Categories
জীবন একটাই। সবাই জীবনে সুখী হতে চায়, আরাম আয়েস চায়, চায় সম্মান নিয়ে নিরাপদে সুখী পরিবার নিয়ে বেচে থাকার। আর এই সুখ, আরাম, সম্মান, নিরাপত্তা কোনোটাই সহজলভ্য ব্যাপার নয়। এর পিছনে থাকে হাড় ভাঙ্গা খাটুনী, অসহনীয় ধকলেরধাক্কা, আরো অনেক কিছু। তাতেই কি সব পাওয়া যায়? মোটেইনা। অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাশার চেয়ে প্রাপ্তিটা মোটেই আনুপাতিক নয়। ফলে মানুষ তার আখাংকার তীব্রতার কাছে ক্রমাগত হেরে যেতে থাকে, আর এই হার থেকে মানুষ অনেক সময়ই ভুলরাস্তা বেছে নেয়, সহজ পথ আঁকড়ে ধরে। যখনই এই ঘটনাটা ঘটতে থাকে, তখন ব্যক্তি আর ব্যক্তিত্বর মধ্যে একটা কনফ্লিক্ট তৈরী হয়। ব্যক্তিত্ব যদি হয় নীতির পরিমাপের একটা আদর্শ, ব্যক্তিত্ব যদি হয় ব্যক্তির সততার একটা মাপকাঠি, ব্যক্তিত্ব যদি হয় নিরপেক্ষতার একটি ইউনিট, তাহলে যখনই এই হারের ঘটনাটা ঘটতে শুরু করবে, তখন ব্যক্তির আখাংকার তীব্রতার কাছে এইসব ব্যক্তি আদর্শ, নীতী, নিরপেক্ষতা হারাতে থাকে। এই উপাদান গুলি আর তখন খুব জোরালো হয়ে কাজ করেনা। যে নীতিসমুহ একজন ব্যক্তিকে ভুলরাস্তা থেকে সরিয়ে নিতে পারতো, তখন সেই নীতিগুলোর অনুপস্থিতে নিমিষের মধ্যেই ব্যক্তি ভুল একটা রাস্তায় প্রবেশ করে ফেলে। আর এই নীতির অনুপস্থিতিটাই হচ্ছে দুর্নীতি। আর একবার যখন কেউ এই ভুল রাস্তায় প্রবেশ করে ফেলে, তখন তাকে আর ফেরানো যায়না। হোক সেটা প্রেমের বেলায়, হোক সেটা অর্থনীতির বেলায়, আর হোক সেটা কোনো সামাজিক কর্মকান্ডের বেলায়। ব্যক্তিটা তখন সবার বেলায় একই আচরন করে। বন্ধু পালটে যায়, সমাজের গন্ডি পালটে যায়, পালটে যায় তার দৃষ্টিভঙ্গির।
যখন কারো দৃষ্টিভঙ্গি পালটে যায়, তখন তার কাছে অনেক কিছু আর স্বাভাবিক মনে হবে না। লাল কাচের ভিতরে রাখা সাদা গোলাপকে সে লাল রঙের গোলাপই মনে করবে, নীল আলোর চত্তরে সে সবুজ গাছের পাতাকে আর সবুজ দেখতে পাবে না। তখন তার স্বাভাবিক চোখ তার মেধার সঙ্গে একাকার হয়ে বাস্তব কিছু থেকে অনেক দূরে সরতে থাকবে। সরতে থাকা প্রেক্ষাপটে তখন অনেক কিছুই সাফল্য বলে মনে হয়। প্রাপ্তির অনুপাতটা মনে হয় শ্রমের থেকে একটু বেশি। দিন মাস, বছর ধরে যদি ক্রমাগত এই পরিবর্তন ঘটতে থাকে, তখন একসময় তার কাছে কোনো কিছুই আর অসম্ভব বলে মনে হয় না। সে হয়ে উঠে অপ্রতিরোধ্য। আর অপ্রতিরোধ্য চরিত্রগুলোই হচ্ছে অন্য সবার জন্য বড় একটা সমস্যা। এই সমস্যা হয়ে উঠে তখন সামাজিক ব্যধির মতো। কারন সে নিজে পালটেছে, সঙ্গে আরো কিছুকে পাল্টায়। এই পাল্টানোর হার যদি বাড়তেই থাকে, তখন পুরু সমাজটাই হয়ে উঠে বিসাক্ত। স্বাভাবিক কোনো কিছুরই আর তখন গ্যারান্টি থাকে না। নারী তখন অসহায় হয়ে উঠে। সব নারীরাই তখন শুধু নারী। মা, বোন স্ত্রী, মেয়ে, কিংবা দাদীর মধ্যে আর কোনো পার্থক্য থাকে না। কিছু পুরুষ তখন হয়ে উঠে অত্যান্ত দুর্দান্ত, আর কিছু পুরুষ হয়ে উঠে নিতান্তই দুর্বল। আইন তখন নীরব থাকে, আইনের রক্ষকেরা তখন নিজেরাই বিভিন্ন চরিত্রে উপনীত হয়।
এখানে একটা জিনিষ খুব ভালোভাবে বুঝা দরকার যে, ভুল করে ভুল রাস্তা বেছে নেওয়ার ব্যক্তিকে ভুল থেকে শোধরানো যায় কিন্তু কেউ যদি ইচ্ছে করে ভুল রাস্তার সন্ধান খুজে নেয়, তাকে সরানো কঠিন। আর সেই ভুল্টা হচ্ছে অন্যায়। ভুল করে ভুল করার পর হয় আফসোস কিন্তু অন্যায় করে ভুল করার কারনে মানুষ হয়ে উঠে মানসিকভাবে দুর্বল। ভুল রাস্তায় জীবন জাপন করে কেউ অধিক কাল বেচে থাকতে পারে নাই, এতে যার যতো সম্পদ, টাকাপয়সা কিংবা যশই থাকুক না কেনো। কারন প্রকৃতি তার নিজের নিয়ম ভেঙ্গে কখনো অন্য কোন নিয়মকে মেনে নেয় নি। ফলে এই সুন্দর পৃথিবীটাকে অধিককাল দেখার সৌভাগ্য হয় শুধু তাদেরই যারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পালটে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হয়ে এক সঙ্গে চলতে পেরেছেন। তাহলে প্রকৃতির সেই প্রাকৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিটা কি? এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে-পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি।
এর বিসদ ব্যাখ্যা প্রয়োজন।