ধনী কিংবা গরীব, কোনো মেয়ের একবার যদি বিয়ে হয়ে যায়, তাহলে সমাজ তার কাছ থেকে বাচ্চা হবার একটা সুখবর পাওয়ার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে যায়। স্বামী কিংবা স্ত্রী তাদের এই সময়ে সন্তান চাই বা না চাই সেটা যেনো কোনো মুখ্য ব্যাপার নয়। আর যাদের সন্তান হয় না তাদের কষ্টটা শুধু তারাই বুঝেন যাদের এই কষ্টটা হয়েছে। বিধাতারও এই রীতিটা এমনভাবে তিনি জাল পেতে রেখেছেন যে, মানব-মানবী না চাইলেও অনাগত মানব সন্তান (অন্য প্রানির বেলাতে আমি কিছু বলছি না) এই পৃথিবীতে আসবেই। তা না হলে জীবন চক্রটাই হয়তো একদিন থেমে যাবে। বিধাতা সেই চক্রকে কখনো থামাতে দেবেন না, এতাই তার রুলস।
কিন্তু এই সন্তান যখন ভূমিষ্ঠ হয়, পিতা মাতা তাদের সমস্ত আদর, কলিজার সমস্ত শক্তি দিয়ে প্রানপন চেষতা চালিয়ে যান যেনো তার সন্তান থাকে হেফাজতে, দুধে ভাতে এববগ গড়ে উঠে সমাজে একজন সেই মানুষ হিসাবে যা দেখে অন্যরা পুলকিত হয়, সমাজ আলকিত হত হয় আর ধরনী হয় বিকশিত। কিন্তু বাস্তবে সেটা সব সময় পরিলিক্ষিত হয় না।
এমনই একটা জীবন নিয়ে চলে গেছে জলীল মামা, এই কয়েকদিনের মধ্যে হয়তো চলে যাবেন তার স্ত্রী তাহেরা বেগমও। ১৮ জন সন্তানের বাবা মা তারা। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশী সন্তানরা থাকেন দেশের বাইরে, জিবিকার প্রয়োজনে। তাদের সেই জীবিকার প্রয়োজন কতটা মিটছে সেটা তারাই ভাল বলতে পারবেন কিন্তু যখ তাদের বৃদ্ধ বাবা মায়ের দেখভালের ব্যাপারটা সামনে আসে, তখন যে চিত্র ফুটে উঠে তাতে এটাই মনে হয় যে, তারা অন্যকে সাহাজ্য করবে কি তো দূরের কথা, তাদেরই এখন আরো বেশি সাহাজ্য লাগবে। তারা কোনোভাবেই তাদের বাবা মাকে সাহাজ্য করতে পারেন না। ফলে এই বৃদ্ধ বয়সে এসে জলীল মামা বা মামী কখনো অর্ধহারে, কখনো অনাহারেই দিন গুলি পার করেছেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে খাবারের কারনে ভাগাভাগি হয়েছে জীবন সন্তানদের কাছে। আজ ওর বাড়িতে বাবা, মার খাবার হয়তো অন্য ছেলের ঘরে। যখন অসুস্থ্য হয়, তখন জীবন হয়ে উঠে আরো দূর্বিসহ। কে কাকে কখন কোথায় নিয়ে যাবে, তার কনো ধরাবাধা নিয়ম নাই। মার চিকিৎসায় বেশী টাকা লাগবে বলে বাবার সমান চিকিতসার খরচে যতটুকু রোগ সারে সেতাই যেনো বাস্তবতা।
যদি এটাই হয়, তাহলে এতো আদর করে, এতো চাহিদার আক্ষেপে কেন সন্তান নেওয়া? এই সন্তানদের জন্য নিজেদের যৌবন নষ্ট করেছেন, এই সন্তানদেরকে সাবলম্বি করার জন্য নিজেদের সবটুকু চাহিদা বিসর্জন দিয়েছেন, অথচ আজ সেই সন্তানরা তাদের জন্য কিছুই করার দরকার মনে করে না? অসময়েই তারা চলে যায় এই দুনিয়া থেকে।
জীবন খুব ছোট। এটার দ্বিতীয়বার পাওয়ার আর কোনো প্রকারের সুযোগ নাই। এই ছোট একটা জীবনে মানুষ বেশিরভাগ আনন্দ, ইচ্ছাপুরন ছারাই বিদায় নেয়। একদিন নিশ্চয়ই আমি আনিন্দ করবো, একদিন নিশ্চয়ই আমি জীবন উপভোগ করবো, এই আশায় প্রতিদিন মানুষ বেচেছিলো বটে কিন্তু কখনই তার সেই কাংখিত আশা পুরন হয়নি। কিছু পুরন হয়নি টাকা পয়সার অভাবে, কিছু পুরন হয়নি সঠিক মানুষের অভাবে, কিছু পুরন হয়নি সঠিক পরিস্থিতির অভাবে। যার টাকা ছিল, তার সঠিক মানুষ হয়তো ছিলো না, যার সথিক মানুষ ছিল, তার হয়তো পরিস্থিতি অনুকুলে ছিলো না। এভাবেই সময়তা পার হয়ে গেছে।