২০/০৪/২০০৯-বাসাবোতে ডেভেলোপার

রিভার সাইডে আমার বিলুপ্তির শেষের দিকে আমি যখন অন্য আরেকটি বিকল্পের কথা চিন্তা করছিলাম, তখন বাসাবোতে তারেক নামে এক ভদ্র লোকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। আর সেটা মোহসীন সাহেবের মাধ্যমেই। তারেক সাহেব আমাদের ফ্যাক্টরিতে এক্সেসরিজ সাপ্লাই দিতেন। বরিশালের মানুষ, খুব চালাক। তার মাধ্যমে আমি বাসাবোতে আরাই কাঠার একটা প্লট বায়না করেছিলাম এবং যেভাবেই হোক, টাকাটাও এক প্রকার পরিশোধ করেই দিয়েছিলাম। পাটোয়ারী নামে এক লোকের জমি যিনি নিজেও গার্মেন্টস লাইনে ছিলেন। পাটোয়ারী সাহেবের স্ত্রীর নামেও আরো আড়াই কাঠা জমি ছিলো একই দাগে। ফলে জয়েন্ট ভেঞ্চারে ডেভেলোপারের কাজের একটা বুদ্ধি করলেও পাটোয়ারী সাহেব থাকতে পারেন নাই। ধীরে ধীরে আমার কাছ থেকে কিস্তি কিস্তি করেই টাকা নিয়ে গার্মেন্টস চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। এক পর্যায়ে গিয়ে আমি পুরু ৫ কাঠা জমিই নিয়ে নেই আর সেখানে হাউজিং করার জন্য উদ্যোগ নেই।

এতো চড়াই উতড়াই যাচ্ছিলো আমার জীবনের উপর দিয়ে। তারপরেও কিভাবে যে আল্লাহ আমাকে এসব বীভৎস পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করেছেন, ভাবলেও শরীর কেপে উঠে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছি। আমার মাথায় একটা বিষয় সব সময় কাজ করতো যে, যে কোনো মুল্যে আমার পরিবার যেনো সাফার না করে। আমি ওদেরকে বুঝতেই দেই নাই আমার ভিতরে কি চলছে বা আমি কি অবস্থায় আছি।  

সারাক্ষন চিন্তায় থাকি, কিভাবে মানুষের লোন গুলি শোধ করবো, কিভাবে সম্মানের সাথে একটা ব্যবসায় টিকে থাকবো। যার কেউ নাই, আসলে তার মতো মানুষের অনেক বড় সপ্ন দেখা অপরাধ। কিন্তু আমার তো সামর্থ না থাকলেও যোগ্যতা ছিলো। আর সেই যোগ্যাটা গুলি আমি আমার সহজ সরল মনের কারনে হারিয়ে ফেলেছিলাম এই সিভিলিয়ানদের ভীড়ে। একটা সময় ভাবলাম, বাসাবোর ৫ কাঠার উপরে যদি বিল্ডিং বানাই আর সেই ফ্ল্যাট গুলি বিক্রি করি, তাতে হয়তো একটা সেক্টর খুলবে। তারেকের এক বন্ধু হারুন নামের এক ভদ্র লোক সামিল হলেন। ভালো মানুষ। বুদ্ধি দিলেন যে, তার এক পরিচিত ভাই আছে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনে। লোন নিয়ে হয়তো কাজে হাত দেয়া যায়। হাউজ বিল্ডিং ফাইনেন্সে গিয়ে জানতে পারলাম, গ্রুপ লোনে বেশী টাকা পাওয়া যায়। ফলে আমার টাকায় কেনা ৫ কাঠা জমি আমি নির্ভয়ে মোট পাচ ভাগে সাক কবলা করে গ্রুপ লোন হসাবে ৬০ লাখ টাকা নিয়ে নিলাম। তাদের মধ্যে একজন লেঃ কর্নেল ফেরদৌস, আমার ভাতিজা মান্নান, আমার স্ত্রী মিটুল চৌধুরী, হারুন সাহেব আর আমি। মোট ৫ জন, ৫ কাঠা। এটাও একটা ভালো বুদ্ধি ছিলো না। কিন্তু আমাকে হয়তো আল্লাহ ভালোবাসেন, তাই মাথায় একটা বুদ্ধি এটে দিলো যে, সাব কবলা করার সাথে সাথে আমি সবার কাছ থেকে আম মোক্তার নিয়ে নিলাম যাতে কেউ আমার সাথে আবার ছল চাতুরী করতে না পারে।