০৯ অগ্রায়ন, ১৩৯৩
মিতুল
এখানে সারাদিন কোলাহল থাকলেও রাত হলেই জায়গাটা একেবারে নিস্তবদ্দ আর নিঃশব্দ হয়ে ওঠে। মনে হয় লোকজন নেই, হয়ত কোনকালে ছিলও না। হাটি হাটি পা পা করে যখন সিঁড়ি বেয়ে ছাদে আসি, খোলা আকাশের নীচে দাড়াই, ঠিক তখনি সমস্ত আঁধার কিংবা জোসনা ভেদ করে নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী কোরে যেন প্রায়ই তুমি এসে হাজির হও আমার পাশে। তুমিও কি একা? রাত বাড়ে, আর তুমিও যেন আরও কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরো। কেন এমনটা হচছে? আমি কিন্তু তোমাকে নিয়ে এমন কোন অসম্ভব ভাবনা ভাবছি না, তারপরেও কেন ইদানিং এ মোহটা আমাকে চারিদিক থেকে আঁশটেপিষ্টে ঘিরে ফেলছে? আগে কোন কিছু হারানোর ভয় আমার মধ্যে কাজ করত না, কিন্তু ইদানিং কিছু একটা হারানোর ভয়ই সারাক্ষন কাজ করে। মনে হয় যদি সারাজীবন এর চাহিদা না থাকে তবে কেন এই চাওয়া? অর্ধপাওয়া যে আরও কষ্ট। আমার এ ভয়টা মূলত তোমাকে নিয়ে। কদিন যাবত আমি তোমার কোন চিঠি পাইনি। আজও পেলাম না। ভাল লাগছে না। তুমি ভাল আছ তো ? বিকেলে একটা পার্টি ছিল, ভাল লাগছিল না, তাই গেলাম না। আমি ভাল গানও গাই না আবার ভাল হারমনিয়ামও বাজাতে পারি না, কিন্তু কিছু কিছু গান হারমুনিয়মে আমি তোলতে পারি। যখন মন খারাপ থাকে, আমি হারমুনিয়ামে ঐ গানগুলো প্রায়ই বাজাই। আজ ঐ গানগোলোও ভাল লাগলো না। ভাবছি আগামী ৪ তারিখে আসব না, কারন ৬/১২/১৯৮৬ তারিখে একটা কনফারেন্স আছে। তোমাকে না পেলে আরও খারাপ লাগবে আমার ঐদিন। আমি ভাল আছি, তুমি ভাল থেক। কি লিখব আর আজ? তুমি ভালভাবে পড়াশুনা করবে, পড়াশোনার ক্ষতি করে রাত জেগে আমাকে চিঠি লেখার দরকার নেই। সময় পেলেই চিঠি লিখবে। আর আমি এটাও জানি, তুমি সময় কোন না কোন ভাবে বের করবেই। তানি ক্যামন আছে? ওকে চিঠি লিখেছিলাম, পেয়েছে কি? ওর প্রতি রইল স্নেহ আর শুভেচছা। আর তোমাকে? এক রাশ সবুজ ফুলের কিছু সুগন্ধিমাখা ভালবাসা।লাল ফুল আমার প্রিয় নয়।
আজ এখানেই।
আখতার