Categories
নুর জাহান আপা আমার জেঠস ছিলেন। অর্থাৎ আমার স্ত্রীর আপন বোন। তিনি একজন শিক্ষিকা ছিলেন, মীরপুরের সিদ্ধান্ত স্কুলের শিক্ষিকা। আমি নুরজাহান আপাকে চিনি আমারও বিয়ের প্রায় অনেক বছর আগ থেকে কারন আমরা গোলারটেকেই থাকতাম পাশাপাশি। আমি যেহেতু সবার সাথে খুব একটা মিশতাম না তাই বিয়ের আগে ঊনাদের সাথেও আমার খুব বেশি ঊঠানামা ছিল না। জাস্ট চিনতাম, ঊনারাও আমাকে চিনতেন। তার স্বামীর নাম জয়নাল চৌধুরী, তিনি প্ল্যানিং কমিশনে চাকুরী করতেন এক সময়। বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। ভালো মানুষ একজন।
নুর জাহান আপা অনেকদিন যাবত লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। আপা নিজে খুব পহেজগার মহিলা ছিলেন। তার দুই মেয়ে, সোমা এবং সনি আর এক ছেলে, নাঈম আহমদ। দুইজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। আর ছেলে থাকে আমেরিকায়। সেও বিয়ে করেছে।
আপার শরীরটা আস্তে আস্তে খারাপ হবার সাথে সাথে তিনি প্রথমে ইন্ডিয়া যান চিকিতসা করাতে। ওখানকার ডাক্তাররা বলেছিলেন যে, তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেসন করাতে হবে, তানা হলে তাকে আর বেশিদিন বাচানো যাবে না। ব্যাপারটা প্রায় ঠিকই ছিলো। ইন্ডিয়া থেকে আসার পর আপা দ্রুত খারাপের দিকে যেতে শুরু করলেন। শেষে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেসন করাবেন এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হলো। কিন্তু জটিল ইন্ডিয়ান সিস্টেমের কারনে ইন্ডিয়া গিয়েও তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টেসন করা সম্ভব হয় নাই।
অতঃপর আপা আবারো আমেরিকায় তার নিজের ছেলের কাছে গিয়ে আমেরিকার উন্নত মানের চিকিতসার জন্য। কিন্তু আমেরিকায় যাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারা যান। তার মৃত দেহ আমেরিকায় সতকার করা হয়। তার মানে নূরজাহান আপাকে আমরা দেশে কবর দিতে পারি নাই।