২৩/০২/২০২৩-আমেরিকার ভিসা প্রাপ্তি

অনেকবার আমেরিকা যাওয়ার জন্য ভিসা পেয়েছিলাম কিন্তু যাওয়া হয়েছে মাত্র একবার। বাকী সম্ভবত আরো দুবার ভিসা ছিলো (দূটু মিলিয়ে প্রায় ৮ বছর মেয়াদিতে) কিন্তু যাওয়া হয় নাই। আমেরিকা আমাকে আসলেই টানে না। অনেকের কাছে এটাকে সর্গপুরী মনে করেন বটে কিন্তু আমার কাছে কোনো বিদেশই টানে না। আর সেটেল হবার তো কোনো প্রশ্নই জাগে না।

এবার আমেরিকার ভিসা পাওয়ার ব্যাপারে আমার বেশ সন্দিহান ছিলো। তারা আবার নাক উচা। ভিসা দিয়েছে কিন্তু যাইনি, তাতে ওরা ইন্সাল্ট ফিল করে। এমতাবস্থায় আমাকে ৪র্থ বার ভিসা দেয় কিনা সেটা নিয়ে আমার পুরুই সন্দেহ ছিলো। তারপরেও ছোট মেয়ে আমেরিকা থাকে, মেয়ের মায়ের ভিসা হয়ে গেছে, আমার হয় নাই, আমার যাওয়া হবে না ইত্যাদির চাপে শেষ পর্যন্ত ভিসার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু মনে একটা কঠিন প্রত্যয় ছিলো যে, ভিসা দিলেই যেতে হবে কিংবা সুযোগ না থাকায় যেতে পারি নি এটা পরবর্তী ভিসা না পাওয়ার জন্য একটা ডিস ক্রেডিট হতে পারে না। যদি আমাকে ভিদা রিজেক্ট করে, আমি অবশ্যই এর কৈফিয়ত চাইবো তাদের কাছ থেকে কেনো এবং কোন কারনে আমার ভিসা রিজেক্ট করছে। আর যেহেতু আমার খুব একটা টান নাই, ফলে আমার ভিসা পাইলেই কি আর না পাইলেই কি। মিটুলের তো অন্তত ভিসা আছে, তাতেই চলবে। কোনো কারনে যদি কনিকার কাছে যেতে হয়, মিটুল একাই সামলে নিতে পারবে।

যথারীতি আমি ইন্টারভিউ এর জন্য দাড়ালাম। অবাক করার ব্যাপার হলো, আমার কোনো কাগজ পত্র তারা চেক করার প্রয়োজন মনে করলো না। আমি আর্মিতে ছিলাম এটা নিয়েই তাদের অনেক প্রশ্ন ছিলো। প্রশ্নগুলি আমাকে ধরার জন্য নয় বরং যা দেখলাম তারা আর্মির যে কোনো লোককে খুবই মুল্যায়ন করে। আর্মিতে আমি কোথায় কোথায় চাকুরী করেছি, সেটা তাদের জানার খুব শখ হচ্ছিলো। বলেছি জাতীসংঘের সাথে প্রায় আড়াই বছরের উপর হাইতি আর জর্জিয়ায় মিশনে ছিলাম, তখনই একবার আমেরিকায় বেড়াতে গিয়েছিলাম।

আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো আমার মেয়ে তার পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরে আসবে কিনা। আমি বলেছি- সেটা আমি জানি না তবে আমার যে ব্যবসা আছে সেটায় সে হাল ধরলে আমি খুব খুশী হবো। কি ব্যবসা আমার যখন জিজ্ঞেস করলো, আমি বললাম রপ্তানীমুলক গার্মেন্টস। প্রায় ২ হাজার কর্মচারী আছে শুনে আরো খুশী হলো। বাৎসরিক টার্ন ওভার জিজ্ঞেসের পর অফিসার একটু যেনো হচকচিয়ে গেলেন কারন টার্ন ওভার টা ঝুব কম নয়- ২২৫ থেকে  আড়াইশো কোটির মতো।

খুব খুশী হয়েছে তারা পুরু ব্যাপারটা জেনে। অবশ্য আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল কেনো আমি আগের ভিসা গুলিতে আমেরিকায় যাইনি। আমি খুব সাবলিল ভাবেই বলেছিলাম যে, আসলে সেটা ইচ্ছে করে না যাওয়ার কোনো কারন নাই। আমি আমার নতুন ব্যবসাটা গুছিয়ে উঠতে সময় দিতে পারছিলাম না। তাই আর যাওয়া হয় নাই। কিন্তু এবার তো যাওয়া হবেই কারন মাঝে মাঝে আমার মেয়ের জন্য তো আমার মন ছুটেই যায় তাকে দেখার জন্য।

কোনো দ্বিমত করলেন না অফিসার। শুধু একতা কথাই বল্ল০ ইউ আর এ গুড ফাদার। অফ কোর্ষ, ইউ নিড টু গো।

বলে ভিসা দিয়ে ধন্যবাদ জানালো। ভালো লাগলো অফিসারের ব্যবহার। ফেরার পথে একটা স্যালুট দিলাম, আর একটু হাসলাম।