আজই ২১ রাইফেল ব্যাটালিয়ানে সংযুক্ত হলাম। প্রকৃত হলো যে, কোনো বিডিআর ব্যাটালিয়ানে এটাই আমার প্রথম অভিজ্ঞতা। মেজর জিয়া (৮ম লং কোর্ষ) ২১ রাইফেলের অধিন্যক। তার সাথে উপঅধিনায়ক হিসাবে আছে আমার কোর্ষম্যাট আর্টিলারীর মাহফুজ। ২১ রাইফেল রিয়ারে রাত কাটালাম, আমার সাথে ১৪ লং কোর্ষের জামাল (ইঞ্জিনিয়ার) ও ২১ রাইফেলের সাথে এটাচড। রাতে বেশ জমিয়ে সবাই আড্ডা দিলাম বটে কিন্তু কোথায় যেনো একটা অস্থিরতা কাজ করছিলো আমার।
রাংগামাটিতে একদিন থাকবো। তারপর ওখানে রাংগামাটির ব্রিগেড কমান্ডার করত্রিক আমাদেরকে একটা রিসেপ্সন প্লাস ব্রিফিং করবেন। তারপর সেখান থেকে যার যার ব্যাটালিয়ানের জন্য সবাই চলে যাবো। আমাদের আবার বিডিআর ব্যাটালিয়ানে যাওয়ার আগে সেই এলাকায় অবস্থিত কোনো ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ানের সাথে অরিয়েন্টেশন করতে হবে। আমার মারিষ্যা জোনে আছে ৪৪ ইষ্ট বেংগল, আমাকে ৪৪ ইষ্ট বেংগলে প্রথম ৭ দিন অরিয়েন্টেশনের জন্য থাকতে হবে।
রাতে চট্টগ্রাম সেনানীবাসটা ঘুরলাম। সেই বেসিক কোর্ষের পর টিএ এন্ড এস (টার্গেট একুইজেশন এন্ড সার্ভে) কোর্ষ করার সময় এখানে কয়েকবার এসেছিলাম। তবে খুব একটা রাত কাটাই নাই এই সেনানীবাসে। এবারই প্রথম রাত কাটাচ্ছি। চট্টগ্রাম সেনানীবাস যশোর সেনানীবাস থেকে কিংবা সাভার, বা খুলনা ইত্যাদি সেনানীবাস থেকে একেবারেই আলাদা। বেশীর ভাগ অফিসারগন থাকে হিলে। যারা ছুটিতে যায় কিংবা ছুটি থেকে ফিরে আসে, তারাই একমাত্র এই অফিসার মেসগুলিতে থাকে। আর থাকে সার্ভিস কোরের অফিসাররা যাদেরকে হিলে যেতে হয় না। ফলে অফিসার মেসগুলি খা খা করে। তার মধ্যে আবার মেসগুলি পাহাড়ের ভাজে ভাজে যেনো লুকিয়ে আছে। এক ধরনের মাদকতা আছে এই মেসগুলিতে।
রাতের বেলায় যখন সেনানীবাসে ঘুরছিলাম, দেখলাম কোথায় মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যা করা হয়েছে, কোথায় কিভাবে কে কি করেছে তার কিছু ঐতিহাসিক জায়গা। এই চিটাগাং আমাদের দেশের অনেক বড় বড় ইতিহাসের সাথে জড়িত।
ঘুমিয়ে গেলাম। সকাল অর্থাৎ ভোর ৫ টায় রওয়ানা দিতে হবে রাংগামাটির উদ্দেশ্যে।