পড়ায়। যেমন, প্রথম যেদিন উম্মিকার আম্মু অর্থাৎ আমার স্ত্রী আবিরকে রাতে ফোন করলো সেদিন। আমি পাশেই ডিনার করছিলাম, আমি শুধু ওদের কথাবার্তা শুনছিলাম, কোনো উত্তর বা প্রতিউত্তর আমি দেই নাই। আমি আসলে একজন ভালো লিসেনার। আগে শুনি, তারপর ভাবি, তারপর উত্তর দেই। আবিরের সাথে উম্মিকার আম্মুর কথোপথোনে যেটা বের হয়ে এসছিলো আর আবিরের দৃষ্টিতে উম্মিকার রিভিউ হলো-

  • উম্মিকা খুব অলস।
  • ওর ডিউটির জ্ঞান কম। আবিরই মাঝে মাঝে ওর বিভিন্ন হসপিটালে ডিউটি শেয়ার করে দিতে সাহাজ্য করে। মাঝে মাঝে যদি আলসেমীর কারনে ডিউটিতে যেতে না চায়, সেটাও আবির কোনো না কোনো ভাবে ম্যানেজ করে নেয় বা দেয়।
  • বড় লোকের মেয়ে বলে টেনশন কম, খায় দায়, ঘুমায় আর মোটা হচ্ছে।
  • উম্মিকা কোনো কিছুই দ্রুত বোল্ড সিদ্ধান্ত নিতে পারে না এবং কনফিউজড। ইত্যাদি ইত্যাদি

আবির মিথ্যা কথা বলে নাই। উম্মিকা প্রায় ওই রকমই। কিন্তু মায়ের কাছে মেয়ের এসব দোষ ত্রুটি বলাতে উম্মিকার মা ব্যাপারটাকে খুব একটা পজিটিভলী নেয় নাই, নেবার কথাও না। অতঃপর উম্মিকার মার পরবর্তী কথোপথোনে বেশ বিপরীত ভাষা লক্ষ্য করলাম। উম্মিকার আম্মু সরাসরি আবিরকে জিজ্ঞেস করলোঃ

  • “তুমি কি উম্মিকাকে ভালোবাসো? উত্তরে আবির পজিটিভলীই বল্লো যে, হ্যা আবির উম্মিকাকে ভালোবাসে।
  • উম্মিকার মা আবিরকে আবার জিজ্ঞেস করলো, তোমার আগের বউ (ওর আগের বউ এর নাম ছিলো ইতি) এর সাথে কবে ডিভোর্স হয়েছে? উত্তরে আবির জানালো যে, প্রায় বছর তিনেক আগে ওদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে।
  • এবার উম্মিকার আম্মু সরাসরি আবিরকে প্রশ্ন রাখলো-তুমি কি উম্মিকাকে বিয়ে করতে চাও? আবির এখানে পুরুই অকৃতকার্য হলো। ভয়েই হোক, পরিস্থিতির কারনেই হোক, আবির উম্মিকার মাকে বল্লো-সে এই ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে নাই। অর্থাৎ উম্মিকাকে আবির ভালোবাসে ঠিকই কিন্তু এটা বিয়ের লগন পর্যন্ত যাবে কিনা সেটা সে জানে না।

ফলাফল-আবিরের সাথে কথা বলার পর পুরু ব্যাপারটা উম্মিকার আম্মুর কাছে প্রায় নেগেটিভ হয়ে গেলো। আবিরকে সরাসরি উম্মিকার আম্মু জানিয়ে দিলো-সে যেনো আর কোনো অবস্থাতেই উম্মিকার সাথে যোগাযোগ না করে। উম্মিকাকেও বলা হলো উম্মিকা যেনো আবিরের সাথে আর কোনো যোগাযোগ না করে। ব্যাপারটা এখানেই উম্মিকার আম্মুর কাছে একটা সম্পর্কের নিহত হবার পরিনতি পেলো।

আমি তখনো ব্যাপারটা নিয়ে নেগেটিভ পর্যায়ে যাইনি। তবে আমিও উম্মিকার আম্মুর কথায় অনেকটা নেগেটিভ না হলেও খুব একটা পজিটিভ রইলাম না। একটু ভাটা পড়লো। কিন্তু পুরুপুরি নেগেটিভ হলাম না। তবে একটা খটকা থেকে গেলো একটা কারনে, আর সেটা হলো, আবিরের বাবার প্রোফেশন, আবিরদের পারিবারিক অবস্থান কিংবা ছেলের সামাজিক অবস্থানটা কোথায় সেটা সরাসরি জানা হলো না।

পরবর্তীতে জানা গেলো যে, আবিরের বাবা মুলত মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত। একটা লোক মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত থাকায় আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে, তাদের পরিবার হচ্ছে জেলে পরিবার, আর তাদের সাথে আমাদের খাপ খায় না।

মিটুল যেহেতু পুরুপুরী নেগেটিভ হয়ে গিয়েছিলো, ফলে, মিটুল আমাকে বল্লো, তুমি আবিরের বাবাকে একবার ফোন দিয়ে তাদের সাথে আমাদের খাপ খাবে না এবং আবির যেনো আর উম্মিকার ব্যাপারে কোনো ইন্টারেস্ট না দেখায় সেটা বলে দাও। আমি মুলত আবিরের বাবাকে কোনো ফোন করতে চাইছিলাম না। কিন্তু মিটুলের অবিরত চাপে একদিন সত্যিই আমি আবিরের বাবাকে ফোন করলাম। ফোনে কি আলাপ হলো সেটা রেকর্ড করা আছে, তাই রেকর্ডটা থেকে লিখছিঃ

আমিঃ হ্যালো, আপনি কি রাকিবের বাবা বলছেন?

আনিছঃ হ্যালো, জী,

আমিঃ আমি মেজর আখতার বলতেছিলাম। ডাক্তার আনিকার আব্বু।

আনিছঃ কোথা থেকে?

আমিঃ ঢাকা থেকে। আমার মেয়ে হচ্ছে ডাক্তার আনিকা তাবাসসুম উম্মিকা। সম্ভবত আপনি নামটা জানেন। রাইট?

আনিছঃ হ্যা, বলেন, বলেন।

আমিঃ আপনি কি করেন এমনি?

আনিছঃ আমি (গলা খেকারী দিয়ে), আমি ব্যবসা করি মাছের। ১-/১২ টা পুকুর আছে, হ্যাচারী আছে। ওগুলা করি আর মাছের যে রেনু আছে সেগুলি উতপন্ন করি। এগুলি সিজনাল ব্যবসা।

আমিঃ আচ্ছা। রাকিব কি আপনাকে আমাদের সম্পর্কে বা আমার সম্পর্কে কিছু বলছে আপ্নাদেরকে?

আনিছঃ বলছে অবশ্য আমাকে। হালকা পাতলা বলছে। বলছে, একদিন আপনার পরিবারের সাথে রাকিবের কথা হইয়েছিলো। এখন ঘটনা হলো কি ...

আমিঃ আমি যেটা প্রশ্ন করি সেটা বলেন। রাকিব আমার বা আমাদের সম্পর্কে কি বলছে?

আনিছঃ আসলে আপনাদের সম্পর্কে রাকিব কিছু বলে নাই, তবে ওই যে আপনার ওয়াইফের সম্পর্কে বল্লো যে, আনিকার মায়ের সাথে কথা হয়েছে আমার। বললাম, কি ধরনের কথা হইছে?

আমিঃ আচ্ছা, আমি আমার সম্পর্কে বলি।

আনিছঃ বলেন।

আমিঃ আমি কুমা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর। আমার একটা প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি আছে, একটা হাউজিং আছে, যদিও প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিটা এই মুহুর্তে সচল না আর হাউজিং টা চলমান, কয়েকটা গার্মেন্টস আছে। আমার মেয়েটা একটা স্টুপিড। মানে আমাএ মেয়েটা বলদ। ও নিজের পজিশন এবং স্ট্যাটাস বুঝে না। ওর জন্ম থেকে গাড়ি ছাড়া পায়ে হাটে নাই। মানুষ আমরা তিনজন, গাড়ি আছে চারটা। আমার কথা হচ্ছে, এগুলি বলে আমি কাউকে আন্ডারমাইন্ড করি না বা করতে চাই না। যার যার সামর্থ অনুযায়ী সে তাঁর তাঁর সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। আমি আপনার ছেলেকেও দোষ দেবো না কারন আমার মেয়েরই দোষ। কেনো তাঁর সাথে এফেয়ার্স করতে গেলো এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক করতে গেলো। কারন সব কিছুরই কিন্তু একটা লেবেল আছে।

আনিছঃ অবশ্যই, অবশ্তই।

আমিঃ হ্যা সব কিছুর। যখন সে এই লেবেল ক্রস করে, তখন সে আর সাধারন মানুষ থাকে না। সে হয় বোকা, না হয় পাগল না হয় এবনরম্যাল। আর কেউ যদি এই সবের জন্য সপ্নও দেখে সেও মুর্খ। আমি অত্যান্ত ধইর্যিশীল মানুষ।

আনিছঃ কথাগুলি আপনি খুব গুরুত্ব পুর্ন বলছে। মানে অনেক দামী কথা বলছেন, তা বলার মতন না কিন্তু আমি তো ...যদি মনে করেন ...

আমিঃ আপনার ছেলেকে বলবেন, সে যেনো সরে যায়। আমি ওর ক্ষতি করতে পারবো কিন্তু আমি ওটা করবো না। আমি ওকে দেখিও নাই, চিনিও না। সেও আমারই সন্তানের মতো। তবে বাংলাদেশে, এই পৃথিবীতে যাদের শক্তি আছে, যাদের ক্ষমতা আছে, টাকা পয়সা আছে, তারা অনেক কিছু করে। কিন্তু বিচার হয় না। তারা অনেক সময়েই ধীর গতির বিচারের ফাক দিয়ে বড় বড় অপরাধ করেও পার পেয়ে যায়। এগুলি খারাপ। এগুলিতে আমি বিশ্বাস করিনা। আমি এগুলি করতে ইচ্ছুক না। কিন্তু যখন কারো গায়ে হাত লেগে যায়, আচড় লেগে যায়, যখন কারো অস্তিত্তের মধ্যে টোকা পরে, যখন সম্মানের উপর কেউ আঘাত করে, ইজ্জতের উপর হামলা করে, তখন তাকে কিকব্যাক করতে হয়। এটা আমি হয়তো করে ফেলবো। রাকিবকে বলবেন, ও যেনো কোনো অবস্থাতেই ভুলে হোক কিংবা আমার মেয়ের প্ররোচনায় হোক সে যেনো আর আমার মেয়ের সাথে যোগাযোগ না করে। আমার মেয়েও যদি যোগাযোগ করে, তাহলে রাকিব যেনো আমার মেয়েকে স্টুপিডভাবে জবাব দেয় যে, তোমার বাপ আমাদের মেলামেশা চায় না। তোমার বাপ না করছে এবং তোমরা আমাদের সমকক্ষ না।  তুমি আমাকে আর বিরক্ত করো না। আমি এখনো বলি, সবার একটা স্ট্যান্ডার্ড আছে, আমরা এই স্ট্যান্ডার্ডের নীচে নামতে পারবো না। আমি যদি এখন...আচ্ছা আপনার নামটা কি ভাইয়া?

আনিছঃ আমার নাম, আনিছুর রহমান।

আমিঃ আনিছুর রহমান ভাই, আপনি একবার চিন্তা করেন তো আমি যদি আপনার বাসার আজকে কিংবা কালকে বেড়াতে আসি, আপনাকে কিন্তু আমি আন্ডার মাইন্ড করছি না, আপনি অনেক কিছু করছেন, অনেক কিছু। একটা মানুষ তাঁর জীবনের সমস্ত চেষ্টা দিয়ে যতটুকু পারে ততটুকুই আগায়। আপ্নিও তাই করেছেন। কিন্তু সেই চেষতার মধ্যে যদি এমন একটা বস্তু মিক্সড করে ফেলেন যেখানে আপনার পক্ষে সামাল দেয়াই সম্ভব না এটা বোকামী। আজকে যদি আমার কিছু বন্ধু বান্ধব নিয়ে আসি, সেই স্ট্যাটাস কি আপনি দিতে পারবেন? আমি আপনাকে আন্ডার মাইন্ড করছি না আনিছ ভাই, কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি এই সপ্নটা এবং ধারনাটা ভুল আপনার ছেলের।

আনিছঃ আসলে আমাদের আগের ছেলের বউ......

আমিঃ আপনাদের ছেলের বউ কি করেছে, কি করা উচিত ছিলো, কি না করলে কি হতো সেগুলি এন্টায়ারলি আপনাদের নিজেদের ব্যাপার। সেগুলি আমার জানার কোনো আগ্রহ নাই। আমি আপনাকে ফোন দিতে চাইনি, এটা সত্যি কথা। আমি আপনাকে চিনি না, প্রয়োজন ও ছিলো না। আমি কেনো আপনাকে ফোন দেবো? কোনো প্রয়োজন নাই তো। আপনার সাথে আমার জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নাই, আপনার সাথে আমার কন ব্যবসা নিয়ে বিরোধ নাই, তাহলে কেনো আপনাকে আমার ফোন দেয়ার দরকার?

প্রতি বছরে আমার পাঁচ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা। সেখানে এই স্টাটাসের মধ্যে কেউ যখন আঘাত করবে, সেই আঘাতের প্রতিঘাত কিন্তু অনেক বেশী কড়া। সহ্য করার মতো কিন্তু হবে না। আমি আপনাকে খুব শ্রদ্ধা করি, আমি দেখিনি আপনাকে, আমার বয়স ৫৮, আমি জানি না আপনার বয়স কত

আনিছঃ আমার বয়স ৫২

আমিঃ এ জন্যই বলি, আপ্নিও এডাল্ট। আপনি বুঝেন। আপ্নিও কারো বাবা

আনিছঃ শোনেন, আপনি যেহেতু কথা গুলি বললেন......সবারই ... সবারই একটা মান...।

আমিঃ না, আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাই না। আমি আপনার স্ট্যাটাস নিয়ে কোনো কোয়েশ্চেন করবো না। আমার স্ট্যাটাস নিয়ে অবশ্যই কোয়েসচেন করবো।

আনিছঃ অবশ্যই, অবশ্যই, আমিও আপনার কথাই বলতেছি...যার যার স্টাটাসে তাঁর তাঁর থাকতে হবে...।।

আমিঃ এক্সাটলী আমিও সেটাই বলার চেষ্টা করছি আপনাকে। এর বাইরে না।

আনিছঃ আমার কথা কি, ছেলেমেয়ে তো ভুলবনা করে। এই ভুলবনা করার পরেই তো বাবা মার কষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। এমন কষ্ট হয় যা মাইনা নেয়া যায় না। আমার ছেলে ভুল করতেছে, আপনার মেয়েও ভুল করতেছে, এমন ভুলবনা তো মাইন্যা নেয়া যায় না।

আমিঃ না, সম্ভব না।

আনিছঃ কারন আমিও তো অনেক কষ্ট করে আমার একটাই ছেলে প্রাইভেট মেডিক্যালে অনেক টাকা দিয়াই পড়াইছি। কষ্ট তো আমারো লাগে। আমারো তো একটা আশা ছিলো। আমার ছেলেটা তো আমারেও কষ্ট দিচ্ছে।

আমিঃ আপনার ছেলের উচিত ছিলো যে, যেই বাবা, যেই মা নিজেরা না খাইয়া, না আনন্দ কইরা ছেলেকে মানুষ করছে, তাদের জন্য কিছু করা। কিন্তু সে সেটা করে নাই। সে তো নিমকহারাম। আমি আমার স্ট্যাটাসের জন্য, সামর্থের জন্য গর্ব ও করি না, অহংকার ও করি না। আমি মানুষের উপকার করার মানসিকতা আছে, পারলে করি, না পারলে তাঁর কোনো ক্ষতি করি না। আপনি আপনার জায়গায় ভালো আছেন, আমি আমার জায়গায় ভালো আছি। আর কিছু না। তাই আমি আপনাকে ষ্পষ্ট ভাবে বলে দিলাম যে, আপনি রাকিবকে বলে দেবেন যে, রাকিব, উম্মিকার আব্বু ফোন দিয়েছিলো এবং বলেছে যে, তাদের পরিবারের সাথে কোনো যোগাযোগ না করতে। আমি রাকিবকে ফোন দেবো না। আমার দরকার ও নাই। এর পরে যোগাযোগ ওর জন্য মংগল বয়ে আনবে না। রাকিব আমার বাচ্চার মতোই। ওর ক্ষতি আমি চাই না। ধন্যবাদ আনিছ ভাই। ভালো থাকবেন।

ব্যাপারটা এখানেই আমি আসলে শেষ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার কাছে সব সময়ই মনে হয়েছে, উম্মিকা ছেলের সাথে যোগাযোগ নিজের থেকেই রাখছে এবং রাখবে। কিন্তু আমার আরেকটা ধারনা ছিলো যে, সম্ভবত এবার ছেলেটাই সরে যাবে। অথবা আমার মতো সাহসী হলে সরাসরি আমার সাথে দেখা করে কথা বলবে।

বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে। এরপর উম্মিকার আম্মু আমাকে জানালো যে, রাকিবের বাবা ওকে ফোন করছে বারবার এবং তাঁর ছেলের বউ এর ব্যাপারে অনেক কথা বলতে চায় বা বলছে। এর মধ্যে জানা গেলো, রাকিবের সাথে রাকিরের স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি আসলে ৩ বছর আগে হয়নি, হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। তো, এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারলাম, উম্মিকার সাথে রাকিব এফেয়ার্সে জড়িয়েছে যখন রাকিবের বউ বর্তমান ছিলো। তাহলে তো বলাই যায় যে, এটা একটা এক্সট্রা ম্যারিটাল এফেয়ার্স। এমনিতেই আমরা রাজী হচ্ছি না, এরমধ্যে আবার এসব গোলমালে ইনফর্মেশন। পরিবারটাকে খুব একটা ভালো মনে হচ্ছিলো না।

আমাদের পরিবার সচ্ছল, ব্যবসা বানিজ্য যা আছে, বিষয় সম্পত্তি যা আছে, এগুলি আসলে তো আমাদের মেয়েরাই পাওয়ার কথা। যেহেতু ছেলে নাই, ফলে মেয়ের মাধ্যমে মেয়েদের জামাইরাই ভোগ করবে। এটা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি কখনোই ছিলো না। কিন্তু আজকালের ছেলেরা নিজেরা কিছু করতে চায় না, তারা আরাম চায়, ভোগ বিলাস চায় কিন্তু সেটা হতে হবে শশুড়ের টাকায়। এই লোভ থেকেই রানা এসেছিলো, রানার পরিবার এসেছিলো। আরেকবার আমি আরেকটা রানা চাই না। আমি চেয়েছি এমন একটা ছেলে যে কিনা আমার মেয়েকে চায়, যে কিনা নিজের চেষতায় বড় হবে, কর্মশীল হবে, দায়িত্ববান হবে। যার উপরে আমিও ভরষা করতে পারি। এ ব্যাপারটা আমি রাকিবের মধ্যেও দেখতে পাচ্ছিলাম না, না ওদের পরিবারের মধ্যে। আমার বারবারই মনে হয়েছে-এখানে একটা লোভের কারন কাজ করছে। আর যদি এটা হয়, সেক্ষেত্রে আমি কখনোই কারো সাথে কোনো সম্পর্ক করবো না। আমার কাছে কেউ কিছু যৌতুক চাইলে বা লোভ করলে আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি এগুলি ঘোর বিরুধী। যদি আমি নিজেই দেখি যে, আমার মেয়ের কিছু প্রয়োজন, সেটা তো আমি নিজেই দেবো, চাইতে হবে কেনো? রাকিবদেরকেও আমার সেরকম মনে হয়েছে।

কিন্তু আমরা যতোই নেগেটিভ হচ্ছি, উম্মিকা ততোই জিদ ধরছে যে, সে আবিরকেই বিয়ে করবে। আমি যখন কোনো উপায় দেখছিলাম না, তখন আমি উম্মিকাকেই বললাম যে, উম্মিকা আবিরকে বিয়ে করুক, তাতে আমার কোনো অসুবিধা নাই কিন্তু সেটা হতে হবে আমাদেরকে ছাড়া। অর্থাৎ আমরা উম্মিকার স্বামী বা তাঁর পরবর্তী বংশধরদের ব্যাপারে কোনো দায়ী তো নাইই, আমি আমার যতো ব্যবসা কিংবা এসেট আছে সব কিছু থেকে আমার জীবদ্দশায় ক্যাশ করে শুধুমাত্র কনিকা আর আমার জন্য ব্যবহার করবো। এটা এক ধরনের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তই নেয়া হচ্ছে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। উম্মিকাকে ঠেকানো যাচ্ছে না যেহেতু, ফলে তাঁর ইচ্ছায় সে যা কিছু করতে চায় করতে পারে। আমি উম্মিকার সাথে প্রায় কথা বলাই বন্ধ করে দিলাম।

উম্মিকা বাসায় খায় দায়, বাসায় থাকে, আমার সাথে ওর কোনো কথাবার্তাই হয় না। উম্মিকা নিজেও বাসায় খুব একটা যে কম্ফোরট্যাবল তা কিন্তু না। মাঝে মাঝে উম্মিকা নিজের থেকেই উপজাজক হয়ে কথা বলতে এলেও আমি হু হা করে উত্তর দেই। ধরা যায়, উম্মিকার সাথে আমার বিস্তর একটা গ্যাপ হয়ে যাচ্ছে।

আমার এতোসব কঠিন ব্যবহারেও উম্মিকা তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসতে নারাজ। উম্মিকা আবিরের (রাকিব) সাথে যোগাযোগ রেখেই চলছে এবং চলমান। উম্মিকা অনেকবার আমার সাথে সহজেই মিশতে চেয়েছে কিন্তু আমার পক্ষ থেকে কোনো প্রকার রিস্পন্স না পাওয়ায় উম্মিকা প্রায় একঘরেই হয়ে যাচ্ছে নিজের বাসায়। উম্মিকার আম্মু অনেকবার উম্মিকাকে বুঝানো চেষ্টা করলে খুব একটা লাভ হচ্ছিলো না। এভাবেই বেশ কয়েক মাস কেটে গেলো। আমি ধরেই নিয়েছি-উম্মিকা আর আমাদের মাঝে নেই। সে হয়তো আবিরকে (রাকিবকে) বিয়ে করবে, আর আমরা ওকে হারাচ্ছি, অর্থাৎ উম্মিকাও আমাদেরকে হারাচ্ছে।

আমি আরেকটা জিনিষ খুব ভালো করে বুঝে গেলাম যে, আমার অবর্তমানে আসলে আমার সম্পত্তি বিশেষ করে জায়গা জমিরাত, কিংবা অন্যান্য ব্যবসা কেউ চালাতে পারবে না। আমার মেয়ের জামাইরা এগুলি খুব অল্প সময়েই হয় বিক্রি করে দেবে, নতুবা ধংশ করবে। ফলে আমি এবার আরেকটা সিদ্ধান্তে অটল হয়ে গেলাম জে, আমার জীবদ্দশায় আমি আমার সব জমি জেরাত বিক্রি করে টাকায় ক্যাশ করে ফেলবো। শুধু রিভার সাইড গার্মেন্টস টা রাখবো। আমি হিসাব করে দেখলাম, আমার বৃদ্ধ বয়সে আসলে আমার দরকার টাকা যেখানে আমি প্রয়োজনে ৫/৬ টা কাজের লোক রেখে জীবনের সব শারীরিক কাজ গুলি সেরে নিতে পারবো। জমি জিরাত রেখে কোনো লাভ নাই। এর ফলে আমি ইতিমধ্যে চান্দের চরের জমিগুলি (যেখানে হাউজিং করার পরিকল্পনা করেছিলাম) বিক্রির খদ্দেরের সাথে পাকা করে ফেললাম। পলাশপুরের জমিগুলিও বিক্রি করা শুরু করলাম। আমি ধরে নিলাম, এই মুহুর্তে আমার শুধুমাত্র রিস্পন্সিবিলিটি হচ্ছে কনিকা আর আমার স্ত্রী। উম্মিকা আমার লিষ্ট থেকে বাদ হয়ে গেলো। আমি রাকিবের সাথে সম্পর্ক রাখার কারনে আমি উম্মিকার উপরে খুবই অসন্তুষ্ট এবং রাগ।

আমার আচরনে এবং ব্যবহারে আমার স্ত্রী মিটুল ও অনেকটা মন খারাপ করে থাকে। বুঝা যায়, সে প্রতিদিনই উম্মিকাকে মুটভেট করার চেষ্টা করে। কিন্তু আমার সাথে কোনো প্রকার তথ্য শেয়ার করে না। এর মধ্যে আবিরের (রাকিবের) বাবা সম্ভবত আবারো মিটুলকে ফোন দিয়েছে যাতে অন্তত মিটুল তাঁর কথাগুলি শোনে। মিটুল কিছুতেই তাদের ব্যাপারে কোনো কথা শুনতে নারাজ, আবার অন্যদিকে উম্মিকাও তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসতে নারাজ।

তো এর মধ্যে রাকিবের বাবা আবার আমাকে ফোন দিলো। কিন্তু আমি প্রথমে ফোনটা ধরতে পারিনি, নামাজে ছিলাম। তাই নামাজ শেষে আমিই তাকে ফোন করলাম। ফোনের বিবরনটাও এখানে লিখিঃ

আমিঃ ভাই, আপনি কি আমাকে ফোন করেছিলেন?

আনিছঃ জী ভাই, আমি আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম। ভাই, সেদিন তো আপনি ফোন দিছিলেন কিন্তু আমি তো কোনো কথাই বলতে পারলাম না। যে কথা বললেন সেদিন, অন্যের কথা শুনে তো আর সব কিছু বিচার করা যায় না। আমার জায়গাতে তো আমি কষ্টেতে আছি, আমার ছেলে নিয়া, আমার ছেলের বউ নিয়া।

আমিঃ আপনার পয়েন্ট টা কি?

আনিছঃ আমার ছেলের বউ কি বল্লো আর কি না বল্লো......

আমিঃ না আমি তো আপনাকে সেদিন খারাপ কিছু বলিনি। আজকে আপনার পয়েন্ট টা কি? কি নিয়ে আপনি আমার সাথে আলাপ করতে চাচ্ছেন?

আনিছঃ না, এই যে আমার ছেলের প্রতি আপ্নারা যে বলতেছেন যে, আমার ছেলের দোষ, আমার...

আমিঃ আমি তো আপনার ছেলের কোনো দোষ দেই নাই। আমি তো বলছি যে, এটা আমার মেয়েরই দোষ। সে ভুল করেছে। এ জন্য আমি আপনাকে বলেছিলাম যে, আপনার ছেলেকে আমার মেয়ের থেকে বিরত থাকতে বলেন। কাহিনী শেষ। আবার কি বলতে চাচ্ছেন এখন আমাকে?

আনিছঃ আমি বলতে চাচ্ছি জে, ওই মেয়েটা যা যা বলছে...

আমিঃ কোন মেয়েটা?

আনিছঃ ওই যে আমার ছেলের বউ।

আমিঃ শোনের আনিস সাহেব, আপনার ছেলের বউ এর সাথে আমার কোনো কথা হয় নাই।

আনিছঃ আপনার সাথে হয় নাই, কিন্তু আপনার ওয়াইফের সাথে কথা হইছে, অনেক কিছু বলছে। তারপর আপনার ওয়াইফ আমাকে ফোন দিয়ে অনেক কথাই বল্লো। অনেক কথাই। বল্লো, আপনার ছেলের বউ থাকতে আপনার ছেলে আমার মেয়ের সাথে আবার সম্পর্ক গড়ছে......এতো বড় সাহস কোথায় পায়?

আমিঃ কি মনে হয় আপনার? আমার বউ কি কোনো কিছু ভুল বলছে? আপনার ছেলের একটা বউ থাকতে সে আবার আমার মেয়ের সাথে পরকীয়া করতেছে, এটা কি ঠিক হইছে?

আনিছঃ তা ঠিক আছে......

আমিঃ মানে? কি ঠিক আছে? কি ঠিক আছে? এটার মানে কি এটা যে, একটা বউ থাকবে, আরেকটা মেয়ের সাথে সে পরকীয়া করবে, এটা ঠিক আছে?

আনিছঃ না না সেটা ঠিক নাই। আমি তো বলতে চাচ্ছি যে, আমার ছেলেও ভুল করছে, আপনার মেয়েও ভুল করছে। আপনার মেয়েও জানে আমার ছেলের বউ বিদ্যমান।

আমিঃ না, উম্মিকা সেটা জানে না। আমাকে উম্মিকা সেটাই বলেছে যেটা সে জানে।

আনিছঃ না, জানে আপনার মেয়ে অবশ্যই জানে।

আমিঃ তাহলে এখন আপনি আমাকে কি বলতে চাচ্ছেন? আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে, এখন আপনার ছেলেকে দিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করাইয়া দেই?

আনিছঃ না, সে রকম না।

আমিঃ তাহলে কেনো ফোন করেছেন আমাকে? বলেন না? কি চান আমার কাছ থেকে? আমি রাগ হচ্ছি এখন। কি চান আমার কাছ থেকে?

আনিছঃ আমি চাচ্ছি, আমার ছেলেকে যে হুমকি ধামকী দিচ্ছে আপনার ওয়াইফ। আমাকে বলে যে, আপনার ছেলে এই করেছে, সেই করেছে ......

আমিঃ শোনেন আনিছ সাহেব, আমি এবং আমার ওয়াইফ শুধু একটা কথা আপনার এবং আপনার ছেলেকে পরিষ্কার করে জানিয়েছি জে, আপনার ছেলে যেনো উম্মিকার সাথে কোনো যোগাযোগ না করে এবং আমার মেয়েও যদি আপনার ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে চায়, সে যেনো আর না করে। তা না হলে...

আনিছঃ আমি আমার ছেলেকে আপনাদের কথাগুলি বলে দিয়েছি।

আমিঃ জী, সেটাই বলবেন। আমি কারো কোনো ক্ষতি করতে চাই না। কিন্তু যখন এটা আমার গায়ে আসবে, ডেফিনিটলী আমি একশান নেবো, কোনো সন্দেহ নাই। আপনার ছেলের এটা একটা অবাস্তব চিন্তাভাবনা।

আনিছঃ আমিও এটাই বলেছি আমার ছেলেকে।

আমিঃ আনিছ ভাই, আমাকে শুধু একটা কথা বলেন, হাউ মাচ ইউ হেভ ব্যাংক ব্যালেন্স? টেল মি? কতটুকু ব্যাংক ব্যালেন্স আছে আপনার?

আনিছঃ কার আমার?

আমিঃ আপনাদের।

আনিছঃ আমাদের আর কত আর ব্যাংক ব্যালেন্স আছে?

আমিঃ শোনেন। নাম্বার টু, একটা ছেলে কিভাবে সব জেনেশুনে আমাদের মতো একটা অসম পরিবারের সাথে একটা সম্পর্কে জড়াইতে চায় যেটা একটা অবাস্তব? কেউ যদি তাকে প্রলোভন ও দেয়, তাঁর খুব কেয়ারফুল হ ওয়া উচিত ছিলো। এটা শুধু এবসার্ড না, এটা ইম্পসিবল পার্ট। কি করে সম্ভব হয়? আপনি কি আপনার বর্তমান স্ট্যাটাস নিয়ে আমার সামনে চেয়ারে বসতে পারবেন? আপনি আমার বাড়িতে এসে আমার সামনে বসতে পারবেন? ঠিক আছে আনিছ ভাই, আমি আপনার সাথে এ ব্যাপারে অনেক কথা বলতে চাই না। ঠিক আছে, আই ডোন্ট মিক্স আপ উইথ পিপল হু ইস নট ইকুয়াল টু মি!! আই এম গুড টু গুড পিপল বুত আই এম অলসো ব্যাড ফর ব্যাড পিপল। জাষ্ট রিমেম্বার ইট। থ্যাংক ইউ।

এরপরে আমি আর তাঁর সাথে কোনো কথা বলি নাই। বলার দরকারও মনে করি নাই। অতঃপর ঠিক পরেরদিন রাকিব (আবির) আমাকে একটা হোয়াটস আপ ম্যাসেজ করে। এই ম্যাসেজটা আমাকে আরো ক্ষিপ্ত এবং রাকিবের ব্যাপারে আরো নেগেটিভ করে তোলে। ম্যাসেজটা ছিলো এ রকমঃ

১১/৬/২০২৩

Sorry apnake WhatsApp e  txt korar jonno. Amar Baba ke call diye onek kotha bolechen. Apni to educated person tahole kono Kichur judge korte hoile dui pokkher kotha sune proper information jene then right or wrong judge korte hoy aita to janen. Apni Jodi kichu bolte chan tahole age proper information gula right place theke niye then judge korben asha kori.  Power status esob er gorom  na dekhiye sob kichur sothik information niye then kotha bolle valo hoy. Ak hate tali baje na. Amake Amar Baba ke na jene bhuje mon gora dosh diye kotha bolben aita kono educated person er porichoy na. Age Amar name akta bad report ber kore then amake wrong judge korben.jodi kono akta single bad report ber Korte paren amar name jekono sasti diben Ami Mene nibo .

আমি বাসায় এসে উম্মিকাকে এবং উম্মিকার মাকেও ব্যাপারটা পড়ে শোনাই। আর বলি- আমার সাথে ওর বাপের কি কথা হইছে সেটা আমাকে সে চার্জ করেছে। আমাকে দেখলো না, কথা হইলো না, কত স্টুপিড যে, সে আমাকে এমন একটা ম্যাসেজ লিখে যেখানে আমার শিক্ষা, আমার পজিশন, আমার স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন করে? এ তো রানার থেকেও খারাপ। রানা তো বিয়ে করার পর কিছুটা হলেও অধিকার পেয়ে আমাদেরকে উলটা পালটা ম্যাসেজ দিয়ে খুবই নোংরা কথা লিখতো। আর এই বেটা তো কোনো সম্পর্কই হয় নাই, তাতেই এখন এই অবস্থা। আর যদি সম্পর্ক হয়, তাহলে কোন লেবেলে যাবে? আমিও উম্মিকাকে আরো কঠিন করে শাসালাম। কিন্তু কোনো লাভ হলো বলে মনে হলো না। আমি বারবার উম্মিকাকে এই ছেলে থেকে সরে আসতে বললাম। কিন্তু উম্মিকার আচরনে এই ছেলে থেকে সরে আসার কোনো লক্ষন দেখা গেলো না।

যাই হোক, রাকিবের ম্যাসেজের উত্তর আসলে আমি দিতে চাইনি। কিন্তু আমার মনে হলো, আমি তো ওর সাহে কোনো কথা বলি নি, অন্তত আমার মাইন্ড টা সে বুঝুক তাই একটা ম্যাসেজ দিলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি ১৬/৬/২০২৩ তারিখে ওকে ম্যাসেজের উত্তর করেছিলামঃ

I wonder receiving such kinds of message again from your side where I clearly and explicitly told you that we are not interested about you even you are having 100% honesty, 100% best quality or even the BEST reputation at your end. I along with my family am not at all interested to know or search any kinds of information about you and your family on what was right and what was not. That belongs to yours and no way affects us anyway. What my daughter did was a childish move.  I wish, you would not dare enough again to communicate me with any kinds of such message in future as we have no connections in any way. Even, I would not expect you to reply me on this message. Hope you respect yourself and that's very important for a person's character. I don't block people as it entails bad gradings.  An advise to you as an elder, be attentive with your carrier, build it on your own, you will be better rest of your life. Thanks. (Major (Retd) Akhtar Hossain, PhD, MSc, MBA, MDS, psc, G+,

উম্মিকা কিছুতেই রাকিবের কাছ থেকে সরে আসছিলো না। তারপর মনে হয় উম্মিকাই রাকিবকে আবার সরি আকারে একটা ম্যাসেজ দিতে বলেছে আমাকে। এটা আমার ধারনা। সেই ম্যাসেজটা ছিলোঃ

Assalamu  Owalaikum Baba.

Kmn achen apni ?Kalke apnar office theke asar por khub druto duty te chole jaoay  apnake r call dite pareni .Kalke night duty theke onek patient er pressure chilo .ajkeo saradin onek pressure giyeche. Tobe nana kajer besto tar majhe onek bar apnar kotha mone hoyeche . Call diye hoyto onek kichuei bolte parbo na tay sms kore bolte iccha korlo . Apnar sathe dekha hoar purbe moner moddhe hajar ta voy r dridha donde last koekdin onek beshi mental stress e chilam . Thik vabe ghum khaoa daoa kono kichuei korte pare ni ato ta beshi stress e chilam. Tobe apnar sathe  kalke jetuku time kotha hoyeche . Apnar proti ta kotha apnar protita motivation family nijer jibon niye notun vabe amake bachte sikhate asha jagiyeche. Amar jibone er sotti porom souvaggo ami apnar moto akjon manusher mentorship e notun vabe nijeke niye beche thakar sopno khuje peyechi . Amar kache mone hoyeche Anika jemon amar jibone thik joto ta blessing hoye eseche ,thik Apnar moto akjon baba jar proper guideline pele sotti Jibone onek dur egiye jaoa somvob. Amar kache mone hoyeche apnar moto akjon baba paoa sotti amar moto akta cheler jonno onek vagger bepar . Allah r kache shudu aituku chay samner din gulote apnader doa niye jeno agami te valo kichu kore dekhate pari. apnader kache nijeke akjon Apnader joggo sontan hisebe proman korte pari . Apnar sathe kotha bolar por amar onek beshi valo legeche . Hoyto apnake samna samni bolar sahos ta hoyni  Tay sms kore apnake janalam Baba.

ম্যাসেজ পড়ে তো আমি আরো হতাশ। সে আমাকে সরাসরি “বাবা” বলে সম্বোধন করে লম্বা একটা আকুতির ম্যাসেজ পাঠালো। আমি আর এই ম্যাসেজের উত্তর দেইনি। কারন, উত্তরে আরো উত্তর, তাঁর উত্তরে আবারো উত্তর। তাই আমিই উত্তর দেয়া বন্ধ করলাম।

উম্মিকা বুঝে গিয়েছিলো, আমি ওর একক সিদ্ধান্তেও রাজী নই। যদি সে বিয়ে করতেই চায় রাকিবকে, সেটা ওর ব্যাপার। তবে আমি উম্মিকাকে এই মর্মে একটা সতর্ক বানী শোনালাম যে, যদি আমার সিদ্ধান্তের বাইরে উম্মিকা রাকিবকে বিয়ে করে তাহলে সে আমার কোনো সম্পত্তি পাবে না, তাঁর ছেলেমেয়ে কিংবা পরবর্তী বংশ ধরেরাও আমার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখতে পারবে না। তবে আমার মেয়ে হিসাবে শুধুমাত্র উম্মিকার আসা যাওয়ার অনুমতি থাকবে, অন্য কারো নয়। আমি এর মধ্যে একটা ড্রাফট ও করে ফেলেছিলামঃ

আমি নিম্নবর্নীত স্থাবর-অস্থাবর জমিজমা, সম্পত্তি এবং অন্যান্য বিষয় সম্পত্তি সত্তবান ও মালিকানা বিদ্যমান দখলদার আছি। আমার দুই মেয়ে এক স্ত্রী বিদ্যমান। আমার এখন শারিরীক অবস্থা খুব ভালো না বিধায় আমি আমার নিম্নবর্নীত বিষয়াদি আমার ছোট মেয়েকে (সানজিদা তাবাসসুম কনিকা) একচ্ছত্র মালিকানা করিয়া এই উইল করিলাম। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ থাকে যে, আমার বড় মেয়ে আনিকা তাবাসসুম উম্মিকা তার নিজের ব্যক্তিগত সার্থের কারনে, তার পছন্দমত একজন বিবাহিত পুরুষের সাথে পরকীয়া করার কারনে, আমাদের কোনো সৎ পরামর্শ না শোনার কারনে এবং উপর্যপরী তার একক সিদ্ধান্তে অটল থাকার কারনে আমি এইমর্মে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমার সমস্ত স্থাবর অস্থাবর বিষয়-সম্পত্তি তার কিংবা তার পছন্দ করা পুরুষের কিংবা তার পরবর্তী বংশধর, আওলাদ (উভয় ছেলে এবং মেয়ে আওলাদ) এর হাতে নিরাপদ নয়। আমার বড় মেয়ে এমন কিছু খারাপ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করে, এবং প্রায়ই সেই বন্ধুত্ব পরকীয়ায় রুপ নেয় যা আমাদের পরিবারের সাথে খাপ খায় না। তার মধ্যে পরিবারের ইজ্জত, মান সম্মান, কিংবা ঐতিহ্যের প্রতি কোনো প্রকার সম্মান নাই। ফলে দেখা যায় যে, আমার বড় মেয়ের এহেনো নীচ কাজের জন্য অনেক আজেবাজে লোভী পুরুষেরা তার সাথে সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে আমাদের এই সাজানো সংসার, আমাদের কষ্টার্জিত সম্পদের উপর লুলোপ দৃষ্টি দিয়ে আমার বড় মেয়েকে যে কোনোভাবে পটিয়ে তারা তাদের সার্থ হাসিল করতে চায়। অনেকবার আমার বড় মেয়েকে এ ব্যাপারে সাবধান করার পরেও সে বারবার একইরুপ ব্যবহার, আচরন প্রদর্শন করছে। সে নিজে একজন ডাক্তার কিন্তু তার মধ্যে এখনো পরিবার, পরিবারের মান সম্মান কিংবা আমাদের মান সম্মানের প্রতি কোনোরুপ তোয়াক্কা করেনা। আমার এই সম্পত্তি অনেক কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত বিধায় শুধুমাত্র আমার বড় মেয়ের খামখেয়ালীপনা, পরকীয়া এবং খারাপ মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করিয়া আমার ওয়ারিশ হওয়ার কারনে সে কিংবা তার পরকীয়া পুরুষ কিংবা তাদের ঔরসজাত সন্তানেরা, বংশধরেরা কিংবা তার ভবিষ্যৎ আওলাদ্গন আমার কোনো সম্পত্তির মালিক হইতে পারিবে না। আমি আমার এই উইলের মাধ্যমে এইমর্মে বিধান দিতেছি যে,

(ক)      আমি সজ্ঞানে, নিজের ইচ্ছায় এবং অন্যের কোনো প্রোরোচনা ব্যতিত আমি আমার বড় মেয়ে, তার স্বামী, তার বংশধর, তার আওলাদ (ছেলে কিংবা মেয়ে উভয়) এবং তার পরবর্তী যে কোনো বংশধর আমার সরবপ্রকার বিষয়াদি, স্থাবর-অস্থাবর, ব্যবসায়িক, ক্যাশ, জমিজমা, বাড়িঘর, কিংবা যে কোনো সামাজিক পজিশন থেকে বাতিল বলিয়া বিধান করিতেছি। অর্থাৎ আমার বড় মেয়ে আমার কোনো কিছুই প্রাপ্য হইবে না।

(খ)       আমার সাথে আমার বড় মেয়ের পিতৃত্ব, ওয়ারিশান কিংবা দেশের বা ধর্মের প্রচলিত যে কোনো আইনের ধারার বিনিময়ে সুযোগ নিয়ে আমার নিম্নবর্নীত জমি জমা, ঘর বাড়ি, বিষয়াদি, ব্যবসা বানিজ্যের কিংবা আমার পেনশনের অথবা যে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কোনো প্রকার ভাগ বা অংশীদার হবার কোনো সুযোগ নাই এবং রাখিলাম না। 

(গ)       এখানে আরো উল্লেখ থাকে যে, আমার ছোট মেয়ে আমার সমস্ত জমিজমা, ঘরবাড়ী, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রাপ্য সম্পদের একচ্ছত্র মালিকানা হইবে।

(ঘ)       কোনো কারনে যদি আমার ছোট মেয়ে তার বড় বোনের উপর সদয় হইয়া আমার অনুপস্থিতিতে আমার বিষয়াদি, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, কিংবা ব্যবসায়িক অংশ থেকে কোনো কিছু প্রদান করিতে চায়, সেটা আমার ছোট মেয়ে করতে পারবে না বলে আমি বিধান করিতেছি। এমনকি, আমার ছোট মেয়ে আমার কোনো সম্পত্তি কিংবা বাড়িঘর যে কোনো বিষয়াদি বিক্রি করিয়া সেই অর্থ তাহার (ছোট মেয়ের নামে) গচ্ছিত রাখিয়া উক্ত টাকা হইতে কোনো প্রকার অর্থ আমার ছোট মেয়ে আমার বড় মেয়েকে প্রদান করিতে পারিবে না। অর্থাৎ আমার যে কোনো সম্পত্তি হইতে পরোক্ষা বা প্রত্যক্ষভাবে আমার বড় মেয়ে কোনো কিছুই পাইবে না বলিয়া আমি বিধান করিতেছি। কোনো কারনে যদি আমার ছোট মেয়ে দয়া পরবশ হইয়া আমার সম্পত্তি, বাড়িঘর, জমি জমা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমার বড় মেয়েকে হস্তান্তর, দান, কিংবা সাহাজ্য করতে চায়, তাহলে আইনগতভাবে আমার ছোট মেয়েকে দোষী সাব্যস্থ্য করিয়া আমার এই বিধানের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে তাকেও শাস্তি প্রদান করিতে আমি ফার্স্ট ক্লাস মেজিষ্ট্রেট, এবং প্রশাশনকে ক্ষমতা প্রদান করিলাম।

(ঙ)      এই দলিলে উল্লেখা করা আমার জমাজমি, বাড়িঘর এবং স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি আমার ছোট মেয়ে, তার বংশধর, এবং পরবর্তী আওলাদেরা (উভয় ছেলে এবং মেয়ে) আজীবন ভোগ, বিক্রি কিংবা হেবা (আমার বড় মেয়েকে ব্যতিত), কট, মর্টগেজ করতে পারবে। তবে এখানে উল্লেখ থাকে যে, যে কোনো বিক্রি অবশ্যই ফার্স্ট ক্লাস মেজিষ্ট্রেটের অধীনে করতে হবে এবং কোন কারনে উক্ত জমিজমা, স্থাবর অস্থাবর বিক্রি কিংবা কট, মর্টগেজ করা হলো তার প্রকৃততথ্য এবং হিসাব দেয়ার পরেই শুধুমাত্র তা আমার ছোট মেয়ে, তার বংশধরেরা, আওলাদেরা তা করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই কোনো অংশ বা টাকা বা হেবা, দান কিংবা এই জাতীয় কোনো কর্ম আমার বড় মেয়ের জন্য বরাদ্ধ হইবে না এইমর্মে প্রশাসনকে হিসাব দিয়ে তারপর করতে পারবে বলে আমি বিধান করছি।

(চ)       এখানে উল্লেখ থাকে যে, আমি নিম্নবর্নীত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আমার জীবদ্দশায় যতটুকু সম্ভব বিক্রি করে অর্জিত টাকা আমি ক্যাশ ওয়াকফ করে যাওয়ার নিয়ত করিয়াছি। কোনো কারনে যদি আমার এই সপ্ন সফল হইবার আগেই আমার মৃত্যু হয়, সে কারনে আমার এই উইল করা। এখানে আরো উল্লেখ থাকে যে, আমার জীবদ্দশায় যতটুকু আমি বিক্রি করে শেষ করতে পারি, সেই টুকু আমার উইল থেকে বাদ যাবে এবং বাকী সম্পত্তিতে আমার পূর্বের সব শর্তাবলী নিবন্ধিত থাকবে।

(ছ)       এখানে আরো উল্লেখ থাকে যে, আমার বড় মেয়ে যদি তার ভুল বুঝে তা সংশোধন করে তার এসব খারাপ রুচীসম্মত কর্ম কান্ড থেকে বিরত থাকিয়া পুনরায় আমাদের পরিবারের মান সম্মান বজায় থাকে এমন কাজের বহির্প্রকাশ এবং তার চর্চা আমাকে দেখাইতে পারে, তাহলে আমি আমার জিবদ্ধশায় হয়তো পুনরায় এই উইল পরিবর্তন করতে পারি। কিন্তু আমার বড় মেয়ের এসব চারিত্রিক বৈশিষ্টের কোনো কিছুই পরিবর্তন না হয় এবং আমি তার উপর সন্তুষ্ট না হইয়া মৃত্যু বরন করি, তাহলে আমার এই উইলে যা যা শর্ত আমার বড় মেয়ে, তার ঔরসজাত সন্তান সন্তানাদি, আওলাদ (ছেলে বা মেয়ে) এর উপরে বয়ান করা হয়েছে, তা বলবত থাকবে।

এমন একটা পরিস্থিতিতে উম্মিকা আর রাকিব নিজেরাই এগিয়ে যাচ্ছিলো নিজেরা নিজেরা বিয়ে করে সংসার করার জন্য।

একদিন রাতে উম্মিকার মা, আমাকে খুব শান্ত গলায় কিছু কথা বলার চেষ্টা করলো। তাঁর কথার সারমর্ম এরুপ যে,

উম্মিকা আর রাকিব ডেল্টা মেডিক্যালের পাশেই বাসা ভাড়া নেয়ার চেষ্টা করছে। কিছু ফার্নিচার কিনেছে, আরো কিছু কিনবে। ওরা এই বছরের শেষের দিকে সম্ভবত নিজেরা নিজেরাই বিয়ে করবে। তাই বলছিলাম কি যে, একটা কাজ করো না, মেয়ে তো আমাদেরই, শেষ অবধি যদি ওরা বিয়েই করে ফেলে, তাহলে তো আমাদের কিছু করার থাকবে না। রাগারাগি হবে, মেয়ে বাসায় আসবে না্‌ আমরাও ওদেরকে মিস করবো। কেমন হয়ে যাচ্ছে ব্যাপারটা। তুমি একটু ভেবে দেখো না, হতেও তো পারে যে, ওরা আসলেই খারাপ না, ছেলেটা আসলেই লোভী না, বা আমরা যেমন ভাবছি হয়তো ওরা তেমন না।

কিছু বললাম না। কিন্তু কয়েকদিন সময় নিয়ে নিজে নিজেই ভাবলাম। কি করা যায়। আসলেই তো, উম্মিকা আর রাকিব যদি শেষ পর্যন্ত একা একাই বিয়ে করে, তাহলে আমাদের কি করার আছে? মেয়ে বড় হয়েছে, সিদ্ধান্ত নেবার যোগ্যতা হয়েছে। ভালো হোক আর খারাপ, শেষ পর্যন্ত যদি ওরা একা একাই বিয়ে করে, তাহলে আমাদের তো আসলেই কিছু করা যাবে না।

অতঃপর আমি উম্মিকার মাকে বললাম, উম্মিকাকে বলো, আমি রাকিবের বাবা মায়ের সাথে আমার অফিসে কথা বল্বো। সাথে আরো একটা সিডিউল দিয়ে দিলাম যে, ২৭ সেপ্টেম্বর আমি রাকিবের বাবা মায়ের সাথে একা অফিসে কথা বল্বো, ২৮ সেপ্টেম্বর উম্মিকা আর রাকিবের সাথে আমার অফিসে আমি একা কথা বল্বো, আর ২৯ সেপ্টেম্বর আমি মিটুল, উম্মিকা, রাকিব আর রাকিবের বাবা মাকে নিয়ে অফিসে কথা বল্বো। আমি এটাও বললাম যে, আমি রাকিবের মেডিক্যাল কলেজে ওর প্রাক্তন বন্ধুদের সাথে, ইতির পরিবারের সাথে, রাকিবের বর্তমান কর্মস্থলের কিছু বন্ধুদের সাথে কথা বল্বো।

এটা অবশ্যই একটা ব্রেকিং নিউজ সবার জন্য যে, আমি কথা বলতে রাজী হয়েছি। রাকিবের বাবা মা কিছুটা খুশী হলেও তারা খুব টেনশনে পড়ে গেলেন একটা অজানা ভয়ে, আমারকে ফেস করার ভয়ে। রাকিবও। কিন্তু রাকিবের বাবা মা বা রাকিব এটা ধরে নিলো যে, অন্তত তাদের কথাগুলি তো আমাকে ফেস টু ফেস বলতে পারবে। আমি সে মোতাবেক একটা হোমওয়ার্ক করি। কিছু পয়েন্ট নোট করি কি নিয়ে কোন পক্ষের সাথে আমি আলাপ করবো। পয়েন্টগুলি ছিলো এমনঃ

রাকিবের বাবা মা এর সাথে মিটিং  (২৭/০৯/২০২৩)

(১)        রাকিবের আগের বিয়ের ইতিহাস শোনা। কিভাবে বিয়েটা হয়েছিলো?

(ক)       কার কার সাথে রাকিব আর ইতিকে নিয়ে দেন দরবার করা হয়েছিলো?

(খ)        ইতির সাথে বিয়েটা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো কিনা?

(গ)       ইতির বাবার ঠিকানা কি? ইতি কোথায় কাজ করে বা করতো?

(২)        উম্মিকার বিয়ের ঘটনা বলা

(ক)       কমিটমেন্ট উম্মিকাই করেছিলো, আমাকে কমিটমেন্ট করাইতে বাধ্য করেছিলো। আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে আসা আমার চরিত্র নয়।

(৩)       উম্মিকার আগের শশুড়বাড়ির চেহাড়া এবং বিয়ের পরের চেহাড়ার একটা তুলনামুলক চিত্র দেয়া

(ক)       উম্মিকাকে ছোটখাটো গিফট করা, খাবার পাঠিয়ে দেয়া, মাঝে মাঝে ফোন করে তাকে ওদের কাছে টেনে নেয়া। এ সবই ছিলো বড় লোভের একটা ছোট অংশ।

(খ)        বিয়ের পরে এগুলির কোনো কিছুই আমি দেখিনি। 

(গ)       আমাদের বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাকা কিংবা ওদের বাসার সামনেই আমাদের কর্তৃক একটা ফ্ল্যাট ভাড়া করে ওদের রাখা। এটা আমি মানতে পারিনি।

(৪)        রানার চরিত্র নিয়ে কথা বলাঃ 

(ক)       ভয়ানক লোভী ছিলোঃ শেয়ার চাওয়া, একাউন্ট হ্যান্ডিলিং এ সুযোগ দেয়া, গাড়ী চাওয়া, তাঁর টিউশন ফি চাও, বিজ্ঞাপনে টাকা চাওয়া, এসি, ল্যাপটপ, মোবাইল, ড্রেস, জুতা কিংবা ঘড়ি, ওদের বাড়িঘর রিনোভেশনে আমার খরচ দেয়া।

(খ)        উম্মিকার প্রতি দায়িত্বহীনতা, উদাসীনতা, কখনোই বগুড়ার না যাওয়া, বা ঢাকায় এলেও উম্মিকার সাথে যোগাযোগ না করা।

(গ)       কনিকার প্রতি হিংসা করা

(ঘ)        ফ্যাক্টরিতে সময় মতো না আসা। আসতে বললেই তাঁর মেজাজ চড়ে যাওয়া কিন্তু বেতনের বেলায় শতভাগ চেয়ে নেয়া।

(চ)        ওর মার কথামতো চলা এবং মা সব সময় ছেলেকে কুবুদ্ধি দিতো।

(ছ)        আমের ঘটনা।

(জ)       ষ্টাফদের সাথেই এমনভাবে মেলামেশা করা যে, ষ্টাফরাই চুরি করে আর সে সেটা সায় দেয়।

(ঝ)       উম্মিকাকে আমি যে টাকা দিতাম, সেটা দিয়েও রানা অনেক সময় ওর দাবীগুলি মেটাতো।

(ট)        কংকাল বিক্রি এবং টিভি কেনা।

(ঠ)        রানার ব্যবহার ছিলো পাশবিক। মেজাজ, আচরন কিংবা ভদ্রতা অস্বাভাবিক ছিলো। একেবারেই ম্যাচিউরড ছিলো না।

(৫)       আমার নিজের ভূমিকাঃ

(ক)       আমি নিজে ওদের ব্যাপারে কোনো খোজ খবর নেইনি। আমি নিজেও বুঝতে পারিনি যে, তারা আমাকে এই খোজখবর নেয়া থেকে খুব টেকনিক্যালি বিরত রেখেছিলোঃ যেমন, তারা কাউকে জানাতেই দিতে ইচ্ছুক ছিলো না যে, রানা বিয়ে করেছে।

তারা আমাকে ওদের অন্যান্য আত্মীয়সজনের সাথে দেখা করার জন্য কোনো প্রকার সাহাজ্যই করেনি। এক তরফা আমাকে ব্রেইনওয়াস করেছিলো।            

(খ)        আমি চেয়েছিলাম, একটা পরিবার। সেটা গরীব হোক আর অসচ্ছল তাতে আমার কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু আমি লোভী পরিবার চাইনি। তারা লোভী ছিলো। তারা চেয়েছিলো শুধু আমাকে আর আমার স্ত্রীকে। আমার সম্পদ, আমার স্ট্যাটাস, আমার ক্ষমতা ইত্যাদির ব্যবহার। কিন্তু ওরা না চেয়েছিলো আমার মেয়েকে, না ছোট মেয়েকে, না দায়িত্ব নিতে।

(গ)       জাহিদের পোষ্টিং (করাপশনের কারনে, ট্রাষ্ট ব্যংকের ঘটনা, জেনারেল মতির সাহাজ্য)

(ঘ)        ওদের জমি জমা নিয়ে বিরোধ মিটানো, অন্যান্য সহযোগীতা করা ইত্যাদি করেছি।

(৫)       বিয়ের পরে আমার মেয়েকে নিয়ে তাদের পরিকল্পনা কি?

(ক)       কোথায় থাকবে, কিভাবে থাকবে?

(খ)        আমাকে কি করতে হবে? কি চাওয়া আমার কাছে?        

(৬)       আমার চাওয়াঃ

(ক)       নিরাপদ সংসার

(খ)        নিরাপদ প্রোফেশন।

(গ)       কাবিনের মাধ্যমে একটা বাইন্ডিংস।

(ঘ)        যদিও সঠিক না, তবুও একটা চুক্তি।

২৭ সেপ্টেম্বর আমি আমার গাড়ি (জীপ) ওর বাবা মার জন্য রেখে এলাম, আমি আমার নুয়া গাড়ি নিয়ে অফিসে এলাম। এর একটা প্রধান কারন হলো- ওরা আমার নিমন্ত্রনে আমার অফিসে আসতেছে। আমার উচিত তাদেরকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা।

২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে যেদিন রাকিবের বাবা মা আমার অফিসে আসলেন, সেদিন আমার পরিকল্পনা ছিলো যেনো আমি কোনো অবস্থাতেই তাদেরকে অসম্মান না করি, রাগারাগি না করি। তারা আমার গেষ্ট। আমি বিয়েতে রাজী কিনা বা অরাজী সেটা পরের ব্যাপার, কিন্তু কাউকে ডেকে এনে তাও আমার অফিসে, তাকে অসম্মান করার অভ্যাস আমার কখনো ছিলো না, এখনো নাই। কিন্তু যেদিন রাকিবের বাবা মা আমার অফিসে ঢোকেন, তারা এতোটাই ভয়ে জড়োসড়ো ছিলেন যে, এটা আমার জন্যই খারাপ লাগছিলো। আমি খুব হাসিমুখে তাদেরকে আমার অফিসে বসালাম। বারবার গ্রাম এবং রাকিবের কাছ থেকে ওর বাবার মোবাইলে ফোন আসতেছিলো। সবাই একটা আতংকের মধ্যেই ছিলো।  কিন্তু আমার অফিসে বসার ২ মিনিটের মধ্যে তারা এতোই শান্ত হয়ে গেলেন যে, যা ভেবেছেন আমাকে নিয়ে আমি সেটা না। রাকিবের মা ই প্রথম কথা বল্লো

ভাই, আমি গত চারদিন যাবত একেবারেই ঘুমাতে পারিনি কোনো একটা অজানা ভয়ে, চাপে। কখনো ঢাকায় আসিনি, গ্রামের মানুষ আমরা, আপনি ডেকেছেন, তাও আবার আপনার অফিসে, আমরা সবাই খুব ভয়ে ছিলাম। গ্রামে আর ফিরতে পারি কিনা সেটাও একটা ভয় ছিলো। কিন্তু এখন তো দেখছি- আপনি খারাপ মানুষ না। ভয়ংকর না। আমি তাদেরকে আরো সহজ করার জন্য খুব হাসি তামাশা করলাম। জুস খেলেন, চা খেলেন। ফলটল দেয়া ছিলো সবই খেলেন। অতঃপর আমি বলা শুরু করলাম আমার এজেন্ডা মোতাবেক আলোচনা।

আমি প্রথমে তাদের কথাগুলি শোনার চেষ্টা করলাম। তাদের ছেলের বউ এর সাথে কিভাবে বিয়ে হয়েছিলো, কেনো বিয়েটা ভেংগে গেলো, বিয়েটা রাখা যেত কিনা, সব। এখানে একটা নতুন বিষয় জানলাম যে, রাকিবের মা দুইজন। এটা নিয়েও কিছু হাসি তামাশা হলো। কিন্তু ব্যাপারটা আমি নেগেটিভলী নেই নাই। গ্রামে বড় ভাই বিয়ের অল্প সময়ের পর মারা গেলে অনেক সময় শশুড় বাড়ির লোকেরা মানবিক কারনেই তাঁর ছোট ছেলেকে দিয়ে বিধবা বড় ভাইয়ের বউকে আবার বিয়ে করিয়ে সেই বাড়িতেই রাখে। কিন্তু এখানে রাকিবের বাবার বউ থাকা সত্তেও রাকিবের দাদা রাকিবের বাবাকে তাঁর বড় ভাইয়ের বউকে বিয়ে করেছে। এটা হতেই পারে। রাকিবের মা নিতান্তই একজন সহজ সরল গ্রামের গৃহিণী, কোনো নালিশ নাই, কোনো অভিযোগ নাই। ভালোই আছে। শুধু মা হিসাবে ছেলের প্রতি সারাক্ষনই একটা টেনশন নিয়ে ঘুমায়। সব আলোচনা মিলে আমার কাছে ওদের খারাপ লাগেনি। আর খারাপ লাগলেও যেহেতু উম্মিকা রাকিবের সাথে ঘর সংসার করবেই, ফলে আমি এক প্রকার মেনেই নিয়েছিলাম ব্যাপারটা।

পরেরদিন আমি রাকিব আর উম্মিকাকে আমার অফিসে ডাকলাম। বাবার সামনে মেয়ের ইন্টারভিউ অনেক কঠিন। উম্মিকা নিজেও জানে তাঁর বাবা কতটা স্ট্রিট ফরোয়ার্ড এবং কঠিন। উম্মিকার সাথে রাকিব ও জানে এর মধ্যে যে, আমি একটু কঠিন মানুষ। দুজনেই ভয়ে ছিলো।

রাকিব এবং উম্মিকা সাথে আলোচনা করার আগে, আমি সেই একই টেকনিক রাকিবের বেলায় ব্যবহার করেছিলাম। যতোই হোক, কম বয়সী ছেলে। অন্তত আমাদের মতো মানুষদেরকে ফেস করা সহজ না। কিন্তু আমি রাকিবকে সহজ করে নিলাম। ওর ভয় বা টেনশন ভাংগার জন্য জা করতে হয় করলাম। রাকিব প্রায় আধা ঘন্টার পরে অনেকটা স্বাভাবিক হলো বলে মনে হলো।

এবার আমি ওদের সাথে প্রোফেশনাল ভাবে আলাপ করা শুরু করলাম। রাকিবকেই কথা বলতে দিলাম। আমি জানতে চেয়েছিলাম কিভাবে রাকিবের সাথে ইতির পরিচয়, প্রেম, বিয়ে এবং বিয়ে পরবর্তী সমস্যা। প্রায় একই রকমের তথ্য পেলাম জা গতকাল রাকিবের বাবা মা আমাকে বলেছিলো। খুব একটা হেরফের হয়নি।

অতঃপর আমি রাকিবকে বললাম, কখনো যদি কারো গায়ে দাগ লাগে সেটা যেমন কোনো মেডিক্যাল সার্জারী দিয়ে মুছা যায় না, তেমনি যখন কেউ সামাজিকভাবে অসম্মানীত হয়, এই লজ্জাও কোনো কাপড় দিয়ে ঢাকা যায় না। আমাদের দুই পরিবারেই এই দাগ এবং লজ্জার ঘটনা ঘটেছে। তাহলে আমি কি গ্যারান্টি পাবো যে, এই একই দাগ এবং লজ্জা আবারো দ্বিতীয়বার ঘটবে না? আমি শুধু সেই গ্যারান্টি চাই। আর এই গ্যারান্টি দিতে পারবা শুধু তোমরা দুইজন। দুইজনেই জানালো যে, তারা তো এই মুহুর্তে সে রকম গ্যারান্টি দেয়ার স্কোপ নাই কিন্তু আগামীতে তারা এটা প্রমান করবে যে, ওরা আমাদেরকে আর দাগ এবং লজ্জায় ফেলবে না।

আমি বললাম, আমি ওদের এই কথা আপাতত বিশ্বাস করলেও আগামী পাঁচ বছর অব্জার্ভ করবো। যদি আগামী ৫ বছরে কোনো সমস্যা না পাই, ধরে নেবো, ওরা ওদের কথা রেখেছে। আর এর জন্য যদি আমার কোনো সাহাজ্য লাগে, আমি দিতে তৈরী। কিন্তু লোভী মানুষদেরকে আমি ঘেন্না করি।

আমি রানার ব্যাপারে সব কিছু খোলা মেলা আলাপ করলাম, রাকিবকে উম্মিকা শুধু ওর সাথে ঘটা ঘটনার কিছু অংশ হয়তো বলেছে কিন্তু আমি রাকিবকে আদোপান্ত বলার পর রাকিব নিজেও বুঝেছে, আমাদের কি ভূমিকা ছিলো আর রানাদের কি অপরাধ ছিলো।

রাকিব তাঁর ১ম ম্যাসেজ নিয়ে অনেকবার দুঃখ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। আমি আসলে ওগুলি আর মনে রাখিনি।

পরবর্তী ২৯ সেপ্টেম্বরে আমরা আবার ৬ জন একত্রে বসেছিলাম। এখানে আমরা ৪ জন ছিলাম যেনো একটা গ্রুপ আর রাকিব উম্মিকা ছিলো আরেকটা গ্রুপ। অনেক বাধ্য বাদকতা ছিলো আমাদের কিছু শর্তের মধ্যে। যেমনঃ

আমি রাকিবকে এবং উম্মিকাকে বললাম, যেহেতু দুজনেই ক্লিনিক্যাল সাইডে উন্নতি করতে চায় এবং ধরে রাখতে চায়, তাতে উম্মিকার সাথে রাকিবের একটা দন্ধ তৈরী হবে। একটা মেয়েকে প্রোফেশনের বাইরে তাঁর সংসার, বাচ্চা কাচ্চা, স্বামী সব কিছু মেইন্টেইন করতে হয়। সেক্ষেত্রে উম্মিকার জন্য ক্লিনিক্যাল সাইডে থাকা বোকামী। অন্যদিকে রাকিব যদি ক্লিনিক্যাল সাইডেই থাকতে চায়, তাহলে উম্মিকাই বলবে, উম্মিকা দোষ করলো কি? এমন এক পরিস্থিতিতে প্রোফেশনাল ক্লেশ হওয়া কোনো ব্যাপার না। আবারো অশান্তি।

রাকিবই এর সমাধান দিলো যে, ক্লিনিক্যাল সাইডে থাকলে ভালো কিন্তু নাম করতে অনেক কাঠ খড় পোহাতে হয়। সময় অনেক বেশী লাগে। তাঁর থেকে যদি টাকা পয়সা কামাই আর পরিশ্রমের অনুপাত ধরা যায় দেখা যাবে ক্লিনিক্যালের থেকে অন্যান্য মেডিক্যালের সাইডে যাওয়া খারাপ না। ফলে, রাকিব এবং উম্মিকা দুজনেই নীতিগতভাবে আমাদেরকে জানালো, তারা ক্লিনিক্যাল সাইডে থাকবে না। তারা মেডিক্যালেরই অন্যান্য সেক্টরে তাদের ক্যারিয়ার পার্সু করবে। প্রয়োজনে তারা কানাডায় মাইগ্রেট করতেও অসুবিধা নাই।

বিস্তারীত আলাপ আলোচনায় সব পক্ষই এই বিয়েতে আমরা রাজী এটাই বেরিয়ে এলো। সন্ধ্যায় সবাই আমরা হাসিমুখে একসাথে ফ্যাক্টরী থেকে বেরিয়ে গেলাম।

এবার আসি, আমার কিছু ব্যক্তিগত মন্তব্যেঃ

(১)       আমার এজেন্ডায় আরো যেখানে যেখানে গিয়ে রাকিবদের পরিবার সম্পর্কে খোজ খবর নেয়ার কথা ছিলো, সেই সিডিউল বাদ দিলাম। কারন, আমি যদি খোজ খবর নিতে গিয়ে ওদের পরিবার সম্পর্কে ৯৯% নেগেটিভ কথাবার্তাও শুনি, তাতেও আমি রাকিব আর উম্মিকাকে এই বিয়ে থেকে বিরত রাখতে পারবো না। তাই, খোজ নেয়া আর না নেয়ার মধ্যে আমি কোনো তফাত দেখতে পেলাম না।

(২)       উম্মিকার ১ম বিয়েটা আমরা অনেকটা জোর করেই উম্মিকাকে রাজী করিয়েছিলাম রানার সাথে। উম্মিকা সে কারনে মাঝে মাঝেই আমাদের দোষারুপ করে। কিন্তু এইবার উম্মিকার নিজের চয়েজে রাকিবকে বিয়ের সিধান্ত নিয়েছে। ভালো মন্দ, সব উম্মিকার দায় দায়িত্তো। লাইফ উম্মিকার, ভালো থাকার ব্যাপারটা উম্মিকার। তাই, আমি উম্মিকাকে এবার জোর করে বিয়েতে না রাজী করার কোনো কারন দেখি না।

(৩)      আমরা প্রথম থেকে রাকিবদের উপরে জে মানসিক চাপের সৃষ্টি করেছি, বা যেভাবে জে কথাগুলি ওপেনলী বলেছি, তাতে অন্তত রাকিব এবং তাঁর পরিবার একটা জিনিষ খুব ভালো করে উপলব্ধি করেছে যে, আমাদের দ্বারা ওদের উপকার হবে যদি লোভ না করে, কিন্তু যদি লোভী হয়ে উলটা পালটা কিছু আশা করে সেটা আমি বা আমরা কিছুতেই পছন্দ করবো না। তাছাড়া, আমাদের এমন টাইট ব্যবহারে ওরাও অনেকটা সোজা হয়ে চলার কথা। রানার মায়ের মতো বা রানার বোনের বা ভাইয়ের মতো সার্থপরতার কোনো কাজ না করার কথা।

(৪)       উম্মিকার আগের স্বামী রানা ছিলো একটা স্টুডেন্ট বা বেকার। তাছাড়া ম্যাচিউরিটি ছিলো না। কিন্তু রাকিবের বেলায় তাঁর একটা আইডেন্টিটি আছে, ডাক্তার। যা বুঝেছি, দায়িত্তের সাথে কাজ করে এবং পরিবারকে সাপোর্ট করার জন্য আরো বেশী পরিশ্রম করে। রানাকে কোথাও পরিচয় করিয়ে দেবার মতো রানা কোনো যোগ্যতা অর্জনেও সক্ষম হয়নি।

(৫)      রাকিবের দুটূ বোন, যাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। রাকিবের আর কোনো ভাইও নাই। ফলে পরিবারটাকে আমার জটিল মনে হয় নাই। এ ছাড়া রাকিবের বাবার একটা ব্যবসা আছে যেটা রানার বাবার ছিলো না।

(৬)      রাকিবঅদের ঢাকায় কোনো থাকার জায়গা নাই, ফলে রাকিবের বাবা মা অনেকটাই আমাদের উপর নির্ভর করছে রাকিবের নিরাপত্তা, রাকিবের গার্জিয়ানশীপ ইত্যাদি। কিন্তু রানার ব্যাপারে রানার মা চেয়েছিলো ওরা আমাদেরকে কন্ট্রোল করুক। আর সেইটার টুলস হলো উম্মিকা। এখানে এই ব্যাপারটা আমি দেখি নাই।

(৭)       সবচেয়ে বড় পয়েন্ট হচ্ছে- যদি উম্মিকা আর রাকিব শেষ পর্যন্ত তারা একা একাই বিয়ে করে ফেলে, তাহলে আমি তো আমার মেয়েকেই হারিয়ে ফেলছি। হতে পারে ইনশাল্লাহ ওরা ভালই থাকবে বা থাকছে, তখন কিন্তু আমিই আবার ওদেরকে কাছে টেনে নিতে বাধ্য হবো। কারন আমি ওটাই চেয়েছিলাম যে, উম্মিকারা ভালো থাকুক। যদি পরে গিয়ে ওদের সুখী দাম্পত্যর ফলাফলে আমি কাছেই টেনে নেই, সেটা বিয়ের আগে নয় কেনো? তাতে লাভ অনেক গুলিঃ

(ক)      আমার সিদ্ধান্তেই বিয়েটা হলো।

(খ)       উম্মিকার আম্মুর খুব শখ ছিলো উম্মিকার বিয়েতে সে অনেক ধুমধাম করবে, সেটাও হলো।

(গ)       আমার একটু সাহাজ্যে যদি রাকিবদের পরিবারেও একটু উপকার হয়, তাতে আমিও খুশী রইলাম।

(ঘ)       যদি দেখি, রাকিবের বাবার ব্যবসাটা একটা লাভ জনক ব্যবসা, আর আমার সাহাজ্যে যদি তাঁর ব্যবসাটা আরো ভালো করে, প্রয়োজনে আমিও তাঁর সাথে ব্যবসায় শরীক হতে পারবো। রাকিবের বাবাই চালাবে কিন্তু আমার কিছু ফাইন্যান্সের কারনে আমারো একটা নতুন সেক্টর ওপেন হলো।

তাই, আগামী ৩ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে সেনাকুঞ্জে উম্মিকার অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩ এ ওর গায়ে হলুদ। এর মাঝে আমার ছোট মেয়ে কনিকা ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে ইনশাল্লাহ ঢাকায় ল্যান্ডিং।