পৃথিবীতে যা কিছু আছে সব কিছু সুন্দর। ছোট কুকুরের বাচ্চা সুন্দর, একটা মাতাল লোক যখন আবেগে কথা বলে তা শুনতে সুন্দর, রাগের বশে যখন কোনো বৃদ্ধমানুষ অস্থির আচরন করে তাও সুন্দর। কিংবা কেউ যখন মনের কষ্টে অশ্রু বিসর্জন দেয় সেটাও সুন্দর। সুন্দর শুধু চাঁদ, নীল আকাশ, পাহাড় পর্বত কিংবা সমুদ্রই না। প্রতিটি জিনিষ যা দেখতে পাই যদি খুব মনোযোগ সহকারে দেখি, তখন মনে হয় এতো অল্প সময় নিয়ে কেনো যে এই পৃথিবীতে আসলাম?
এতো সুন্দরের মাঝে অধিক সুন্দর লাগে যখন আমি তোমাকে একেবারে চোখের সাথে তোমার চোখ মেখে তোমাকে দেখি। দেখি যখন তোমার অভ্রু, তোমার শায়িত নাক কিংবা তোমার মুখবদনটা। খুব মায়া লাগে। খুব আদর করতে ইচ্ছে করে। তোমাকে আমি চুমুতে চুমুতে সব জায়গায় এমনভাবে আদর করি, আমি অশান্ত হয়ে তারপর শান্ত হয়ে যাই। তখন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে, প্রশ্ন জাগে কেনো তুমি এতো অবহেলিত হয়ে এতোদিন এতো অনাদরে বেড়ে উঠেছো? কেউ কি তোমাকে আদর করে কাছে নিয়ে বলতে পারতো না কি চাই তোমার? কিসে তোমার হাসি ফুটে? অথবা কেনো তুমি এতোটাই অগোছালো ছিলে? কেউ কি ছিলো না তোমাকে বলার তুমি কে, তুমি কি, তোমার কি ক্ষমতা ছিলো? যেখানেই গেছো, সেখানেই মানুষ তোমাকে ব্যবহার করেছে। ব্যবহার করেছে তোমার বাবা, তোমার মা, তোমার স্বামী, তোমার গ্রাম। কেউ তোমার খারাপ হয়তো চায়নি, কিন্তু কেউ তোমাকে দয়াও করেনি। কিন্তু করতে পারতো। তোমার বাবা তোমাকে দয়া করতে পারতো, তোমার গ্রাম তোমাকে দয়া করতে পারতো, তোমার স্বামী তোমাকে আদরে আদরে সব কষ্ট মুছে দিতে পারত। কিন্তু কেউ করেনি।
এটা যখন ভাবি, তখন তোমাকে আর কোথাও যেতে যেতে ইচ্ছে করে না। আবার কে তোমাকে কিভাবে রাখবে, কতটুকু অবহেলা দিবে, আদৌ কেউ তোমাকে আদর করবে কিনা কে জানে? কিন্তু আমি জানি, একদিন আমি না চাইলেও তুমি নিজেই আমার উপর হাপিয়ে উঠে আমার এই সান্নিধ্য থেকে অনেক দূরে পালাতে চাইবে। আমি তখন তোমাকে বাধা দেবো না। কারন আমি তোমার সব সময় ভালো চাই। এই পৃথিবীতে আমার থেকে তোমাকে কেউ বেশি ভালোবাসে কিংবা কেউ তোমার জন্য ত্যাগ কিছু করবে, এটা যদি সে আমাকে তার মাথা কেটেও এসে প্রমান করতে চায়, আমি সেটা কখনো বিশ্বাস করবো না।
যেখানেই থাক-শুধু তুমি ভালো থেকো, তাতেই আমার শান্তি।