১৮/১/২০২৪-আমি গুছিয়ে নিচ্ছি সব

আমি গুছিয়ে নিচ্ছি সব। আমি আমার চাহিদার সীমানা এতোটাই ছোট করে ফেলার চেষ্টা করছি যে, সেই সীমানায় থেকে যেনো আমি আমার বাকী সময়টা নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারি। এই মাষ্টার প্ল্যানের অংশ হিসাবে আমি আমার যাবতীয় সব জমিজমা বিক্রি করে দেয়া শুরু করেছি। আমি জানি একসময় এই জমিগুলির মুল্য এতোটাই বেশি হবে, তখন যে কেউ শুনলে আমাকে বোকাই মনে করবে এই কারনে যে, কেনো আমি জমিগুলি বিক্রি করেছিলাম।

আমি আমার বাবার অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছি যে, ভালো যোগ্য উত্তরসূরী না থাকলে কোন সম্পদ বা সম্পত্তিই নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব না। পেশি শক্তি লাগে, তার সাথে লাগে অর্থ, লাগে কানেকশন, লাগে সমাজে প্রতিষ্ঠা। আমার যেহেতু দুই মেয়ে, ফলে ওরা যতোই পেশি শক্তিওয়ালা থাকুক, যতোই অর্থ থাকুক, যতোই সামাজিক যোগ্যতা থাকুক, একজন মেয়ের পক্ষে তার বাবার সম্পত্তি রক্ষা করা কোনোভাবেই সম্ভব না। বিশেষ করে যখন সম্পদ চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। আমার বাবাও পারেন নাই। আমিও পারব না। তাই পরিকল্পনা এমনভাবে সাজিয়ে দিচ্ছি যাতে আমার মেয়েদের পক্ষে সেগুলি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয়। আমার নায়নাতকুরেরা হয়তো পারবে কিন্তু থার্ড জেনারেশনের উপর ভর করে নিজের কোন সম্পত্তিই রক্ষাকবচ হিসাবে রেখে যাওয়া সঠিক নয়।

আর এই পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার ছড়িয়ে থাকা জমিগুলি বিক্রি করে সেই অর্থ লিকুইড হিসাবে আমার জন্য সঞ্চয় করছি। যাতে বুড়ো বয়সে কারো কাছেই আমার হাত পাততে না হয়।

সাভারে ২টা ফ্ল্যাট কিনেছি দুই মেয়ের নামে। ওরা সেটেল হতে পারবে নিজেদের ফ্লাটে। মিরপুরের বাড়িটা তো আছেই। আমার জীবদ্দশায় আমি এখান থেকে বিদায় হতে চাই। আমার বিদায়ের পর এটা ওদেরই থাকবে।

ব্যবসার ব্যাপারে এখন আর আমি হটাত লাফ দিয়ে উঠি না। নতুন কোনো ইনভেষ্টমেন্টে যেতে চাই না যতোক্ষন সেই ইনভেষ্টমেন্ট রক্ষার জন্য সুযোগ্য উত্তরসুরী না পাই। তাই আমি নতুন করে যেটা ভাবছি সেটা হলো-আবিরকে মাছের ব্যবসায় নিয়ে আসা। আবিরের বাবা মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত, মনে হচ্ছে আবিরের বাবা মানুষ হিসাবে অতটা খারাপ না যতোটা আমি তাকে দেখার আগে ভেবেছিলাম। আবিরকে তার প্রফেশনের পাশাপাশি যদি মাছের ব্যবসার সাথে রাখতে পারি, আমার ধারনা, তার ২য় আরেকটা সোর্স অফ ইনকাম থাকবে। যদি আবির নষ্ট না হয়ে যায়, ছেলেমেয়ে নিয়ে উম্মিকা আর আবির ভালোই থাকবে। এর মধ্যে উম্মিকা আর আবিরের প্রফেশনের সাথে মিল রেখে দুটু হাসপাতালের শেয়ারও কিনে নিলাম। একদিন এটাই হয়তো অনেক বড় ব্রান্ড হতে পারে।

কনিকার জন্য আগামি আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত সব খরচ দেয়া আছে। ওকে নিয়ে আমার এই মুহুর্তে পড়াশুনা চালানোর ব্যাপারে কোন টেনশন নাই। বাকীটা কনিকা নিজে যদি আমেরিকায় সেটেল হতে পারে, তাহলে এই দেশে যা আছে, এক সময় কনিকাও তাকা নিতে পারবে এবং আমেরিকাতেই সেটেল হতে পারবে। বাকীটা ওরা জানে কিভাবে সেটেল হবে। তবে যদি কখনো কনিকা নিজেই তার বৈবাহিক সম্পর্ককে নিজে প্রাধান্য দেয়, আমি হয়তো ওকে বাধা দেবো না কিন্তু সতর্ক করার পরেও যদি না মানে তাহলে সেটা হবে ওর নিজের লাইফের উপর সর্বোচ্চ রিস্ক।

অরুর ব্যাপারে আমার পরিকল্পনা প্রায় শেষের পথে। ক্যাশ, জমি সব দেয়া হলো। এখন শুধু একটা স্থায়ী স্থাপনা করা যাতে যে কোন অবস্থায় সে নীরবে এবং শান্তিতে থাকতে পারে। কিন্তু সেও যদি কোনো কারনে ডিরেইল্ড হয়ে দুরুত্ত বারাইতে চায়, আমি সেখানেও কোনো বাধা দেতে চাই না। সবার লাইফ যার যার তার তার। আমরা শুধু টেনশন করতে পারি কিন্তু সমাধান যার যার হাতে।