২৮/০১/২০০৩- জর্জিয়া থেকে সচি ভ্রমন

Categories

বেশ অনেকদিন হয়ে গেলো জর্জিয়ায় এসেছি। গত অক্টোবর মাসে জর্জিয়াতে জাতীসংঘের মিশনে এসেছি। আশেপাশে সারাটা দেশ ঘুরলাম। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ, তারপরেও বেশ সুন্দর। বুঝা যায় যে, সোভিয়েট ইউনিয়নের সময় দেশের অবস্থা যথেষ্ঠ পরিমান মজবুত আর শক্ত ছিলো। বেশ গাছ গাছালী আছে সব জায়গায়। মাঝে মাঝে আমার একটা কথা মনে হয় যে, আমরা যারা বাংগালী নিজের দেশের সবুজ বনায়ন দেখে কত গান, কত কবিতা লিখি যেনো আমাদের দেশটাই শুধু সবুজ গাছগাছালী দিয়ে ঈশ্বর সাজিয়েছেন। কিন্তু সেটা মোটেও সত্য নয়। বিভিন্ন দেশ ঘুরে তো দেখলাম, যে, বরং আমাদের দেশটাই পিছিয়ে আছে। এমন কি এই সবুজ বন্যায়নের দিক দিয়েও। কয়েকদিন যাবতই ভাবছিলাম, পাশেই রাশিয়া, ঘুরে আসি। আমাদের জাতীসংঘের সেনাবাহিনীর কোনো জায়গাতেই যাওয়া আসার জন্য কোনো রেস্ট্রিকসন নাই। ইচ্ছে করলেই ইউনিফর্ম পড়েই যেতে পারি, জাতীসংঘের গাড়ি সেলফ ড্রাইভিং করেই যাওয়া যায় একদেশ থেকে আরেকদেশে। তেলের খরচ লাগে না, গাড়ির জন্য কোনো আলাদা পয়সা লাগে না। বেশ ভালো।

কোনো বাংলাদেশীদের সাথে আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না। তাদের সাথে গেলে যেটা হয়, হয় বেশি আতেল্গিরি না হয় একটা বোঝা হয়ে দাড়ায়। আনন্দের চেয়ে হয় বিরক্ত আসে অথবা মেহনত বাড়ে। কিন্তু কোনো বিদেশীদের সাথে একোম্পানি করলে ব্যাপারটা অনেক সাচ্ছন্ধবোধ লাগে। এখানে অনেকের সাথেই আমার খুব ভালো খাতির। বিশেষ করে পর্তুগাল, পোল্যান্ড কিংবা তুরুষ্কের অফিসারদের সাথে। জার্মানীর সবার সাথেই আমার বেশ ভাল একটা ফ্রেন্ডশীপ আছে। অনেকেই বেড়াতে যাওয়ার সময় আমাকে সংগী করে নিতে চাইলেও কেনো জানি আমার যাওয়া হচ্ছিলো না। তাই এবার ভাবলাম, রাশিয়া থেকে ঘুরে আসি। জর্জিয়া থেকে সবচেয়ে কাছের যে পোর্ট সিটি তার নাম সচী। আমাদের মিশন এলাকা থেকে বেশীর ভাগ অফিসাররা এই সচীতে গিয়েই সপ্তাহান্তের ছুটিগুলি কাটিয়ে আসে। কেউ যায় সস্তা রাশিয়ান মেয়েদের সাথে সেক্স করতে আবার কেউ যায় জাষ্ট একটা বিনোদনের উদ্দেশ্যে। আমার কোনো শখ নাই রাশিয়ান মেয়েদের সাথে কোনো প্রকার দৈহিক আনন্দের, আর এটা আমি মোটেও পছন্দ করি না। তাই আর যাওয়াও হচ্ছিলো না।

উরুগুয়ের এক বিমান বাহিনীর অফিসার, নাম লিওনার্দো, আমার খুব ভালো বন্ধু। সে একদিন এসে বল্লো, আখতার চলো সচী থেকে ঘুরে আসি। ভাবলাম, যাওয়া যেতে পারে। আমাদের সচী যাওয়ার জন্য যা লাগবে তা হলো একটা গাড়ি, আর অনুমতি। দুটুই সহজ এখানে। সেভাবেই আমি আর লিউনার্দো পরিকল্পনা করলাম ২৪ তারিখেই সচী যাবো। তিনদিনের ছুটিই যথেষ্ট। আমি রাশিয়ান ভাষা একদম বুঝি না, এদিকে আবার লিউনার্দো উরুগুয়ের বাসিন্দা বলে অনর্গল পারুস্কি বা রাশিয়ান ভাষাটা তার দখলে। ফলে আমরা তারিখ করেই ফেললাম যে ২৪ তারিখে আমরা রাশিয়ার সচিতে বেড়াতে যাবো। আমি আর লিউনার্দো খুব ভোর বেলা রওয়ানা হয়ে গেলাম। আমরা দুজনেই ড্রাইভিং জানি। সুতরাং কিছু সময় আমি আবার কিছু সময় লিউনার্দো ড্রাইভ করতে করতে সচীর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তাটা বেশ লম্বা। প্রায় আরাই শ কিলোমিটার। আমাদের রাস্তাটা ছিলো প্রায় এই রকম-

জুগদিদি-গালি-অচামছিড়া-লাব্রা-সুখুমি-গুদাউটা-ঘাগ্রা-সিনাতলে-গান্দিয়াদি-খিবানি-আডলার-খোসতা-খোস্টিনিস্কি হয়ে সচী। পুরু রাস্তাই এ-১৪৭ নামে পরিচিত। খুব সুন্দর রাস্তা।

আমরা যখন সচী পৌঁছলাম, তখন প্রায় সন্ধ্যা হয় হয়। পথে অনেকবার থেমেছিলাম, কখনো কফির জন্য, কখনো এম্নিতেই ছবি তোমার জন্য। আবার কখনো কারো সাথে রাস্তার ডাইরেকশন জানার জন্য। শীতকাল। ফলে দ্রুত বেলা পড়ে আসছিলো। আমরা তখনো জানি না কোন হোটেলে যাবো। কিন্তু আগে থেকেই একটা ধারনা ছিলো যেহেতু অনেকেই এখানে আসেন। আমাদের অন্যান্য অফিসাররাও এখানে আগে আসায় তাদের কাছ থেকে আমরা একটা আইডিয়া করে এসছি।

প্লেহানোভা স্ট্রীটে ইম্পেরিয়া নামে মূটামুটি ভালোমানের একটা হোটেল আছে যেখানে অনেক অফিসাররাই এসছিলো, ফলে আমরা সেটার খোজই নিচ্ছিলাম। হোটেলে যাওয়ার পর দেখলাম একেবারে মন্দ না। দামও মুটামুটি সস্তাই। রুমভাড়া মাত্র ২৫ ডলার করে। ডাবল বেড। আমার আর লিউর তাতে হয়ে যায়। আমরা ব্যাগ রুমে পাঠিয়ে দিলাম, আর গাড়িটা হোটেলের গ্যারেজেই দেওয়ার জন্য একটা দরখাস্ত করে ফেললাম। রিসেপসনে যে ভদ্র মহিলা বসেছিলেন, তার বয়স প্রায় ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে হবে। জিজ্ঞেস করলাম, খাবারের ব্যবস্থা কি। আমরা আসলে হোটেলের খাবারের উপর নির্ভর করতে চাই নাই। ফলে আমরা আগেই হোটেল রুম ভাড়া নেওয়ার সময় ফুড পোর্শনটা বাদ দিয়ে ভাড়ার ব্যাপারটা মিটিয়ে নিয়েছিলাম। যেহেতু আমাদের সাথে গাড়ি আছে, ফলে, যে কোনো লং ডিসটেন্সে গিয়েও আমাদের চয়েজ মতো খাবার খেতে পারি।

হোটেলে ঢোকার পর একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম। তারপর আবার বেরিয়ে গেলাম বাইরে। লিউ যেহেতু রাশিয়ান ভাষাটা বুঝে ফলে আমার খুব একটা বেগ পেতে হয় নাই। রাশিয়ায় খুবই কম লোক ইংরেজীতে কথা বলতে পারে কিংবা বলে। ফলে আমি কতটুকু ইংরেজীতে দক্ষ তাতে কিছুই যায় আসে না। বরং পুরা বাক্য না বলে যদি কেউ ভেঙ্গে ভেঙ্গে গুটিকতক ইংরেজি শব্দ বলতে পারা যায়, তাহলে হয়তো কেউ কেউ কিছু ইংরেজী ভাষা বুঝতে পারে। গ্রামার দিয়ে শুদ্ধরুপে যেই ইংরেজী বলবেন, সব তালগোল পাকিয়ে ওরা আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে। যদি কাউকে বলেন, ডু ইউ নো হাউ টু স্পিক ইংলিশ? কিছুই হয়তো বুঝবে না। তাকে যদি বলেন, স্পিক স্পিক ইংলিশ? তাহলে হয়তো কাজে দিতেও পারে।

প্রথম দিন সচীতে। রাতের বেলায় বেরিয়ে কোনো একটা মার্কেট খুজতেছি। ভালো মার্কেট যে কোথায় সেটা পাওয়া খুবই জটিল মনে হলো। রাত প্রায় ৯টা বেজে গেছে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে একটা কোনো রকম রেষ্টুরেন্টে আমি আর লিউনার্দো কিছু একটা আপাতত খেয়ে নিলাম। লিউকে দেখে অনেকটা রাশিয়ান রাশিয়ান মনে হলেও আমি যে এখানে বিদেশী এটা ওদের কারোরই বুঝার বাকী ছিলো না। রাস্তাঘাট বেশ ফাকা। একটা বয়স্ক মহিলা আমাদের কাছে এসে বল্লো, "তেবে নুঝনা দেবুস্কা?" লিউনার্দো আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বল্লো, বুঝতে পেরেছো, মহিলা কি বলছে? আমি বললাম, নাহ। লিউনার্দো বল্লো, তোমার কোনো মেয়ে চাই কিনা। তার কাছে ভালো আনাড়ি সুন্দুরী মেয়ে আছে, এবং যুবতী। বুঝলাম, সচী এমন একটা জায়গা যেখানে বেশ্যাবৃত্তি হচ্ছে প্রধান ব্যবসা। একটু পরপরই কেউ না কেউ এসে সেই একই কথা বলে যাচ্ছে, আমাদের কোনো মেয়ে চাই কিনা। কি তাজ্জব।

যাই হোক, আমি আর লিউনার্দো হোটেলে চলে এলাম। আমি লিউকে বললাম, লিউ বেশীদিন তো আর এখানে থাকতে আসিনি, চলো, রাতের রাশিয়া দেখে আসি। লিউ আমার খুব ভক্ত। বল্লো, চলো যাই তাহলে। আমরা গাড়ি নিলাম না। পায়ে হেটেই বেশ কিছুদুর এগুলাম। শুনশান রাস্তা, লাইট পোষ্টগুলি জলছে। কুয়াসায় রাস্তা প্রায় ঢেকে যাচ্ছে। আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে লিউকে নিয়ে সচী রিভারের কাছাকাছি চলে এলাম। প্রচুর মানুষ নদীর পারে। দেখলাম, প্রায় সবগুলি মানুষই মাতাল। ছেলেমেয়েরা একে অপরের সাথে প্রেম করছে, মাতামাতি করছে। আর পাশে এক বেহালাবাদক নিজের মনের সুখে বেহালা বাজিয়ে যাচ্ছে। এই বেহালার সুরে আবার কোনো কোনো মাতাল কিছু একটা দিয়ে বাদ্য যন্ত্রের মতো ঢোল পিটাচ্ছে। আর এই ঢোলের তালে তালে আবার কেউ কেউ এমন নাচনী দিচ্ছে, মনে হয় না কোনো কালে সে নাচ শিখেছে। এই নাচ দেখে আবার কেউ কেউ তাকে উতসাহও দিচ্ছে। মানুষ যখন মাতাল হয়, পাশে বসা কুকুরের আওয়াজ ও মধুর সুরের মতো হয়তো মনে হয়। মাতাল অবস্থা একটা দেখার মতো অভিজ্ঞতা।

রাত প্রায় বারোটার দিকে আবার আমি আর লিউনার্দো হেটে হেটেই আমাদের হোটেলে চলে এলাম। এই আসার পথে কমপক্ষে তিন থেকে চার জন আমার কাছে সিগারেট চেয়ে নিলো। এখানে সিগারেট চাওয়া যেনো একটা মামুলি ব্যাপার, হোক সে পরিচিত বা অপরিচিত। একটা জিনিষ খেয়াল করলাম যে, রাস্তায় অনেক লোক নেশা করে হেটে বেড়ায় কিন্তু অসভ্যতা করে না। আমাদের দেশ হলে তো ব্যাপারটা হতো ভয়ংকর। এখানে মাতালেরও একটা নীতি আছে।

হোটেলল রুমে ঢোকেই দেখি দরজার নীচ দিয়ে কমপক্ষে ৫ থেকে ৬টা ভিজিটিং কার্ড পড়ে আছে। সবগুলি কার্ড সেক্স গার্লদের। রুম সার্ভিস সহ অফার। কি তাজ্জব। সেক্স এখানে এতো জনপ্রিয় আর সস্তা? অনেক রাস্তা আজ ড্রাইভিং করেছি, আবার রাতও কম হয় নাই। টায়ার্ড লাগছে, তাই আমি আর লিউ পাশাপাশি বেডে শুয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।

পরদিন, প্রায় অনেক বেলা হয়ে গেলো ঘুম থেকে উঠতে উঠতে। আমরা যখন ঘুম থেকে উঠলাম, বেলা তখন প্রায় ১১ টা সকাল। প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। আমার আসলে ভাত না হলে চলেই না। লিউকে বললাম, লিউ চলো, ভাতের কোনো রেষ্টুরেন্ট পাও কিনা। লিউ আবার এইসব ভাত খেতে পছন্দ করে না। আমাদের ইম্পেরিয়ার পাশেই একটা ছাউনীওয়ালা লোকাল রেষ্টুরেন্ট ছিলো। আমার মনে হলো, সেখানে হয়তো ভাত পাওয়া যেতে পারে। লিউ যেতে চাইলো না। ওর নাকি ক্ষুধা নাই। সে একটা বিয়ার নিয়ে জানালার পাশে বিয়ার খেতে থাকলো। আমি একাই বেরিয়ে গেলাম। বেশী তো আর দূর নয়, এই পাশেই তো। প্রচুর লোক তখনো খাচ্ছে। একটা গমগম ভাব। আমি ঢোকলাম, আমি জানিনা কিভাবে 'ভাত খাবো এটা বলতে হয়'। তো, ওখানে একটা ২০/২২ বছর বয়সী ছেলে খাবার সার্ভ করছিল। আমি ইশারা করতেই সে আমার কাছে এসে, ওদের ভাষায় কি খাবো হয়তো জিজ্ঞেস করলো। আমি আসলে বুঝতে পারি নাই। বললাম, মেন্যু কার্ড?  ছেলেটা আমার কথা বুঝলো। একটা মেন্যু কার্ড নিয়ে এলো। বেশীর ভাগ লেখা রাশিয়ান ভাষায়। এম্নিতেই ভাষা বুঝিনা, তাও আমার লেখা। এটা আমার কাছে থাকা যা, আর না থাকা একই। ছেলেটাকে বললাম, 'রাইস?"

ছেলেটা কি বুঝলো বুঝলাম না, সে একটু পড়ে ফিস কাটলেট নিয়ে হাজির। আমি খুব বিরক্ত হলাম, কারন, আমি ভুলেও ফিস উল্লেখ করি নাই, সে কেনো ফিস নিয়ে এলো? আমার মুখের অভিব্যক্তিতে ছেলেটা বুঝতে পেরেছিলো। সে "প্রোস্তিতে" প্রোস্তিতে, বলতে বলতে আবারো ভিতরে চলে গেলো। এবার কোনো খাবারই সে আনে নাই। এদিকে আমার ক্ষুধায় পেট চু চু করছে। একটু বিরক্তও হচ্ছিলাম। লোকজন তাদের খাবার খেয়ে একে একে বের হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমি খাবারের অর্ডারই দিতে পারলাম না।

আবারো আমি ছেলেটাকে বললাম, রাইস রাইস? সে যেন আমার কথা কিছুই বুঝলো না এবার। মাথা নেড়ে যা বল্লো সেটার অর্থ, সে আমার কথা বুঝতে পারছে না। আমি এতোটাই বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম, যে, ভাবলাম, এখানে খাওয়ারই দরকার নাই। আমি উঠতে যাচ্ছিলাম। একটু রাগ আমার চোখে। প্রায় বেরিয়েই যাচ্ছিলাম, এমন সময় খুব চমৎকার ইংলিশে পিছন থেকে একটা ২৪/২৫ বছরের ইয়াং মেয়ে বল্লো, এক্সকিউজ মি স্যার!!

আমি পিছনে তাকিয়ে দেখলাম, মেয়েটার গায়ে একটা এপ্রোন পরা। সম্ভবত রান্না ঘর থেকে এসছে। আমাকে ক্লিন ভাষায় জিজ্ঞেস করলো, ক্যান আই হেল্প ইউ? মনে মনে খুব আশ্বাস পেলাম যে, মেয়েটা মনে হয় ইংরেজী বুঝে।

আমি বললাম, আমি ভাত খেতে চাই, আছে?

মেয়েটা আমার হাত ধরে টেনে রান্না ঘরের দিকে নিয়ে গেলো। সম্ভবত সে 'রাইস' কথাটা বুঝে নাই। অথবা বুঝলেও কেনো আমাকে রান্না ঘরে নিয়ে গেলো সেটা আমার মাথায় আসলো না। রান্না ঘরে যাওয়ার পর সে একেএকে তার ডেকচিগুলি খুলে আমাকে দেখাচ্ছে, কোন খাবারটা আমি খেতে চাই। আমি একটা ডেকচিতে দেখলাম, ভাত আছে। বললাম, এইটা।

মেয়েটা হেসে দিয়ে বল্লো, অহ রিস? বুঝলাম, ওরা রাইস বলে না, বলে রিস।

সে আমাকে আবারো টেবিলে বসতে বল্লো, আর বল্লো, ফাইভ মিনিটস।

বসে আছি, প্রায় ১০ মিনিট পর মেয়েটা শুধুমাত্র এক কাপ ভাত আর একটা খালি প্লেট নিয়ে আমার টেবিলে রাখলো। আমি তো অবাক।

আরে ভাই, ভাতটা খাবো কি দিয়ে?

যাই হোক, মেয়েটা আমার অসহায়ের অবস্থাটা বুঝতে পেরে, প্রথমে ছেলেটা যে ফিসকাটলেটটা নিয়ে এসছিলো, সেটা দিয়ে বল্লো, আপাতত এটা দিয়ে খাও। আমি তোমাকে পরে ভাল খবর দেবো। তুমি কি ইন্ডিয়ান?

মেয়েটি আমাকে তার একটা ভিটিং কার্ড দিয়ে বল্লো, রাখো এটা, কাল আবার তোমার সাথে ঠিক এই সময় এস, কথা বল্বো। কার্ড তা হাতে নিয়ে পড়ে দেখলাম, ওর নাম, এলিজাবেথ (লিজা), ৪র্থ বর্ষ, হোম আর্টস, ইউনিভার্সিটি অফ রাশিয়া।