০৫/০৭/২০০৫-ইকবালের সাথে আলোচনা

আমি যখন প্রায় সব কিছু ফাইনালাইজ এর পথে, তখন একদিন আমার দোস্ত মাসুদ ইকবালের সাথে রিভার সাইড নিয়ে বিস্তারীত আলাপ আলোচনার জন্য ওর অফিসে গেলাম। আমি ওকে প্রথমে বললাম, যে, মাসুদ রিভার সাইডের নাম শুনেছে কিনা। রিভার সাইডের নাম শুনেই ইকবাল বলে দিলো যে, ওটা একটা খুব খারাপ ফ্যাক্টরী এবং ওটা না নেওয়াই উত্তম। ইকবাল এমনো বল্লো যে, নাজিম সাহেব যদি ইকবালকে রিভার সাইড সুয়েটার্স বিনে টাকাতেও দিতে চায়, তারপরেও ইকবাল এটার ব্যাপারে উতসাহী নয়। জিজ্ঞেস করলাম, এর কারন কি? উত্তরে ইকবাল বল্লো যে, এই ফ্যাক্টরীতে সাবকন্ট্রাক্ট কাজ দিলে ওরা সুতাও বিক্রি করে দেয়। মাল তো দেয়ই না, বরং লায়াবিলিটিজে পড়তে হয়। আমি ইকবালকে বললাম, আরে, এটা তো বর্তমান ম্যানেজমেন্টের সমস্যা। আমরা যদি চালাই, তাহলে আমরা তো আর সুতা বিক্রি করে দেওয়ার কোনো কারন নাই। এরপরেও ইকবাল এটার ব্যাপারে কোনো উতসাহ দেখালো না। একটু খারাপ লাগলো। বললাম, এমনো তো হতে পারে যে, আমরা ভালো করবো। যেহেতু ইকবাল অনেকদিন যাবত গার্মেন্টস লাইনে আছে, ওর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা এই ফ্যাক্টরী দাড় করাতে পারবো বলে আমার ধারনা। কিন্তু ইকবাল তাঁর সিদ্ধান্তে একেবারেই অনড়।

একটু খারাপ লাগলো ইকবালের কথায় কিন্তু আমি দমে যাই নাই। বাসায় এলাম। তারপর আমি কয়েকজন অফিসারের সাথে একে একে কথা বললাম। তাঁর মধ্যে একজন ফেরদৌস স্যার, তারপরে কথা বললাম কেএম সাফিউদ্দিন স্যারের সাথে। আর বেশ রাতে কথা বললাম ফারুক স্যারের সাথে। সবাই এখনো পজিটিভ মুডেই আছেন বলে মনে হলো। ওইদিন মোহসীন সাহেবের সাথে মিটিং করার পর আমি সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে একটু খোজ খবর নিতে গিয়েছিলাম তউহিদকে নিয়ে। ওখানে গিয়ে জানলাম যে, ব্যাংক রিসিডিউলিং করতে প্রায় ৪০ লাখ টাকার দরকার। রিসিডিউলিং মানে হচ্ছে রিভার সাইডের লোনটাকে আবার রেগুলারাইজেশন করা। এখন কিস্তি না দেয়ার কারনে এটা একটা খারাপ লোনে পরিনত হয়েছে। খারাপ লোন হলে সেসব কারখানায় ব্যাংক সাপোর্ট পাওয়া যায় না, আবার কোনো এলসিও খোলা যায় না। কাজও করা যায় না।

এই তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমি একটা আইডিয়া করলাম যে, আমাকে এই মুহুর্তে প্রায় লাখ ৫০ টাকার মতো নিয়ে মাঠে নামতে হবে। কিন্তু দূর্ভাগ্য হচ্ছে যে, আমার কিন্তু এতো টাকা নাই। আমি হয়তো পেন্সনের টাকা পেলে সর্বোচ্চ লাখ ২০ টাকা ইনভেস্টমেন্ট করতে পারবো। কিন্তু বাকীটা? ফলে আমি ধরে নিলাম, যদি ফেরদৌস স্যার, সাফি স্যার আর ফারুক স্যার জয়েন করেন, আমরা সবাই যদি ২০ লাখ করে টাকা ইনভেস্ট করি, তাতে টাকার সমস্যাটা আর থাকে না। আমি এই তথ্যটা উক্ত তিন অফিসারকে জানালাম। এবং আমাদের পরিকল্পনা হলো যে, আগামি বন্ধের দিন সবাই ফ্যাক্টরী দেখতে যাবো। তাঁর আগে কারো যদি কোনো অভিজ্ঞ গার্মেন্টস মালিক কিংবা কর্তার কাছে পরামর্শ নিতে হয়, আমরা নেবো।

খুব ভালো লাগছে এটা ভেবে যে, আমার সপ্নটা বাস্তবায়ন হচ্ছে ইনশাল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *