৬/০১/২০২২-কনিকা এবং হাবীব ভাই

গত ১১ আগষ্ট ২০২১ তারিখে আমার ছোট মেয়ে কনিকা ইউ এম বি সি তে হায়ার এজুকেশনের জন্য আমেরিকায় গিয়েছে। আজ প্রায় ৫ মাসেরও বেশী পার হয়ে গেছে। একটা ব্যাপার আমি খুব করে ভাবি যে, শেষ মুহুর্তে কনিকার স্টেট সিলেকশনে আমি একটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ করেছিলাম। প্রথমে আমি আমার বড় ভাই যেখানে থাকেন, বোষ্টন, সেখানকার সব গুলি ইউনিভার্সিটিতে কনিকাকে এপ্লাই করতে উপদেশ দিয়েছিলাম এই ভেবে যে, ওখানে আমার বড় ভাই থাকেন এবং তিনি নর্থ ইষ্টার্ন ইউনিভার্সিটির খুবই নামকরা টিচার এবং প্রফেসর। আমার ভাবনা ছিলো যে, ওখানে যেহেতু আমার বড় ভাই আছেন, ভাবী আছেন, সেক্ষেত্রে কনিকার কোনো সমস্যা হলে বা প্রয়োজনে সর্বদা কনিকা ওর চাচাকে পাবে। হতাত একদিন মিটুল, আমার স্ত্রী, বল্লো, আচ্ছা যদি এমন হয় যে, হাবীব ভাই এসব করতে না পারলো কিংবা কনিকা একটা উটকো ঝামেলায় পরিনত হয় ভাইয়ার কাছে, তখন তো একটা বিপদ হবে। ব্যাপারটা আমি মোটেই সহজ ভাবে নেই নাই বরং ব্যাপারটা নিয়ে আমি সিরিয়াসলি ভেবেছি। এর একটা কারন ছিলো। কারনটা হলো, হাবীব ভাই কোনো কিছুর মধ্যেই বেশীদিন স্থির থাকতে পারেন না। যখন কোনো বিষয় নিয়া উনি একবার মাতেন, সেটা প্রথম কয়েকদিন খুব ব্যস্ত থাকেন এবং এক সময় সেটায় তিনি আর ইন্টারেষ্ট পান না এবং সেটা অচিরেই পরিত্যাগ করেন। এতে কার কি হলো আর কি হলো না তাতে তার কিছুই যায় আসে না। ভরষা করার মতো লোক না তিনি।

আমি ততক্ষনাত কনিকাকে বললাম, বাল্টিমোর এরিয়ায় ইউনিভার্সিটি সিলেক্ট করো কারন ওখানে মিটুলের প্রায় শতাধিক মানুষ বাস করে। কেউ না কেউ কোনো না কোনো উপায়ে কনিকাকে কোনো কিছুর জন্যে সাহাজ্য করতেই পারবে। এটা যে কি একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আজ সেটা ভাবতেই ভালো লাগে।

এই পাচ মাসে হাবীব ভাই কনিকাকে একটা ফোন পর্যন্ত করেন নাই। যে লোক কনিকা কেমন আছে, কি করছে, কোনো অসুবিধা আছে কিনা এটা নিয়ে একবারো ভাবেন নাই বা ভাবার সময় পান নাই, সে কি করে আমার মেয়ে কনিকার দেখভাল করবেন বা করতেন? কনিকার গাড়ি কেনার সময় ছোট ভাই যে সাহাজ্যটা করেছেন, এটা হাবীব ভাই কোনোদিন করতেন কিনা আমি জানি না, যদিও আমিই টাকা দিতাম, তারপরেও করতেন কিনা আমার জানা নাই। আল্লাহ সব কিছুর নিয়ন্তা এবং মালিক।

অন্যদিকে, আমার আরেক ভাই, বেলায়েত হোসেন, যিনি আজ থেকে অনেক বছর আগে পরলোক গমন করেছেন, তার ছেলে সেলিম এবং সেলিমের মা বাই দি বাই জেনেছে যে, কনিকা আমেরিকায় গেছে। এটা শুনে অস্থির হয়ে গেছে কখন কনিকাকে তাদের বাসায় নিয়ে যাবে। আমিও কনিকাকে ওদের বাসায়, নেভাদা, তে যেতে বলেছি। কনিকা ১০ দিনের ছুটি কাটাবে সেলিমদের বাসায়। এখন কনিকা সেলিমদের বাসাতেই আছে।

হাবীব ভাই আজ পর্যন্ত যত গুলি মানুষের জন্য ট্রাই করেছেন, সব গুলি ট্রাই ছিলো ‘ফেক’। মানুষদেরকে লোভ দেখিয়েছেন, আশা দিয়েছেন, পরে আশাহত করেছেন। যাদেরকে তিনি আশা দেন, তারা এটাকে অমুল্য অফার হিসাবে নিলেও হাবীব ভাই জানেন ঠিক কোন সময়টায় তাকে ছেড়ে দিতে হবে। আর এটাই হয়েছে খালেদা, লিজা, লাকী, লিয়াকত, সালমা, এবং আরো কিছু মানুষের ভাগ্যে। উনি এমনটা কেনো করেন? আমি বহুবার এর উত্তর খোজার চেষ্টা করেছি। বার বার মনে হয়েছে আমার কাছে যে, এটা একটা নেশা। প্রথম প্রথম নেশাটা খুবই মাত্রাতিরিক্ত হয়, পরে ধীরে ধীরে সেই নেশা কেটে গেলে জাষ্ট পরিসমাপ্তি।