২০/০২/২০২৩-পতেঙ্গা ভ্রমন

কথায় আছে, Defense Life is a man’s life and a soldier once is always a soldier. অন্য কারো বেলায় এটা কতটুকু সত্য সেটা আমার জানা নাই, কিন্তু এই অকাট্য বাক্যটা আমার বেলায় শতভাগ প্রযোজ্য। ২০৪৪ সালে ভলান্টারিলি আর্মি থেকে অবসর নেয়ার পর থেকে আমি আজো মনে মনে শতভাগ যে ফৌজ সেটা আমি মনেপ্রানে উপলব্ধি করি। কোথাও কাউকে ইনুফর্ম পড়া দেখলে আজো আমি যেচে কথা বলি, ভালো লাগে। কেউ আমার এই আর্মি বা ডিফেন্স বাহিনীর ব্যাপারে কথা বললে এখনো আমার গায়ে লাগে। কেউ ভালো বললে আমি আজো এর কৃতিত্তের অংশটুকু যেনো নিজের সেটা উপলব্ধি করি।

প্রায় ৩০ বছর পর আমি আবারো আমাদের সেই ডিফেন্স ফোর্সের অধীন নৌ বাহিনীর বিভিন্ন স্থান সমুহে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আর এর পিছনে যার সবচেয়ে বেশী অবদান- সেটা হলো আমারই ছোট ভাই সমতুল্য রিয়ার এডমিরাল মামুন যে বর্তমানে ComChit (অর্থাৎ কমান্ডার চিটাগাং) হিসাবে দায়িত্বরত। মামুন সদ্য চট্টগ্রামে পোষ্টিং গিয়েছে, সম্ভবত মামুন ওখানে না থাকলে এবারো আমার যাওয়া হতো না। মামুনের আথিথেয়তার কোনো বর্ননা চলে না। ওর নিজের বাসায় আমার থাকার জায়গা করে দেয়া, অফিসার মেসে ভি আই পি রুমে আমাদের সবার জন্য ব্যবস্থা করা, সারাক্ষন গাড়ির ব্যবস্থা, বিভিন্ন নৌ জাহাজে আমাদেরকে অভিনন্দন দেয়া সব কিছু ছিল অত্যান্ত সাবলিল এবং চমৎকার।

খুবই অল্প একটা সময়ের জন্য ছিলাম, মাত্র এক রাত দুই দিন কিন্তু তারপরেও মনে হয়েছে অনেকদিন বেড়ালাম। একটা পরিপূর্ন ভ্রমন বলা যায়।

কাপ্তাইয়ে লেঃ কমান্ডার মোয়াজ্জেম ঘাটিতে চমৎকার একটা সময় কাটিয়েছি। লেঃ কমান্ডার ইফতেকার এবং তার টিমকে অসংখ্য ধন্যবাদ। বিএনএস বংগবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এর লেঃ কমান্ডার রাসেল, লেঃ কমান্ডার সাহেদ, মামুনের এডিসি লেঃ ফকরুল সহ সবাইকে আমার আন্তরিক ভালোবাসা দেয়া ছাড়া আসলে আমার হাতে কিছু ছিলো না। আমার পরিবার এবং আমি খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম গত ৩০ বছর পর আবারো এমন একটা পরিবেশে কিছুক্ষন সময় কাটানোর জন্য।

আমরা যারা ডেফিন্সে কাজ করি, করতাম, এবং করেছেন, তাদের অবদান অসামান্য যদিও এর মুল্যায়ন সব সময় আমাদের সাধারন জনগন হয়তো অতোটা জানেন ও না। আমাদের পরিবার বর্গ যে কি পরিমান তাদের পারিবারিক জীবনকে উতসর্গ করেন আমাদের এই জীবনকে সার্থক আর দেশের জন্য তা শুধু তারাই জানেন যারা এই সব অফিসার, জোয়ান আর কর্মের সাথে জড়িত। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস তাদেরকে পরিবারের বাইরেই দেশের জন্য সময় ব্যয় করতে গিয়ে নিজের জন্য বা পরিবারকে দেয়ার জন্য অবশিষ্ঠ কোনো সময়ই হাতে থাকে না। তারপরেও এই সব অফিসাররা হাসিমুখে সব সময় অন্যের সাথে সময় দেন।

পরিশেষে, আবারো আমি রিয়ার এডমিরাল মামুন এবং তার সকল টিমকে আমার প্রানঢালা ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা জানাই। 

২ লেঃ মাসুদ ইকবালের বাড়ি রাজশাহী।

ওর বড় ভাই সম্ভবত ৩য় লং কোর্সে আর্মিতে ভর্তি হয়েছিল কিন্তু কোন এক মেয়ের পাল্লায় পড়ে শেষ পর্যন্ত কমিসন পান নাই। কিন্তু তিনিও পরবর্তীতে বে-সামরিক চাকুরিতে বেশ ভাল করেছেন। বউদি সম্ভবত ঐ বালিকাই যার জন্য তিনি তার আর্মি ক্যারিয়ারটা আর করতে পারেন নাই। ভীষণ মজার মানুষ তিনি। আর ২লেঃ মাসুদ পরবর্তীতে মেজর পর্যন্ত ক্যারিয়ার করতে পেরেছিলেন কিন্তু তার এক শারীরিক অসুস্থতার কারনে তিনি আর আর্মিতে বেশী দূর যেতে পারেন নি এবং আর্মি ক্যারিয়ার শেষ করে বে-সামরিক এক গার্মেন্টস এবং পড়ে নিজে এক্তা বাইং হাউজ দিয়ে ক্যারিয়ার গরতে চেয়েছিলেন। ওটা আরেক গল্প। এখানে তার বিস্তারিত আলাপের প্রয়োজন মনে করছি না। তবে এটুকু জানা যায় যে, তিনি মেহেরপুরের মিঃ জাহাঙ্গির নামে এক সনাম ধন্য এডভোকেট এর মেয়ে সুরাইয়া পারভিন ওরফে তানি কে বিয়ে করেছেন। ঐ ভদ্র মহিলা তানি আমার বিশেষ পরিচিত।