কোকো কাহিনী

আমার বাড়ির ছাদের বাগানটা আমার যেমন খুব প্রিয় তেমনি কোকো (আমার জার্মান শেফার্ড) আমার আরেকটি প্রিয় নাম। ছোট মেয়ে কনিকা নামটা রেখেছে। সে নিজেও আমেরিকায় একটা কুকুর পালে যার নাম 'কায়রো'। খুবই ভক্ত কায়রো কিন্তু কোকো ততোটা এখনো সভ্য হয়নি। আসলে আমি কোকোকে সময় দিতে পারি না। কোকো মাঝখানে কিছুই খাচ্ছিলো না, না রান্না করা মাংশ, না কাচা মাংশ, না ভাত, না ফল কিছুই না। মনটা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো সম্ভবত আমি ওর যত্ন নিতে পারছি না। কষ্ট দিচ্ছি। তাই মাঝখানে ওকে অন্য কোথাও ছেড়ে দেবো বলে মনঃস্থির করেছিলাম কিন্তু মনের ভিতর থেকে কখনোই 'হ্যা" টা আসেনি। 

বাগানে যাই, গাছ গুলিকে আমি অনেক যত্ন করি। দুটুই প্রায় একই রকমের। ভাষা নাই। কোকোর যেমন ভাষা নাই, এই গাছ গুলিরও তেমন ভাষা নাই। পারত পক্ষে আমি কোনো গাছ কাটি না। চেষ্টা করি আরো বেশী যত্ন করে গাছগুলিকে বড় করবার। আমি ছাদে এলে কোকোকে নিয়ে আসি। বাগানটা আমার মতো কোকোর ও খুব পছন্দ। বেশ স্পেস পায়, দৌড়াদৌড়ি করে। হাতে পায়ে ময়লা মেখে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। খারাপ লাগে না। ভালোই লাগে। কোকোর বয়স মাত্র ১০ মাস এখন। মেয়ে কুকুর। 

আমি ওর জন্য প্রতিদিন ৩ টা করে ডিম দেই, এক কেজি মাংশ দেই। সব গুলি খায় না। খেতে চায় না। কিন্তু আমার ধারনা, খাবে। আমার স্ত্রী প্রথম দিন কোকোকে দেখে অতিশয় রাগে ফেটে পড়েছিলো। কিছুতেই তাকে ঘরে ঢোকাতে দেবে না। আজো অবধি কোকো আমাদের ঘরে ঢোকতে চাইলেও ঢোকতে দেই না। তবে মাঝে মাঝে ঢোকে যায়। 

ইদানিং কোকো আমার স্ত্রীর কন্ঠা খুব ভালো করে চিনে ফেলেছে। আমার সাথে যতোই সে লাফালাফি কর‍্যক, আমার স্ত্রীর সাথে কোকো সেটা করে না। কারন কোকোরা মানুষের অনেক ভাষা বুঝে। কোকো জানে আমার স্ত্রী হয়তো ওর গায়ে উঠে গেলে বকা দেবে তাই আমার স্ত্রীর গায়ে সে লাফ দেয় না। কোকো ইদানিং আমার স্ত্রীর ডাকে বেশ সাড়া দেয়। ঘরের দরজায় এসে লেজ নাড়ে। আমার বউ এটা খুব মজা পায়। সে আর আগের মতো কোকোকে অপছন্দ করে না। ভালোবাসতে শুরু করেছে। বড্ড মায়াবী চোখে তাকিয়ে থেকে লেজ নাড়ে কোকো। 

বাগানে আমার সাথে কোকো ভালোই সময় কাটায়। বরং উল্টোটা বললে ভালো হয়, কোকোর সাথে বাগানে আমার ভালোই সময় কাটে। 

Protected: ???

This content is password protected. To view it please enter your password below: