জীবনকে বদলে দেয়ার মতো ইন্সপিরেশনাল গল্প হাজার মানুষের কাছ থেকে হাজার রকমের গল্প হয়তো আপনি শুনবেন। কিন্তু আপনি কিভাবে আপনার জীবন বদলে দেবেন, সেই গল্পটা জরুরী। অন্যের ইন্সপিরেশনাল গল্প থেকে আপনি হয়তো মোটিভেশনাল সাহস নিতে পারেন, কিংবা প্রতিজ্ঞা করতে পারেন, কিন্তু যখন আপনি আপনার জীবনটাকে বদলাতে যাবেন, সেই কারো গল্পের সাথেই হয়তো আপনার গল্পটা মিলবে না। তবুও আপনার গল্পটাও কারো গল্পের থেকেও কম ইউনিক না। সবসময় একটা কথা মনে রাখা দরকার যে, রাজাও একদিন প্রজা ছিলো, আবার সেই রাজাও কোনো একদিন আবার সেই পুরান দিনের প্রজার মতোই প্রজা হয়ে যান। তবে সেখানে একটা শুধু পার্থক্য থাকতে পারে যে, রাজা হবার আগে সেই রাজা প্রজা অবস্থায় হয়তো কারো কাছে হাত পাতলেও রাজা থেকে প্রজা হয়ে সাধারনত সে আর কারো কাছে হাত পাততে চায় না। ভিক্ষা তো করেই না। হয়তো না খেয়ে মরে যাবে কিন্তু অতটা নীচে সে নামে না। যেমন মানতে পারে না ঈগল পাখি। সে সারাদিন না খেয়ে থাকবে হয়ত কিন্তু পচা মৃতপ্রানির মাংশ সে খায় না। এটাকে হয়তো অনেকে ইগোতে নিয়ে যাবেন, এটা ইগো নয় আসলে এটা সম্ভবত আত্তসম্মানবোধ বা শক্ত মেন্টালিটির সাথে তার ব্যক্তিগত পার্সোনালিটির বহির্প্রকাশ। তাই জীবনকে পার্সোনালিটিতে রুপান্তরিত করুন, সময়কে সবচেয়ে বেশি মুল্যায়ন করুন, সুযোগকে সঠিক মত কাজে লাগান, সম্ভবত জীবন দ্রুত বদলে যাবে। পার্সনালিটিতে সবচেয়ে বড় নির্দেশনা হচ্ছে- মেপে কথা বলার সাথে মেপে চলা। শোনার অভ্যাস গড়ে তোলা। সব সময় সব কিছুর উত্তর দেয়া জরুরী নয়, অনেক সময় শুধু শোনাই হচ্ছে সবচেয়ে একতা বড় শক্তি। মিনিমালিজমে অভ্যস্থ হয়ে কথা কম বলুন, কম ব্যাখ্যা দিন, কম অজুহাত দিন, অপ্রয়োজনীয় শব্দ, ব্যস্ততা্ এড়িয়ে যান। অযথা অধিক আগ্রহে মানুষের গুরুত্ত কমে যেতে পারে। আর কখনো যদি বুঝেন-আপ্নার গুরুত্ত কমে গেছে বা যাচ্ছে-সাহস করে সেখান থেকে সরে পড়ুন। নতুন করে দিগন্ত প্রসারিত করুন। নতুন করে আবারো সীমানা নির্ধারন করুন। নতুন সম্পর্কের মধ্যেও সীমানা নির্ধারন করে মেপে ধীরে ধীরে আগাবেন। ঈগল পাখী থেকে আমাদের নতুন করে অনেক কিছু শেখার আছে। এতো উচুতে উঠেও ঈগল তার মানসিক চাপকে সাভাবিক রাখে। প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যেও সে মনোবল না হারিয়ে বরং ঝড়ের শক্তিকে সে নিজের অনুকুলে নিয়ে আরো দ্রুত গতিতে ভেসে চলে। জীবনটাকে বদলাতে সবচেয়ে বড় দরকার-সংকল্প। পরিকল্পনা করার আগেও একটা প্রি-পরিকল্পনার দরকার হয়। যদি একা চলতে ভয় পান, তাহলে নিশ্চিত থাকুন যে, আপনি অর্ধেক হেরে বসে আছেন। কেউ আপনাকে জিতিয়ে দিতে এগিয়ে আসবে না কখনো। তাই, একা চলবার মানসিকতায় ভরষা করুন। যদি প্রচেষ্টার বনাম পারফেক্ট চাই, তাহলে লাগাতার না থেমে সমস্যার মোকাবেলা করুন। সমস্যার সামনে হাটু গেড়ে আত্তসম্পর্পন না করে সেগুলিকে ভিত্তি করে সমাধানের পথ খুজে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যান।
ছোট ছোট সাফল্যের দিকে হাটুন, প্রতিদিন সাফল্যের দিকে নজর রাখুন। হয়তো অনেকদিন কোনো ভালো খবর পাবেন না, মনে হবে থেমে গেছেন, মনে হবে কিছুই হচ্ছে না, তবুও হাল ছাড়বেন না। লেগে থাকুন। জট খুলবেই। আর একবার যখন জট খুলে যায়, পরপর সব জট খুলতে থাকে। বারবার ওপিনিয়ন পালটাবেন না। তাতে স্ট্যাবিলিটি থাকে না। একই সাথে কয়েকটা সেক্টরে মনোযোগী হবার দরকার নাই, তাতে কোনোটাই সাফল্যমন্ডিত হয় না। আগে একটাকে সফল করুন, হোক সেটা নিতান্তই কোনো ছোট ব্যবসা বা কর্ম। সব সময় সেভিংস মুডে থাকুন, আপনি লক্ষ্যে পৌছবেনই। যতটুকুতে আপ্নার চলা সম্ভব, ততটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুন। অযথা খরচ বাড়িয়ে অসমতা আনবেন না। প্রতিদিন লেগে থাকুন, লস বা লাভ যাইই হোক। কেনো লস হবে আর কেনো লাভ হচ্ছে, এর মধ্যে অবস্থার বিশ্লেষণ করুন।
আপনার উন্নতি হবেই। আর যখন একবার উন্নতি হওয়া শুরু করে, ছাড়বেন না, লেগে থাকুন আরো কঠিনভাবে। আপনার গল্প পরিবর্তন হওয়া শুরু করবেই। অতঃপর একদিন, গল্পটা আপনার শুধু।