১৯৯০ থেকে শুরু করে ১৯৯৮ সাল অবধি আমেরিকা মোট ২০ থেকে ২৫টি দেশকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে। এর মধ্যে আছে আফগানিস্থান, বলকান্স, বেলারুশ, বার্মা, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কংগো, ইথিওপিয়া, হংকং, ইরান, ইরাক, সুদান, লেবানন, লিবিয়া, মালি, নিকারাগুয়া, নর্থ কোরিয়া, রাশিয়া, সোমালিয়া, সাউথ সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা, ইয়েমেন, জাম্বিয়া এবং ইউক্রেন/রাশিয়ান, বুরুন্ডি, কিউবা, চীনের বহুজাতীক কিছু আন্তর্জাতীক কোম্পানী, আংশিক তুরুষ্ক এবং আরো অনেকে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে-ক্রমাগত এভাবে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশগুলি যেহেতু পশ্চিমা দেশগুলির সাথে সামগ্রিক ব্যবসা বানিজ্য করতে পারে না, এর মানে হলো তারা আরো মাল্টিপ্যাল অপসনের সুযোগ পায় হয় নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত দেশগুলি এক হয়ে কাজ করার তাগিদে অথবা তার সাথে পৃথিবীর অন্যান্য অবশিষ্ঠ দেশগুলির সাথে কাজ করার মাধ্যমে। অন্যঅর্থে এই নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত দেশগুলিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া মানে যারা দিচ্ছে তারাও প্রকারান্তে নিজেরাই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ে যাচ্ছে। এভাবে ক্রমাগত সবাইকে একঘরে করে দেয়ার ফলে কোনো এক সময় পশ্চিমারা নিজেরাই সারা দুনিয়া থেকে একঘরে হয়ে যেতে পারে বলে অনেকে মনে করেন অর্থাৎ তাদের সাথে অন্যরা আর কেউ কোন প্রকার দিপাক্ষীয় কার্যক্রম করবে না। এতে কি পশ্চিমাদের লাভ হবে নাকি ক্ষতি?
রাশিয়া যদিও ইউরোপের একটা অংশ কিন্তু সে আবার এশিয়া বা সাউথ ইষ্ট এশিয়ার সাথে তার ভৌগোলিক সম্পৃক্ততা, কালচারাল সম্পৃক্ততা, ব্যবসায়িক লেনদেন (বিশেষ করে ভারত, চীন মায়ানমার ইত্যাদি দেশের সাথে) ইউরোপের থেকেও অনেক বেশী। যার ফলে রাশিয়া এই ইউরোপ ছাড়াও চলতে পারবে যা ইউরোপ কখনো রাশিয়াকে ছাড়া চলা সম্ভব না। রাশিয়ার রিসোর্স সব দিক দিয়ে এতো বেশী যে,সব কমোডিটিতেই রাশিয়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশের জন্য গড়ে প্রায় ২৫% জোগানদাতা। হোক সেটা ইউরেনিয়াম, হোক সেটা তেল-গ্যাস, হোক সেটা লৌহ, কিংবা ফুড কমোডিটিজ। রাশিয়ার কমোডিটিজ যদি ইউরোপ না পায়, তাহলে রাশিয়ার সেই একই কমোডিটিজ ভায়া হয়ে অন্য রাষ্ট্র থেকে কিনতে ইউরোপকে প্রায় ৩ গুন দাম দিতে হয় যার ফলে বর্তমানে ইউরোপের অর্থনীতি প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটে প্রায় ভঙ্গুর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
ইউরোপের এবং পশ্চিমা নেতাদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় যদি এখনো না হয়, তাহলে ইউরোপিয়ান লিডার জোসেফ বোরেলের মন্তব্য করা “ইউরোপ হচ্ছে গার্ডেন আর ইউরোপ ছাড়া অন্যান্য সবাই হচ্ছে জংলী” এই ধারনা অচিরেই উলটো হয়ে যাবে।