ডলারের নোটের ব্যাখ্যা

আমিও আমেরিকার ডলারের এত ব্যাখ্যা জানতাম না, তুমি বলার পর আমি ইন্টারনেটে গিয়ে কিছু পরাশুনা করে দেখলাম ব্যাপারটা বেশ মজার। আমি যেটুকুন জেনেছি সেটা আমি বলছি। তবে আমি বাংলাদেশের টাকার ব্যাপারটাও জানার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু খুব একটা কিছু পাওয়া যায় নাই। তাই ডলার নোটের সম্পর্কেই বলছি যা একটা রিসার্চ করার মত ব্যাপার। ধৈর্য সহকারে পরতে হবে ভাই।

 আমেরিকার ১ ডলার নোটের বিবরনটা এই রকমঃ

(১) ১৯৫৭ সালে প্রথম বের করা হয়।

(২) কটন এবং সিল্ক (এটা লাল এবং নিল সিল্কের ব্লেডেড)।

(৩) একটা স্পেশাল কালি ব্যবহার করা হয়েছে যা পানি বা কোন ক্যামিকেল দিয়ে ধুলে উঠে যায় না। প্রথমে যত ছবি বা ইমেজ আছে তার উপরে এই লেখাগুলো প্রিন্ট করা আছে এবং তারপর এগুলো পানি প্রুফ করে স্টার্চ করা।

(৪) ১ ডলারের সামনের অংশে ইউনাইটেড স্টেটস এর ট্রেজারি সিল দেয়া। এবং একটা পাল্লা আছে যা সুবিচার নির্দেশ করে। অনেকে এই পাল্লার ব্যাখ্যা করে যে এটা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ব্যালেন্স অব কারেন্সি বুঝায় তা ঠিক না।

(৫) মাঝখানে কারপেন্টারস টি-স্কয়ার বুঝায় যে, এখানে ১৩ টি স্টার আছে এবং এই ১৩ টি স্টার দিয়ে আমেরিকার প্রথম ১৩টি কলোনিকে বুঝানো হয়েছে।

(৬) ডলারের পিছনের অংশগুলো জানার ব্যাপারঃ

(ক) দুইটা বৃত্ত আছে যা একত্রে করলে আমেরিকার সিল হবে।

(খ) একটা জিনিস এখানে মনে রাখা দরকার যে, আমেরিকা ১৭৭৬ সালে কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস হিসাবে আধিপত্যতা ছিল বলে তার শাসন প্রনালি ছিল কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস হিসাবে। ৪র্থ জুলাই ১৭৭৬ সালে এই কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস লুপ্ত হয়ার সময় আমেরিকার জাতীয় একটা সিল তৈরি করার প্লান করা হয়। তখন ফ্রাঙ্কলিন এর নেতৃতে আরও পাচজন ( তারা হচ্ছেন এডাম, থমসন জেফারসন, এবং আরও দুই জন) যারা এই সিল তৈরির কাজের কমিটি হিসাবে নির্বাচিত হন। আর এই সালটাই লেখা আছে ঠিক পিরামিডের নিচে রোমান অক্ষরে।

(গ) বাম দিকের বৃত্ত খেয়াল করলে দেখতে পাবা যে, একদিকে পিরামিড যেটার ফেস আলোকিত কিন্তু এর পশ্চিম পাশটা আলোকিত নয়। এর মানে হচ্ছে আমেরিকা Western Side নিয়ে অন্ধকারে আছে। পিরামিড দিয়ে ওরা বুঝাতে চেয়েছে যে, ঐ অঞ্চল এখনো ওদের আয়ত্তে আসে নাই। এদের কাজ এখনো ঐ অঞ্চলে শেষ হয় নাই। এই ব্যাখ্যাটা অফিসিয়াল ভাবে গ্রহনযোগ্য নয়। তবে কেউ কেউ মনে করে এটা হতে পারে। আরেকটা ব্যাখ্যা অনেকে করেন যে, পিরামিড হচ্ছে শক্তির প্রতিক এবং বহুদিন টিকে থাকার প্রতিক।

(ঘ) ক্যাপসটোনের ভিতরে যে চোখ দেখা যায় একে বলা হয় "অল সিইং আই"। এর ব্যাখ্যা আসলে অফিসিয়ায়ালি কেউ জানে না। তবে ধারনা করা হয় যে, ফ্রাঙ্কলিন সম্ভবত এটা বুঝাতে চেয়েছেন যে, ইসরায়েলের দামাল ছেলেমেয়েদের সব হিংস্রাত্তক কর্মকাণ্ডসহ দেবতা তার সমস্ত পৃথিবীর কর্মকান্ড দেখতে পান সর্বদা। ফ্রাংলিন ইহুদি ছিলেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন যে, এই পিরামিড এবং চোখ যীশুর প্রতিক।  

  (ঙ) পিরামিডের ঠিক নিচে লেখা আছে  NOUVAS ORDO SECLURUM, এর মানে হচ্ছে নতুন যুগ শুরু হয়েছে।

 (চ) সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে ইগলের ছবি এবং তার ব্যাখ্যা। ডান দিকের বৃত্তে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, একটা ইগলের ছবি আছে যাতে ইগলটি তার বাম দিকে ফেস করে আছে। একটু ভাল করে লক্ষ করে দেখ যে, ইগলের দুই পায়ে দুই ধরনের সিম্বল আছে। একটায় সবুজ অলিভ শাখার আটি আর একটায় ১৩ টি এরো। ডলার নোটের এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সিলের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই ইগলের ফেসের উপর। প্রেসিডেন্টের সিলে ইগলের ফেস এরো র দিকে আর সম্ভবত ডলারের ইগলের ফেস ওই অলিভ আটির উপর। এর মানে হচ্ছে এই যে, আমেরিকা একটি শান্তির দেশ এবং আমেরিকা তার প্রতিরক্ষার জন্য সে এরো অর্থাৎ শক্তি ব্যবহার করতে পারে। আগে ডলারের এবং প্রেসিডেন্টের সিল একই ছিল কিন্তু ১৯৪৫ সালে ট্রুম্যান (সে ১৯৪৫ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিল) এই ইগলের ফেস বদলিয়ে দেন। The official meaning is that the olive branch and the arrows "denote the power of peace & war." 

 এখানে আরও একটা জিনিস লক্ষণীয় যে, এই সিলটা কারো উপরে দাড় করান হয় নাই। মানে আনসাপোর্টেড। এর অর্থ এই যে, আমেরিকা এখন নিজে নিজে সয়ং সম্পূর্ণ।

 (ছ) সিল্ডের পিছনে দেখা যায় যে, এটা রেড এবং সাদা স্ট্রিপ আছে যার উপরে একটা নিল বার আছে। এই সবগুলো কালার নেয়া হয়েছে আমেরিকার পতাকার রঙ থেকে। the red represents hardiness and valor, the white represents purity and innocence, and the blue, vigilance, perseverance, and justice.

 (জ) ইগলের ঠিক উপরে ১৩ টি তারকা আছে যা ওই সময় আমেরিকার অধিনে মোট ১৩ টি কলোনি ছিল এবং এই স্টারগুলোর উপরে মেঘের একটা আভা আছে যাকে বলা হয় আরও কলোনি হয়ত ভবিষ্যতে যোগ হতে পারে। এটাও ঠিক ব্যাখ্যা নয় অফিসিয়ালি (মেঘের ব্যাপারটা)।

 (ঝ) সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই ডলার নোটে ১৩ এর সংখ্যার ব্যবহার। অনেকে ১৩কে আনলাকি বলে থাকে বটে কিন্তু এই ডলার নোটে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে ১৩ সংখ্যার একটা জাল। যেমন, ১৩টি স্টার (কলোনি বুঝাতে), ১৩ জন সিগ্নেটরি (আমেরিকার স্বাধীনতার দলিলে ১৩ জন সাইন করেছিল), ১৩ টি কালারের ব্যবহার, ১৩ টি এরো, ফ্লাগের ১৩ টি স্ট্রিপ্স, পিরামিডের ১৩ টি সিঁড়ি অর্থাৎ 13 original colonies, 13 signers of the Declaration of Independence, 13 stripes on flag, 13 steps on the Pyramid, 13 letters in the Latin above, 13 letters in "E Pluribus Unum", 13 stars above the Eagle, 13 plumes of feathers on each span of the Eagle's wing, 13 bars on that shield, 13 leaves on the olive branch, 13 fruits, and if you look closely, 13 arrows. And for minorities: the 13th Amendment.