১৬/১০/১৯৮৭-আমেরিকায় ফোন

আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। যেভাবেই হোক আমাকে ভাইয়ার সাথে কথা বলতেই হবে। এভাবে আর থাকা যায় না। গতকাল আমি ডিভ ডিউটি অফিসার হিসাবে ডিউটি করছিলাম ডিভ হেড কোয়ার্টারে। ডিভ ডিউটি অফিসার হলোঃ প্রতিদিন একজন অফিসার ডিভ অফিসে টেলিফোন অপারেতর হিসাবে কাজ করে। সারা ডিভিশনের একটা রিপোর্ট নেয়, কে বা কারা সেনানীবাসে এলো বাইরের থেকে, কি গাড়ি কোথায় গেলো, কেনো গেলো, কিংবা এই জাতীয় অনেক রিপোর্ট ফোনে ফোনে নিতে হয় মেইন গেট, ইউনীট ইত্যাদি থেকে। অনেক রাত। আমি ডিভ অফিসের এক ক্লার্ক কে আমার কষ্টের কথাগুলি এম্নিতেই শেয়ার করছিলাম। তার নাম শাহজাহান। সে সিগন্যাল ইউনিটের ক্লার্ক। আমাকে সে একটা বুদ্ধি বাৎলে দিলো যে, স্যার, জিওসির একটা সরাসরি ফোন নাম্বার আছে যা থেকে প্রিথিবীর যে কোনো জায়গায় কল করা যায়। আপনি একটা সুযোগ নিতে পারেন আপনার ভাইয়ের সাথে কথা বলার। কিন্তু জিওসির নাম্বার বলে কথা, যদি জেনে যায়, তাহলে কিন্তু অসুবিধা হবে।

আমার কাছে এখন কি অসুবিধা হবে আর কি সুবিধা হবে এটা চিন্তা করার কোনো অবকাশ নাই। ভাইয়ের সাথে আমার কথা বলতেই হবে। ফলে আমি জিওসির নাম্বারটা ক্লোন করে জিওসির টেলিফোনের তার আমার টেলিফোনের সাথে কানেকশন করে ভাইয়াকে রাত ১১ তায় ফোন করলাম। প্রায় ১ ঘন্টা কথা বললাম ভাইয়ার সাথে। আমি আমার সমস্যার কথাগুলি জানিয়ে বললাম, আমার আর আর্মিতে থাকা সম্ভব না, যেভাবেই হোক আমি বের হতে চাই। ভাইয়া আগে থেকেই আমার এই আর্মীতে আসা নিয়ে খুব নারাজ ছিলেন। এইবার আমার আর্মী ছারার কথা শুনে তিনি আমার সিদ্ধান্তকে সায় দিলেন।

কিন্তু কিছুক্ষন আগে ব্রিগেডের ডি কিউ মেজর বদ্দ্রোজা স্যার জানাইলেন আমাকে ডিভিশনের জিএসও-২ (অপ্স) মেজর সালাম আমাকে ডিভিশনে যেতে বলেছেন। বুঝলাম, ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেছে।