ঈশ্বর কি তোমার আমার মিলন লিখতে পারতো না?
আমি ঈশ্বরকে আমাদের এই সম্পর্কে কোনরূপ দোষারুপ করতে নারাজ। ঈশ্বর ঠিক তোমার আমার মিলন লিখেছেন এবং এক করেছেন। কিন্তু আমাদের এই সমাজ সেটা মানতে অনীহা প্রকাশ করেছে। সেটাও সম্ভবত শতভাগ সঠিক নয় যে, সমাজ আমাদের এই সম্পর্ককে বাধা প্রদান করেছে। কারন এই সমাজে এখনো অনেকেই আমার তোমার মত সম্পর্ককে মেনে নিয়েছে। তাহলে আমি কেনো ঈশ্বর বা সমাজকে এক তরফা দোষারুপ করছি?
দোষ আসলে আমার নিজের। আমি সাহসি নই, আমি ভীরু, আমি কিছু মানুষের কাছে জিম্মি। আমি পারিনি তোমাকে আমার নিজের করে প্রকাশ্যে পরিচয় করাতে। তোমার কন দোশ নেই, তুমি তো তোমার সর্বোচ্চটা দিয়েই আমাকে কাছে নিয়েছো। যতটুকু ব্যার্থতা তা সবটুকু আমার নিজের।
অথচ তুমি আছো আমার বুকে, আমার মনে, আমার মস্তিষ্কে, আমার সমস্ত চিন্তায়। তারপরেও আমি তোমাকে আমার সর্বোচ্চটা দিতে পারিনি। আমাদের সমাজ, আমাদের কিছু পরিস্থিতি, আমাদের কিছু ভাবনা, কিছু ভালোবাসা আর আমাদের কিছু মায়া এই সব নিয়ে আমরা মানুষ অনেক জটিল একটা সমাজে বাস করি। তোমার আমার মাঝের এই সম্পর্কটা ঠিক সে রকমের একটা জটিল পরিস্থিতি নিয়ে লেগে আছে। মন যা চায় সেটা কতটুকু গ্রহন যোগ্য, আর কতটুকু গ্রহন যোগ্য সেটা যখন মন মানতে চায় না, তখনই আমরা আরো অনেক জটিল সমস্যায় ভোগতে থাকি।
কতটুকু আর জীবন? অথচ এই জীবনে তুমি আমার অপ্রাকশ্যই থেকে যাবে। যেদিন আমি আর থাকব না, সেদিন তোমার কাছে মনে হবে, পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির জায়গাটা তুমি হারিয়ে ফেলেছো। গলা ফাটিয়ে কাদলেও তার অন্তর্নিহিত কারন তুমি কাউকে বলতে পারবে না, না তুমি আমাকে কাছে এসে একটু ছুয়ে ধরে বলতে পারবে-তুমি ভালো থেকো পরপারে।
আমার চলে যাওয়ার পরের দিনগুলি তোমার কেমন যাবে আমি জানি না। কিন্তু আমি তোমার অন্তর থেকে কখনোই যে মুছে যাবো না সেটা আমি নিশ্চিত। সকাল দশটা বাজলে তোমাকে কেউ আর ফোন করবে না, মিছিমিছি টাকা পাও এই বায়না আর কখনো তুমি কারো কাছে করতে পারবে না, অহেতুক কোনো কারন ছাড়া আজ যেমন এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করো, তখন পুরু স্বাধীনতা থাকা সত্তেও আর বের হতে ইচ্ছে করবে না। কেমন যেনো সকাল, দুপুর বিকাল কিংবা রাত একই রকম মনে হবে। নতুন শাড়ি কিনে আর বারবার আয়নায় নিজেকে কেমন দেখা যায়, সেতা আর আগের মত মনে হবে না। তুমি আর আমার আসার অপেক্ষায়ও থাকার কোনো কারন পাবে না।
মানুষ বেচে থাকে, কখনো ইতিহাসে, কখনো খবরে, কখনো বিশ্বাস ভংগের কারনে, কখনো অন্য কারনে। কিন্তু আমি তোমার অন্তরে বেচে থাকব একেবারেই গোপনে চোখের জলে। কাউকে এটা বলেও নিজেকে শান্তনা পাবার কোনো সুযোগ নাই।
তোমার জন্যই আমাকে আরো অনেকদিন বাচতে ইচ্ছে করে। মনে হয় তুমি আমার সাথে আরো অনেকদিন বাচো। অতদিন বাচো যতদিন না তুমি বুড়ি হও, যতদিন না তুমি সাহসী হও, যতদিন পর্যন্ত না তুমি একা একা চল্লেও আর কখনো ভয় না পাও। আমি প্রতিদিন তোমার জন্য দোয়া করি, আমি প্রতিদিন চাই তুমি যেন ভালো থাকো, সুখে থাকো।