২২/১০/১৯৮৬-হতাশা

৪ কার্তিক ১৩৯৩

প্রচণ্ড হতাশা আর অধৈর্য আমাকে প্রতিনিয়ত ধরে বসেছে। হতাশ, কারন আমার আর ভালো লাগছে না এই রকমের একটা নিঃসঙ্গ জীবন। সেই যে যেদিন ঢাকায় পদার্পন করেছিলাম, সেই থেকে তো আমি একাই চলছি। আমার না আছে ডেডিকেটেট কোন বন্ধু, না আছে পরিবারের এমন কেউ যাদের জন্য আমাকে বাচার একটা কঠিন শপথ নিতে হয়। বড় ভাই আছেন, তিনি আমার শাসকের মতো। বোনেরা আছে কিন্তু তারা নিতান্তই বেচে আছে তাদেরকে নিয়েই। মা ও আছেন, কিন্তু তার তো শুধু ভালবাসা ছাড়া আর কিছুই দেবার নাই। আর অধৈর্য!! আমার চারিপাশে আমার সমসাময়িক আর্মি অফিসারেরা একধরনের বেপরোয়া হয়ে উঠছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। কেউ মেয়ে, কেউ ড্রাগ, কেউ আবার  অশ্লিল ছবি ইত্তাদি নিয়ে। আর্টিলারি সেন্টার যেন একটা মানুষ নষ্টের কারখানা হয়ে উঠছে দিনে দিনে।

ইদানিং দেখতে পাচ্ছি, সিনিয়র স্টুডেন্ট অফিসাররা গোপনে মদ গিলছেন ছোটদের নিয়ে। কেউ আবার গাজার পোটলা ও সংরক্ষণ করছে যখন তখন খাওয়ার জন্য। মেসের ছাদে গেলে আকাশের বাতাস আর আগের মতো সুগন্ধি ছড়ায় না। ভেসে আসে গাজার তীব্র গন্ধ। অনেক রাত অবধি মেসে ভিসি আর চলে। দল বেধে ছোত বড় অফিসাররা মিলে গরম গরম ভিডিও ছবি চলে। তখন মেসের মেস ওয়েটারদের  কে আশে পাশে রাখা হয় না। একেবারে কেটলীতে করে চা এর ব্যবস্থা করে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে আবার কেউ ধীরে ধীরে সুরা পান ও করছেন।

ব্যাপারটা আর্টিলারী সেন্টারের কর্তৃপক্ষ হয়তো জানেন না। জানলে এসব করতে অনুমতি দেওয়ার কথা নয়। আমি একঘরে হয়ে যাচ্ছি। আমার এসব দেখতেও ভালো লাগছে না, আবার সারাটা মেসে যেনো কয়েকটা দলে ভাগ হয়ে যাচ্ছে অফিসারেরা। ক্লাশে গিয়ে আজকাল অফিসাররা প্রায়ই ঘুম ঘুম চোখে ক্লাশ করছেন যেনো রাতে রাজ্যের পড়ায় ব্যস্ত ছিলেন।