২২/১২/২০০৪-জাবেরের সাথে বৈঠক

আমি রীতিমত হন্যে হয়ে একটা ব্যবসার কথা চিন্তা করছি। রিভার সাইড সুয়েটার্স যদি শেষ পর্যন্ত না নেয়া হয়, সেক্ষেত্রে আমি আরো কিছু বিকল্প চিন্তা করছিলাম। এই চিন্তা থেকে আমার কোর্সমেট জাবেরের সাথে ফোনে কথা বলি। কারন জাবের নিজেও একটা ফ্যাক্টরী চালায়, নাম "ফা এপারেলস", সাভার। জাবের আমার ব্যবসার চিন্তাভাবনা শুনে বল্লো যে, আমি ওর সাথেও ফা এপারেলসে পার্টনারশীপ করতে পারি যদি চাই। ওখানে ইতিমধ্যে আমার আরেক কোর্সমেট মেজর বশীর আছে, আর তাছারা আরো বেশ অনেক গুলি কোর্সমেট ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাজেট ইনভেষ্টমেন্ট করেছে। তাঁর মধ্যে আছে মেজর সালাম, মেজর জসীম, মেজর নওরোজ, আরো অনেকে। অনেকেই নাকি প্রায় প্রত্যেকেই কমপক্ষে ১০ লাখ করে টাকা ইনভেষ্ট করেছে। কেউ কেউ বেশীও করেছে। ফলে আমি যদি চাই, তাহলে আমিও ওখানে ওদের মতো ইনভেষ্ট করতে পারি। জাবের রাতে আমার বাসায় এলো। সাথে বশীর। মীরপুরের বাসায় আমরা সবাই প্রায় ঘন্টা দুয়েক আলাপ করলাম। কিন্তু আলাপের মধ্যে আমি কিছুটা বিভ্রমের গন্ধ পাচ্ছিলাম।

                                

বিভ্রমটা তাহলে কি? আমাকে জাবের আর বশীর প্রোপোজাল দিলো যে, লাভে টাকা খাটাইতে। যদি লাভ হয় তাহলে পার্সেন্টেজ অনুযায়ী আমাকে লাভ দেয়া হবে। আমি তখন জাবেরকে বললাম যে, যদি লাভ না হয় এবং লস হয় তখন কি হবে? জাবের আমাকে বল্লো যে, লসের ভাগিদার ওরা, কিন্তু লাভের ভাগিদার থাকবো আমরা। আর এভাবেই নাকি অন্যান্য কোর্সমেটরা টাকা খাটিয়েছে। ব্যাপারটা আমার কাছে বিশেষ সুবিধার মনে হলো না। আমি জাবেরকে বললাম, আমার ইনভেষ্টমেন্টের সমান পরিমান শেয়ার দিতে আপত্তি কি? কিন্তু সেটা তারা রাজী নয়। আমি ব্যবসা বুঝি না কিন্তু হালাল হারাম বুঝি। আমার কাছে মনে হলো, জিনিষটা হালাল নয় যে, শুধু লাভ নেবো, লস নেবো না। আবার আমি এক অর্থে পার্টনার কিন্তু আবার শেয়ার হোলডার না। কনফিউজিং একটা স্টেট।

আমি জাবেরকে রিভার সাইড সুয়েটার্স এর কথা বললাম যে, আমি একটা ফ্যাক্টরী নিয়ে কথা বলতেছি। যদি ওটা হয়ে যায়, তাহলে আর জাবেরদের সাথে আমি যাচ্ছি না। জাবের আমাকে ডিসকারেজ করলো যে, তুই আগে আমার ফ্যাক্টরিটা দেখ, তারপর অন্য ফ্যাক্টরী নিয়ে ভাবিস। বললাম, আমি এম্নিতেও জাবেরে ফ্যাক্টরীতে ভিজিট করতে যাবো, টাকা ইনভেষ্ট করি আর নাইবা করি, অন্তত একটা অভিজ্ঞতা তো হবে। ডেট ঠিক করলাম যে, আমার এক আত্তীয় আছে, বেক্সিমকোতে চাকুরী করে, ওকে নিয়ে আগামী বন্ধের দিন ফা এপারেলস ভিজিটে যাবো। জাবের এবং বশীর চলে গেলো। আমি রিভার সাইডের মধ্যে বেশী টান অনুভব করলাম। অনেক রাত অবধি আবার তৌহিদের সাথে ফ্যাক্টরী নিয়ে কথা বললাম।

কথা বললাম, কিভাবে শেয়ার ট্রান্সফার করতে হয়, জয়েন্ট স্টক কি, ইত্যাদি। তৌহিদ বলল যে, হিরু নামের এক ভদ্রলোক আছে, যে এই সব শেয়ার ট্রান্সফার কাজগুলি করে। ওর সাথে বসে আলাপ করলেই আরো ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে।