২৩/০৮/১৯৮৬-সৃষ্টিকর্তার হৃদয় সৃষ্টি

হালিশহর, চট্টগ্রাম-

আশ্চর্য হওয়ার মতো বেশী আশ্চর্য যদি কিছু থাকে এ পৃথিবীতে- সেটা হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার হৃদয় সৃষ্টি। অদৃশ্য, অস্পৃশ্য এক কাল্পনিক বস্তুকে আমরা যাকে হৃদয় বলে আখ্যায়িত করছি, তার গুনাবলী,তার আকৃতি- প্রকৃতি যাইই বলি না কেনো, তাকে ভালো মতো বিচার করার মতো আত্তা কিংবা সত্তা আমাদের কারোরই নাই। কোনো না কোনো একসময় সবকিছু ব্যর্থতায় ঝুকেই যায়। আজ যা ভেবেছি, হয়ত দেখা যায় কাল সেটা ভুল ভেবেছি বলেই মনে হয়। আজ যেটা ভুল মনে হয়েছে , হয়ত দেখা গেলো, আগামিকাল সেটাই ঠিক ছিলো বলে মনে হয়। আমরা মানুষ বলে হৃদয় নিয়ে কথা বলি, আত্তা নিয়ে কথা বলি, সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা নিয়ে কথা বলি। অথচ মানুষের থেকে আকৃতিতে বিরাটকায়, শক্তিশালী এবং অনেক আয়ুধারী প্রানীরাও কিন্তু তাদের হৃদয় নিয়ে এতো মাথা ঘামায় না, সাফল্য নিয়ে গলদঘর্ম হয় না কিংবা ভবিস্যত পরিকল্পনায় কি করলে কি হবে সেটা নিয়েও ভাবে না। আর এই জন্যই মানুষের এতো দুর্ভোগ, অশান্তি এবং আশ্চর্য ধরনের এক সৃষ্টি।

মাঝে মাঝে আমি কেমন যেনো অন্যরকম হয়ে যাই। চারিদিকে যখন দৃষ্টি দেই, মনে হয় সবার একটা আলাদা পরিবার আছে, জগত আছে, সবাই একে অপরের জন্য হৃদয় দিয়ে ভাবে। কেউ কিছুক্ষনের জন্য হারিয়ে গেলেও আরেকজন তার হৃদয়ের কোনো এক প্রকোস্ট থেকে রক্তক্ষরনে ব্যথাতুর চোখে জল ফেলে, উদগ্রীব  হয়ে পথের পানে চেয়ে থাকে।  আমারো একটা পরিবার আছে, এই পরিবারের ইতিহাস অনেক গৌরবময় অথচ আজ এই পরিবারের ইতিহাসের পাতায় কোথায় যেনো বর্ষাকাল, অথবা ক্রান্তিকাল। এই পরিবারের সদস্যগন এখন নিজেদের জগতকে সামাল দিতে অপারগ, আলাদা আলাদা জগত তৈরীতে অপারাগ। কেউ কিছুক্ষনের জন্য কেনো, কয়েকদিনের জন্য হারিয়ে গেলেও যেনো খুজে নেওয়ার লোক নাই। আমি যদি এখন কোথাও পথ চলতে গিয়ে কোথাও হারিয়ে যাই, আমি জানি আমার জন্য কেউ কোথাও হয়ত দাঁড়িয়ে নাই। আর যারা আছে, তাদের হয়ত এমন কোনো শক্তি নাই যে, আমাকে হারিয়ে যাওয়া গহীন জঙ্গল থেকে ফিরিয়ে আনা।

হারিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসার যে ভালোবাসা, তার তুলনা ফিরে আসার মাঝেই। তারপরেও আমি কখনো হারিয়ে যেতে চাইনা। কারন আমার ফিরে আসার সম্ভাবনা নাই।