Categories
এই কয়দিন ভাইয়ার বাসায় আছি। শীতের প্রকোপ কমছে না। বাইরে গেলেই তুষারপাত। গতকাল সবাই মিলে একটি ছবি দেখলাম। দি রেইন ম্যান। একটা অটিষ্টিক বাচ্চার কাহিনী। ইউসুফের সাথে প্রচন্ড মিল রয়েছে। সকালের দিকে আমি মাসুদের স্ক্লে গিয়েছিলাম। সুন্দর একটা স্কুল। কো-এডুকেশন অবশ্য। স্কুলে গিয়ে বুঝলাম মাসুদ খুব জনিপ্রিয়। ওর ক্লাশ টিচারের নাম মিস ম্যাপল। মাসুদ আমাকে ওর ক্লাশ টিচারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর ঊনি আমাকে বললেন যে, আমার পক্ষে সম্ভব কিনা হাইতির উপর একটা ছোট খাটো প্রেজেন্টেশন দেওয়া। আমি আসলে একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। তারপরেও বললাম, যদি ম্যাপ থাকে তাহলে আমি হয়ত চেষ্টা করতে পারি।
যেই বলেছি যে, আমি ৩০/৪০ মিনিটের একটা ক্লাশ নেবো, অমনি সব ছাত্ররা তাদের টেবিল চেয়ার রুমের একদিকে টানাটানি করে সরিয়ে দিলো, একটা হল ঘর হয়ে গেলো। এই চেয়ার টানাটানির সময় আমি আর মাসুদ মিলে ওদের কম্পিউটার থেকে হাইতির একটা ম্যাপ বের করে ফেললাম। আর আমি একটা ছোট নোট লিখে ফেললাম কি কি বল্বো আর কি কি বল্বো না।
বাচ্চারা খুব হাসি খুশীতে সবাই বসে পড়লো। আমারো খুব ভালো লাগছিলো এই সব পটেনশিয়াল বাচ্চাদেরকে কিছু একটা বলতে।
তাদের হাইতি সম্পর্কে যতোতা না উতসাহ, তাঁর থেকে বেশি উতসাহ দেখলাম আর্মীর জীবন নিয়ে। কি হয়, কিভাবে থাকি, কিভাবে অস্ত্র চালাই, সব অস্ত্র চালাইতে পারি কিনা। একটা গুলি করলে কতজন মরে, আমি শত্রুদেরকে কিভাবে ঘায়েল করি। আকাশ থেকে লাফ দিয়ে পড়তে পারি কিনা। যদি পারি, আর যদি আর না বাচি তাহলে কিভাবে কি আরো কতো যে কি?
হাইতিতে আমি কতজনকে এরেষ্ট করেছি, ওরা আমাদেরকে মারে কিনা, ওদের কি অস্ত্র আছে, সরকার সবাইকে একসাথে ধরে মেরে ফেলে না কেনো ইত্যাদি। ৪০ মিনিটের ক্লাস হয়ে গেলো প্রায় দেড় ঘন্টার। মিস ম্যাপেল শেষে এসে বললেন, মাসুদ এবং আমাকে অনেক ধন্যবাদ ওদেরকে সুন্দর কিছু বলার জন্য এবং আমি টাইম দেওয়ার জন্য।
ওদের স্কুল দেখে একটা জিনিষ বুঝলাম, স্কুলের প্রতিটি দেওয়ালে দেওয়ালে হরেক রকমের ইনফর্মেশন, ম্যাপ, বিভিন্ন সংবাদ এবং বিশেষ ব্যক্তিদের ছবি সহ তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনী। মাসু মাত্র ক্লাস এইটে পড়ে। ওদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক বাস্তব ধর্মী। বিভিন্ন ধর্মের ছেলেমেয়েরা আহে। কয়েকজন মুসলমান ছাত্রো এবং ছাত্রীকে দেখলাম। ছাত্রীরা ছোট ছোট হেজাব পড়ে আছে। আমাকে দেখে সালামও দিয়েছে।
সুন্দর একতা সময় কাটলো আজ কে মাসুদের স্কুলে।