৩০/০৯/২০২৫-অবহেলা

কেউ কি তোমাকে ভালবেসেছিলো? কতটুকু কতক্ষন কি পরিমান কিভাবে কেনো ভালবেসেছিল সেটা কি কখনো অনুধাবন করে বিশ্লেষন করেছো? ভালোবাসাটা একটা চরম আবেগী জিনিষ, যে ভালবাসায় মজেছে, তার কাছে আর অন্য কোন কিছুই জরুরী নয়। আর যার ভালবাসায় সে মজেছে, সেটা যেমনই হোক, কারো সাথে কিংবা কোনো কিছুর সাথেই তার তুলনা করা যায় না। কালো, ধলা, ল্যাংড়া, কিংবা বিদেশি, বা অন্য কোন প্রানী সবার বেলাতেই ব্যাপারটা এমনই ঘটে। কিন্তু মজার ব্যাপার কিংবা কষ্টের ব্যাপার হল, এক সময় এই ভালোবাসায়অ ঘুন ধরে, যে কোনো কারনেই এর মিষ্টতা বা আবেগী মনটা স্তিমিত হয়ে আসতে পারে। তখন একটা নতুন জিনিষ শুরু হয়। আর তার নাম অবহেলা।

কাউকে অবহেলা করার সবচেয়ে উত্তম কৌশল হচ্ছে-ব্যস্ততা দেখানো। বাহ্যিকভাবে কেউ কতটা ব্যস্ত সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু কারো সাথে সম্পর্কের মধ্যে ঢীলা দেয়ার মোক্ষম অস্ত্র হচ্ছে-বহুবিধ কাজের বাহানায় ব্যস্ততা জড়িয়ে দেয়া। কিন্তু একটা সম্পর্কে ব্যস্ততার শব্দটার কোনো স্থান নাই আসলে। সত্যিকারের প্রিয় মানুষটার শত সহস্র ব্যস্ততার মাঝেও খোজ খবর নেয়া সম্ভব এবং নেয়ও। শুধু খোজ খবরই না, সে তোমাকে সময় দেবে। কি করছো, কখন কোথায় কি ভাবে তোমার সিডিউল যাচ্ছে, দুপুরে, সকালে, কিংবা খাওয়ার সময়ে তুমি খেয়েছো কিনা সব সময় না হলেও মাঝে মাঝেই সে খবরটা নিবে।

কেউ যদি বলে- কথা বলার সময় পাইনি, হতেই পারে। কিন্তু ‘আমি একটু ব্যস্ত আছি, সময় পেলে পরে কথা বলব। তুমি অন্যান্য কাজ সেরে ফেল’ কিংবা একটা ম্যাসেজ কিংবা পাচ সেকেন্ডের একটা ছোট কলও হতে পারে অনেক ব্যস্ততার মাঝে একটা যোগাযোগ। আর এই ছোট ম্যাসেজটা লিখতে রাস্তার ধারে বসে, একটা সিগারেট খাওয়ার সময়েও এই ছোট ম্যাসেজটা করা যায়। যখন এগুলির কোনোটাই হয়ে উঠে না, অথচ যদি কেউ বলেই থাকে যে, কথা বলার সুযোগ হয়নি, বা সময় পাইনি, তাহলে বুঝে নিও সে ঠিকই সময় পেয়েছিলো কিন্তু সে তোমার জন্য সময় নষ্ট করতে চায়নি, সে তোমাকে এভয়েড করেছে। তোমার মুল্য তার কাছে অনেক কমে গেছে। মানুষ কেবল সেটার জন্যই তার মুল্যবান সময় নষ্ট করে যেটা তার কাছে ইম্পর্ট্যান্ট। তুমি হয়তো ইম্পর্টেন্সি হারিয়ে ফেলেছো। ভালোবাসাটা অনেক দূর চলে গেছে। একদিন সে আরো দূরে চলে যাবেই এবং কনো এক সময় সে তোমার কাছ থেকে হারিয়ে যাবেই। তুমি এই পরিস্থিতিটা বুঝো বা না বুঝো, যদি এটা এক তরফা আকড়ে থাকো, তাহলে আজিবন তুমি কষ্ট পাবে।

ব্যস্ততা কখনই ভালোবাসাকে থামাতে পারেনা। যে সত্যিই তোমাকে ভালবাসে, সে শত ব্যস্ততার মধ্যেও একবার হলেও মনে করবে। আর যদি সেই ভালোবাসাতা হয়ে থাকে নিছক কিছুর বিনিময়ে বা অন্য কোনো কারনে, সেখানে কখনোই ভালোবাসা ছিল না। ওটা ছিল অবহেলার ভালোবাসা।

সত্যিকারের ভালোবাসা হচ্ছে সেটা যেটা না বলা কথাও অন্তরে যেনো পরিষ্কার অনর্গল কথা বলে যায়, ভালোবাসার মানুষটাকে কিভাবে ভালো রাখা যায়, কিভাবে তার মনকে প্রশান্ত করা যায়, তার ইচ্ছাগুলি, আবদার গুলি, আখাংকা গুলি নিজের সামর্থের মধ্যে লালন করা যায়। ভালোবাসায় ভাষার দরকার পড়ে না। এটা অনুভবের ব্যাপার। মন থেকে ভালোবাসলে মানুষটা ছাড়া একদমই থাকা যায় না। আর যারা দিনের পর দিন মানুষটা ছাড়া অনায়াসে থাকতে পারে, তারা কখনো ভালোবাসে না। I

ভালোবাসার মানুষকে মানুষ সব সময় মনে রাখে, মনে করে। এমন কি মৃত্যুর সময়ে বা আগে যে মানুষতারে মানুষ সবার অগোচরেই স্মরণ করতে চায় সেটা তার ভালোবাসার মানুষ। গভীর ঘুম থেকে ঘুম ভাঙ্গার পর যার কথা মনে পড়ে সেতা তার ভালবাসার মানুষ। এই ভালোবাসার মানুষটার কারনে সুখকে সুখী মনে হয়, তার কষ্টকে নিজের কষ্ট মনে হয়। ভালোবাসার মানুষের শরীরের ঘামের গন্ধও মিষ্টি মনে হয়।