একজন সৈনিক সে আজীবন সৈনিক। এটা শুধুমাত্র সৈনিকের বেলাতেই খাটে। Soldier’s life, Army life is a man’s life. আমি সেই পরিবারের একজন গর্বিত সৈনিক। ক্যাডেট কলেজ থেকে পাশ করার পর স্বাভাবিক নিয়মেই উচ্চ শিক্ষার নিমিত্তে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে, মেডিক্যাল কলেজসমুহে, বুয়েটে, চুয়েটে, এমন কি দেশের বাইরেও ভর্তির জন্য আবেদন করে প্রায় সব কটি ইউনিভার্সিটিতে (ঢাকা ইনিভার্সিটি, বুয়েট, চুয়েটসহ) মেডিক্যাল কলেজেও ভর্তির সুযোগ হয়েছিলো (বরিশাল মেডিক্যাল কলেজে) আমার। এরপরেও কার্ক্সভাইল ইউনিভার্সিটি (ইউএসএ) তেও ভর্তির অফার লেটার পেয়েছিলাম। কিন্তু কি এক মোহে বা আকর্ষনে কোথাও ভর্তি না হয়ে শেষ অবধি চলে গেলাম কমিশন পাবার আশায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে। বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি কি জিনিষ সেটা যারা এর সাথে জড়িত, তারা বুঝতে পারবেন কতটা কষ্টসহিষ্ণু আর ট্রেনিং এর মাধ্যমে একটা যুবক ক্যাডেটকে সরাসরি কমিশন রেংকে অফিসার পদে গর্বিত করে। প্রায় ২০ বছর চাকুরী করেছি এই গর্বিত সেনাবাহিনীতে। অতঃপর আজ থেকে আরো ২০ বছর আগে নিজের ইচ্ছায় চাকুরী ছেড়ে ব্যবসায় পদার্পন করেছি। আমাদের ব্যাচের (১৩ লং কোর্ষ) প্রায় সবাই এখন অবসরী কিন্তু ইতিহাসের পাতায় আমার এই ১৩ লং কোর্স একটা বিশাল রেকর্ড করেছে নিঃসন্দেহে। আর সেটা হলো, আর্মি (জেনারেল ওয়াকার), নেভী (এডমিরাল নাজমুল) এবং এয়ারফোর্সের (এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ) তিনজন বাহিনী প্রধানই আমার ব্যাচের এবং কোর্ষমেট। দেশের এই চলমান ক্রান্তিলগ্নে সমগ্র দেশ এখন তাদেরকে চিনেন এবং তাদের জন্য গর্ববোধ করেন বলেই আমার বিশ্বাস। যাই হোক, দুটু লাইফেই আমি যথেষ্ট সততা আর নিষ্ঠার সাথে লাইফকে উপভোগ করেছি এবং করছি। আর্মিতে যেমন দিঙ্কে রাত বিশ্রামবিহীন কাজের মধ্যে আনন্দ পেয়েছি, তার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ বিদেশ, জাতিসঙ্ঘের অধীনে অনেক উচ্চ মর্যাদার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেছি, ঠিক তেমনি ব্যবসায় এসেও আরেকবার নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করে দায়িত্ব উপভোগ করতে কখনো পিছপা হইনি। সর্বাত্তক চেষ্টা ছিলো এবং আছে যাতে আমার দ্বারা জনগোষ্ঠীর সর্বদা উপকৃত হয়।
গতকাল আমার বন্ধু মেজর আশফাক (অবঃ) তার এলবাম খুজতে গিয়ে হয়তো সেই ১৯৮৪-৮৫ সালের কিছু ছবি তার নজরে এসেছে যেখানে আমার ছবিও ছিলো। সে আমাকে ছবিগুলি পাঠিয়েছে। ধন্যবাদ বন্ধু আশফাক। ছবিগুলি দেখেই কেমন যেন মনটা নস্টালজিক হয়ে উঠেছিলো। কি অদ্ভুত দিন পার করেছি বিএমএ এর ট্রেনিং এর সময়। মনে হয়, এইতো সেদিনের কথা। একেবারে স্পষ্ট মনে পড়ে। অথচ এদের অনেকেই জেনারেল পদ উত্তীর্ন হয়ে এখন অবসরীও হয়ে সুন্দর জীবন কাটাচ্ছে। আমার মতো তারাও প্রায় ৬০ এ পা দিয়েছে। গতকাল আমিও ৬০ এ পা রেখেছি। এই যে প্রথম ৫টি ছবিটি দেখছেন? এগুলি সব বিএমএ এর ফার্স্টটার্মের এক্সারসাইজের ছবি সেই ১৯৮৪ সালের। বাম থেকে মেজর (অবঃ) আশফাক, মাঝে আমি নিজে এবং ডানে বসে আছে মেজর জেনারেল (অবঃ) এমদাদুল হক বারী (বর্তমানে বিটিআরসি এর চেয়ারম্যান)। পরের দুটু ছবিতে যোগ হয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সগির এবং জিসি আনিসুজ্জামান এল্বার্ট। এল্বার্ট এখন একটি টিভি চ্যানেলে সিনিয়ার সাংবাদিক হিসাবে কাজ করে। সে একজন ফ্রি লেঞ্চারও বটে।